ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৪ মাঘ ১৪৩১

ধানমন্ডি ৩২ নম্বর ভাঙার ঘটনায় ভারতের ভূমিকা কী?

প্রকাশিত: ১৯:১৫, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫; আপডেট: ১৯:৪০, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ধানমন্ডি ৩২ নম্বর ভাঙার ঘটনায় ভারতের ভূমিকা কী?

ছবি: জনকণ্ঠ

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টার দিকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের সামনে ছাত্র-জনতার ঢল নামে। তারা ‘জ্বালো জ্বালো, আগুন জ্বালো’, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, ‘ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’, ‘ফ্যাসিবাদের আস্তানা ধ্বংস করো’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দিতে বঙ্গবন্ধু ভবনের গেট ভেঙে প্রবেশ করে।

 

ভেতরে ঢুকেই তারা ভাঙচুর শুরু করে। ভবনের জানালার কাচ, দরজা, আসবাবপত্র একের পর এক ভাঙচুর করা হয়। এরপর ধাপে ধাপে ভবনের ইট খুলতে শুরু করে ছাত্র-জনতা। বিক্ষোভকারীদের অনেকে হাতে হাতুড়ি নিয়ে ভবনের দেয়াল থেকে ইট খসিয়ে নিচ্ছিল, কেউ কেউ সেগুলো সংগ্রহ করছিল।

ধানমন্ডি ৩২ নম্বর ভাঙার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারতের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া নিয়ে আলোচনা চলছে। বিশ্লেষকদের মতে, দিল্লি এখন দাবি করতে পারে যে, বাংলাদেশে নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হয়েছে এবং এটি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ।

 

ফরহাদ মাজহার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তার ভ্যারিফাইড আইডিতে বৃহস্পতিবার লিখেন, “৩২ নম্বর বাড়ি ভাংবার উস্কানি শেখ হাসিনা স্বয়ং দিয়েছেন, এই সময়ে তার ভাষণ দেবার সিদ্ধান্তই ছিলো উস্কানীমূলক। হাসিনার মাথায় রয়েছে ফেব্রুয়ারিতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সংগে নরেন্দ্র মোদীর সাক্ষাতকার। এবং বাংলাদেশ নিয়ে ইন্দো-মার্কিন-ইজরায়েলি আঞ্চলিক পরিকল্পনা। ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমতা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অলিগার্কি, অর্থাৎ অল্প কিছু বিলিয়নারদের আধিপত্যের প্রতিষ্ঠা। যেমন ইলন মাস্ক, জুকারবার্গ, বিলগেটস প্রমুখ। এর কুফলও বাংলাদেশ সহ গরীব ও প্রান্তিক দেশগুলোতে পড়বে। হিন্দুত্ববাদের সংগে মার্কিন বর্ণবাদী গোষ্ঠীর মৈত্রীও পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে। ট্রাম্পের গাজানীতি ভয়াবহ। ইতিমধ্যে ট্রাম্প বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সংগে ঘোষণা দিয়েছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র গাজার ‘নিয়ন্ত্রণ নেবে’ এবং এর ওপর তার ‘মালিকানা’ প্রতিষ্ঠা করবে।

এই নতুন ভূরাজনৈতিক বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাষণ বুঝতে হবে। নতুন ভূরাজনৈতিক সমীকরণের উপর দাঁড়িয়ে তিনি রাজনীতির যে ছক কষছেন সেদিকে আমাদের পূর্ণ মনোযোগ নিবদ্ধ রাখতে হবে। কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে দিল্লি প্রমাণ করার চেষ্টা করবে যে জানমাল রক্ষা করতে উপদেষ্টা সরকার ব্যর্থ। আন্তর্জাতিক ভাবে ব্যাখ্যা করা হবে যে বাংলাদেশে কার্যত কোনো সরকার নাই। এটাই দিল্লী হাসিনার পক্ষে প্রতিষ্ঠা ও প্রচার করবে। ’’

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশে চলমান পরিস্থিতি যদি অস্থির থাকে, তবে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে ভারত হস্তক্ষেপের নীতি গ্রহণ করতে পারে।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, শেখ হাসিনা ক্ষমতা হারানোর পরেও ভারতীয় সংযোগ ধরে রাখার চেষ্টা করছেন। তার ভাষণও মূলত দিল্লির প্রতি বার্তা পাঠানোর একটি কৌশল হতে পারে।

তাবিব

×