চার প্রদেশ করার প্রস্তাব
প্রশাসনিক ক্ষমতা ও পরিষেবা ব্যবস্থা বিকেন্দ্রীকরণ করে ঢাকার ওপর চাপ কমাতে দেশের পুরোনো চারটি বিভাগের সীমানাকে চারটি প্রদেশে বিভক্ত করে প্রাদেশিক শাসনব্যবস্থা চালুর সুপারিশ করেছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। অন্যদিকে আদালতের রায়ে চূড়ান্তভাবে দ-িত অপরাধীকে রাষ্ট্রপতি বা নির্বাহী বিভাগের ক্ষমা প্রদর্শনের একচ্ছত্র ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণের সুপারিশ করেছে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন।
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী এবং বিচার বিভাগীয় সংস্কার কমিশনের প্রধান বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তাদের প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন।
দুই সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জমা নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘আমরা কী করলাম না করলাম ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এটা দিয়ে আমাদের বিচার করবে। জাতির জন্য এটা বিরাট সংবাদ। এটা বাংলাদেশের ইতিহাসে স্মরণীয় পুস্তক, এটা থেকে যাবে।’
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে সরকারি কর্মকর্তাদের পদোন্নতিতে বিভিন্ন সময় জটিলতার সৃষ্টি হওয়ায় শূন্য পদের বাইরে পদোন্নতি বন্ধের সুপারিশ করা হয়েছে। সরকারি কর্মচারীদের যাতে অযাচিত হেনস্তার শিকার হতে না হয়, সেজন্য অতি দ্রুত প্রশাসনিক ন্যায়পাল নিয়োগেরও সুপারিশ করেছে কমিশন।
অন্যদিকে আদালতের রায়ে চূড়ান্তভাবে দণ্ডিত অপরাধীকে রাষ্ট্রপতি বা নির্বাহী বিভাগের ক্ষমা প্রদর্শনের একচ্ছত্র ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণের সুপারিশ করেছে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন। এ লক্ষ্যে একটি বোর্ড প্রতিষ্ঠা ও সেই বোর্ডের সুপারিশের ভিত্তিতে ক্ষমা প্রদর্শনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
প্রতিবেদনে ‘রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শন’ সংক্রান্ত সুপারিশের সার সংক্ষেপে বলা হয়, ‘আদালত কর্তৃক চূড়ান্তভাবে দ-িত অপরাধীকে রাষ্ট্রপতি বা নির্বাহী বিভাগ কর্তৃক ক্ষমা প্রদর্শনের একচ্ছত্র ক্ষমতাকে নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে বোর্ড প্রতিষ্ঠা, যার সুপারিশের ভিত্তিতে ক্ষমা প্রদর্শনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে।’ এ ছাড়া বিচারাঙ্গণকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করতে আদালত প্রাঙ্গণে আইনজীবী বা দলের সব ধরনের সভা-সমাবেশ বা মিছিল নিষিদ্ধে প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন করতে সুপারিশ করেছে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন।
এ ছাড়া কমিশনের প্রতিবেদনে মামলা ও জনসংখ্যার আলোকে অধস্তন আদালতের বিচারকের সংখ্যা বৃদ্ধিকরণ, বিচার কার্যক্রমে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের জন্য সংশ্লিষ্ট আইন সংশোধন, ভবন নির্মিতি হয়নি এমন ৩৭ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে ভবন নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য প্রকল্প গ্রহণ এবং আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগে বিচারপতি সংখ্যা বৃদ্ধি করার সুপারিশ করা হয়েছে।