ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২২ মাঘ ১৪৩১

পালাবো না বলে ঠিকই পালিয়েছে কাদের, পাশে নেই কেউ!

প্রকাশিত: ০০:৩৪, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

পালাবো না বলে ঠিকই পালিয়েছে কাদের, পাশে নেই কেউ!

ছবি : সংগৃহীত

“পালাবো না, কোথায় পালাবো! পালাবো না, প্রয়োজনে ফখরুল সাহেবের বাসায় গিয়ে উঠবো।”

আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে ওবায়দুল কাদেরের কথা। পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার প্রধান সিপাহশালা। হাসিনার মতই দম্ভ আর অহংকারে যেন মাটিতে পা পড়তো না তার। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ বিরোধী কেউ হলেই তাকে উপহাস করতো সভা সমাবেশে। ঠিক যেন হাসিনার মতোই এক অসভ্য রাজনীতিক ব্যক্তিত্ব।

মাস ছয়েক আগেও যিনি সবখানে হুংকার দিয়ে বেড়াতেন, সেই ওবায়দুল কাদের যেন কোথাও নেই। কর্মী, সমর্থক সঙ্গীহীন পতিত সরকার ও দলের নেতা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানে দম্ভচূর্ণ হয়েছিল ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার। এক ঘন্টারও কম সময়ে দেশ ছেড়ে পালাতে হয়েছিল তাকে। অথচ ১৬ বছর দেশে এক ভয়ঙ্কর শাসন জারি করে রেখেছিল হাসিনা। বিএনপিসহ বিরোধী মত দমনে মামলা-হামলার হয়রানির পাশাপাশি চলতো গুম, খুন।

গণভবনের চেয়ার আঁকড়ে রাখতে যেন হয়ে উঠেছিলেন রক্তচোষা। অভিযোগ আছে, তার বিরুদ্ধে কথা বললেই খুনের নেশায় মরিয়া হয়ে উঠতো। পৃথিবী থেকে সরানোর আগে ঘুমাতে যেতে পারতেন না স্বৈরাচার হাসিনা। আধিপত্যবাদ, ভারতের তাবেদারী করায় সেই দাম্ভিক মুজিব কন্যাকে আশ্রয় দিয়েছে মোদি সরকার। অথচ তার নিজের দলের নেতা নেত্রীদের ফেলে রেখে গেছেন হাসিনা। হত্যাসহ বিভিন্ন ভিন্ন মামলায় কারাগারে আছেন অনেক মন্ত্রী, এমপি।

হাসিনার ভারতে থাকা স্পষ্ট হওয়ায় সবাই খুঁজছেন তার সিপাহশালা ও কাউয়া খ্যাত ওবায়দুল কাদের কোথায়। এ নিয়ে গত কয়েক মাসে নানা রকম খবর চাওড় হয়েছে। কেউ কেউ বলেছিল দেশ ত্যাগ করেছেন, আবার কেউ কেউ বলছে তিনি দেশেই আছেন।

তবে গুঞ্জন ছড়িয়েছে, যশোর সীমান্ত হয়ে অবৈধভাবে ভারতে পালিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সেখান থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই, সিঙ্গাপুর কিংবা অন্য কোন দেশে যাওয়ার প্রস্তুতি রেখেছেন বলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা হয়েছে। কখনো বা চাওড় হয়েছে দিল্লিতে থেকে শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে মরিয়া হয়ে আছেন কাদের। কিন্তু বিপদের দিনে হাসিনাও তাকে যেন চিনতে চাইছে না।

ওবায়দুল কাদের সরকার পতনের শেষের দিকে বেশ বিতর্কিত হন। বিশেষ করে ছাত্রজনতার আন্দোলন মোকাবিলায় ছাত্রলীগই যথেষ্ট মন্তব্য করে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। এমনকি নিরীহ ছাত্রজনতার উপর গুলি ছোড়ার কথাও দম্ভের সঙ্গে বলেছিলেন একসময়ের ফাটাকেষ্ট খ্যাত নোয়াখালীর কাদের।

দামি ঘড়ি ও কোট-টায় ব্যবহারে অভ্যস্ত সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও নিয়মিত নেতিবাচক ট্রল চলতো। দলের নেতাকর্মীর কাছে চলনে-বলনে অন্যরকমের নেতা ওবায়দুল কাদের সাংগঠনিক এক সভায় কাউয়া শব্দ উচ্চারণ করেও ব্যাপক সমালোচিত হয়েছিলেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুক থেকেও উধা হয়েছেন একসময়ের প্রভাবশালী ও হাসিনার অপকর্মের অন্যতম সহযোগী ওবায়দুল কাদের।

“এই দেশেতে জনম আমার, যেন এই দেশেতেই মরি” অথচ আজ তিনি কোথাও নেই। এদিকে রাজনীতিতেও ফেরার কোন সুযোগ নেই নতুন বাংলাদেশে।

কার্যত বলা চলে গভীর অন্ধকারে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন কাদের। যেখানে অনুশোচনা ছাড়া কোন কিছুই তার সঙ্গী নয়। 

মো. মহিউদ্দিন

×