মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা প্রায় নিত্যদিনের
অনিয়ন্ত্রিতভাবে সারাদেশেই বৃদ্ধি পাচ্ছে মোটরসাইকেল। সড়ক-মহাসড়ক দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন মোটরসাইকেল চালকরা। কোনো নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করছেন না অধিকাংশ চালকরাই। কোনো নিয়ন্ত্রণ না থাকায় বেপরোয়া গতির কারণে ঘটছে দুর্ঘটনা। যত্রতত্র ট্রাফিক আইন অমান্য করে ফুটপাতে উঠে যাচ্ছেন মোটরসাইকেল চালকরা। বিশেষ করে রাজধানী যেন এখন মোটরসাইকেল নগরীতে পরিণত হয়েছে।
অলি-গলিসহ যত্রতত্র হর্ন বাজানো ও উল্টোপথে চলাচল মোটরসাইকেল চালকদের এখন স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বেপরোয়া চলাচলের কারণে নিজেরা যেমন দুর্ঘটনায় পড়ছে পাশাপাশি অন্যদের সমস্যা ফেলছে বা দুর্ঘটনার কারণ হচ্ছে।
মোটরসাইকেল ৪ চাকার যানবাহনের তুলনায় ৩০ গুণ বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। গত ৫ বছরে গত জানুয়ারি মাসে ২৭১টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২৬৪ জন নিহত হয়েছে। সারাদেশে সাড়ে ১১ হাজারের বেশি দুর্ঘটনায় প্রায় ১২ হাজারের মতো মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছে। গত জানুয়ারি মাসে ২৭১টি মোরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২৬৪ জন নিহত হয়েছে।
নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই যুবক ও কিশোর। তাই এখনোই মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণের পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের। তাদের মতে, মোটরসাইকেল চালকদের বেশির ভাগের বয়স ২৪-৪০ বছরের মধ্যে। এই যুবকরা অতিরিক্ত গতিতে মোটরসাইকেল চালানোর কারণে বাড়ছে দুর্ঘটনা। এজন্য মোটরসাইকেল চলাচলের বিষয়ে একটি নীতিমালা তৈরির পরামর্শ তাদের।
মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণের জন্য ২০২৩ সালে একটি নীতিমালা তৈরির উদ্যোগ নিয়েছিল সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগ। ‘মোটরসাইকেল চলাচল নীতিমালা-২০২৩’ নামে একটি খসড়া নীতিমালা তৈরি করেছি সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। কিন্তু গত দুই বছরেও এই নীতিমালা আলোর মুখ দেখেনি।
এ বিষয়ে সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের বিআরটিএ’র অধিশাখায় যোগাযোগ করা হলে সহকারী সচিব মো. জসিম উদ্দিন জনকণ্ঠকে বলেন, ‘২০২৩ সালে মোটরসাইকেল চলাচল নিয়ন্ত্রণের জন্য সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের সড়ক নিরাপত্তা শাখা থেকে একটি নীতিমালা তৈরির কাজ করা হয়। এজন্য ৯ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। তবে জনবল সংকটের কারণে নীতিমালা তৈরির বিষয়টি পরে অগ্রগতি হয়নি।’
কি ছিল খসড়ায় নীতিমালায়
ঢাকাসহ শহরের ভেতরে মোটরসাইকেলের সর্বোচ্চ গতি হবে ৩০ কিলোমিটার। মহাসড়কে ১২৬-এর কম সিসির (ইঞ্জিন ক্ষমতা) মোটরসাইকেল চলাচল করতে পারবে না। পাশাপাশি পেছনে আরোহী নিয়ে মহাসড়কে মোটরসাইকেল চালানো যাবে না। মোটরসাইকেলের চলাচল নিয়ন্ত্রণে এসব বিষয় যুক্ত করে একটি নীতিমালার খসড়া তৈরি করা হয়। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের একজন যুগ্ম সচিবের নেতৃত্বে ৯ সদস্যের একটি কমিটি কাজ করেছিল।
কমিটিতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ), বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), পুলিশ এবং সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের প্রতিনিধিরা ছিল। নীতিমালাটির নাম দেওয়া হয়েছিল ‘মোটরসাইকেল চলাচল নীতিমালা-২০২৩’।
সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, খসড়া নীতিমালায় তিনটি উদ্দেশ্যের কথা উল্লেখ করা হয়েছে-১. মোটরসাইকেল চলাচল নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সড়ক দুর্ঘটনা কমানো। ২. মোটরসাইকেলের নিরাপদ ব্যবহার ও অপেক্ষাকৃত কম ঝুঁকিপূর্ণ মোটরসাইকেল ব্যবহারে উৎসাহ তৈরি। ৩. মোটরসাইকেল চালকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো। এ ছাড়া বিশ্বে স্পোর্টি ও স্কুটি-এই দুই ধরনের মোটরসাইকেল বেশি চলাচল করে।
বাংলাদেশে বিক্রয়, বিপণন ও সড়কে চলাচলকারী প্রায় সব মোটরসাইকেলই স্পোর্টি শ্রেণির, যা অপেক্ষাকৃত দুর্ঘটনাপ্রবণ। অন্যদিকে স্কুটি মোটরসাইকেল তুলনামূলকভাবে নিরাপদ। এ জন্য নীতিমালায় স্কুটি মোটরসাইকেলের প্রসার এবং স্পোর্টির ব্যবহার কমানোর ওপর জোর দেওয়া হয়েছিল।
খসড়া নীতিমালায় বলা হয়, স্পোর্টি মোটরসাইকেল দ্রুতগতিসম্পন্ন। এই গতির সঙ্গে ভারসাম্য রক্ষার জন্য এসব মোটরসাইকেলের বসার আসন কিছুটা কৌণিকভাবে তৈরি করা হয়ে থাকে। অর্থাৎ, পেছনের দিকটা উঁচু। অন্যদিকে স্কুটি মোটরসাইকেল আরামদায়ক, জ্বালানিসাশ্রয়ী ও অপেক্ষাকৃত কম গতিসম্পন্ন। এসব মোটরসাইকেলের বসার আসন সাধারণত ভূমির সমান্তরাল হয়।
সব মিলিয়ে এগুলো সহজে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। জরুরি প্রয়োজনে স্বল্প দূরত্বে যাতায়াতের জন্য মোটরসাইকেল ব্যবহার করা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে দূরের পথে মহাসড়কসহ সর্বত্র মোটরসাইকেলের চলাচল দেখা যায়। বিশেষ করে উৎসবের সময় মোটরসাইকেলের ব্যবহার বহুগুণ বেড়ে যায়। এ ক্ষেত্রে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় বিপুল প্রাণহানি ঘটছে। এ জন্য মোটরসাইকেলের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি।
এ বিষয়ে সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (আইন শাখা) নাফিউল হাসান জনকণ্ঠকে বলেন, ‘সাধারণত নীতিমালা আইন শাখা করা হয়। কিন্তু আমি শাখায় নতুন দায়িত্ব পেয়েছি। তাই এ বিষয়ে তেমন কিছু বলতে পারব না। তবে সার্বিকভাবে এটা বলতে পারি মোটরসাইকেল যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে এক সময় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।
তাই এখনেই এটা নিয়ন্ত্রণ করা দরকার। মোটরসাইকেল দরকার, এটা ঠিক আছে। কিন্তু এটা গণপরিবহনের বিকল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেলে দুর্ঘটনায় প্রাণহানি বেড়ে যাবে।’ রাইড শেয়ারিং পদ্ধতি চালুর পর থেকে মোটরসাইকেল সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানান তিনি।
ঢাকায় ১২ লাখের বেশি মোটরসাইকেল চলে ॥ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)’র তথ্যমতে. সারাদেশে গড়ে প্রতিদিন প্রায় ৭২০টি মোটরসাইকেল নিবন্ধন দেওয়া হয়। বছরে দুই লাখের বেশি মোটরসাইকেল নিবন্ধন দেওয়া হচ্ছে। গত বছর ২ লাখ ৬৩ হাজার মোটরসাইকেল নিবন্ধন দেয়া হয়েছে। এর আগের বছর ২০২৩ সালে প্রায় ৩ লাখের বেশি মোটরসাইকেল নিবন্ধন দেওয়া হয়েছিল।
গত ১০ বছরে ঢাকাসহ সারাদেশে প্রায় ৩৫ লাখের বেশি মোটরসাইকেল নিবন্ধন দেওয়া হয়। ২০১০ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সারাদেশে ৬৩ লাখ মোটরযানের নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৪৬ লাখেই হলো মোটরসাইকেল। ঢাকায় ১২ লাখের বেশি মোটরসাইকেল চলাচল করে।
সরেজমিনে রাজধানীর বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি প্রধান সড়কের মুখে যাত্রীর অপেক্ষায় জটলা করে দাঁড়িয়ে থাকে রাইড শেয়ারের বা চুক্তিভিক্তিক মোটরসাইকেল চালকরা। সড়ক দিয়ে কেউ হেঁটে গেলেই জিজ্ঞেস করে ভাই ‘কই যাইবেন’। পথিকরা প্রথমে বিব্রত হলেও পরে বলে না ভাই যাব না। এভাবে প্রতিদিন একাধিকবার মোটরসাইকেল চালকদের জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়তে হয় রাজধানীবাসীর।
রাজধানীতে রাইড শেয়ারিংয়ের নামে মোটরসাইকেল ও কার চালকদের নৈরাজ্য সড়কে যানজট ও দুর্ঘটনার কারণ বলছেন সংশ্লিষ্টরা। অনেক ক্ষেত্রে রাইডাররা সিগন্যাল তো দূরের কথা ভিআইপি সিগন্যালও মানেন না। আর রাজধানীর অধিকাংশ সড়কের ফুটপাথে মোটরসাইকেল চালানো নিত্য-নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছেন।
ফুটপাতে মোটরবাইক চলাচল করায় প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। এ ছাড়া রাজধানীতে রাইড শেয়ারিংয়ের ক্ষেত্রে অধিকাংশই এখন আর মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে চলে না, চলে চুক্তিভিত্তিক। প্রযুক্তি সেবায় নিয়ন্ত্রণ নেই, ফলে এক ধরনের নৈরাজ্য বিরাজ করছে।
রাজধানীর বাংলামোটর এলাকায় তমাল নামের এক মোটরসাইকেল চালক জনকণ্ঠকে বলেন, ‘রাইড শেয়ারিংয়ে এখন আর বেশি মোটরসাইকেল চলে না। সবাই চুক্তিতেই যেতে যায়। বাসা বা অফিস থেকে বের হয়েই মোটরসাইকেল পেয়ে যাচ্ছে। তাই অনেকেই এখন আর অ্যাপ ব্যবহার করে না। তা ছাড়া যানজটের কারণে পথের মধ্যে নেমে যান অনেকেই।
গত ৫ আগস্টের পর ঢাকায় মোটরসাইকেল অনেক বেড়ে গেছে। এর কারণ পুলিশ আগের মতো কড়াকড়ি করে না। অনেকে লাইসেন্স ছাড়াই চলাচল করছে।’ তাই মোটরসাইকেল কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করা দরকার বলে মনে করেন তিনি।
মগবাজার মোড় এলাকায় বাবুল নামের এক ট্রাফিক পুলিশ জনকণ্ঠকে বলেন, মোটরসাইকেল চালকরা ট্রাফিক সিগন্যাল মানতে চান না। সিগন্যাল দেওয়া হলেও তার তোয়াক্কা না করে অনেকটা যেন দলবেঁধে বের হয়ে যায়। এদের নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। প্রতিটি সিগন্যালেই প্রায় শতাধিক মোটরসাইকেল আটকা পড়ে। কিন্তু তারা এদিক-সেদিক দিয়ে বের হয়ে যায়। অনেক সময় উল্টোপথে চলাচল করে।’ এদের বিরুদ্ধে অভিযান চলে। কিন্তু জনবল সংকট থাকায় এখন একটু অভিযান কম হচ্ছে বলে জানান তিনি।
মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মৃত্যুতে শীর্ষে বাংলাদেশ ॥ বুয়েটের এক গবেষণায় উল্লেখ করা হয়, প্রতিবছর দেশে প্রতি ১০ হাজার মোটরসাইকেলের বিপরীতে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাচ্ছেন ২৮ দশমিক ৪ জন। তাদের প্রায় ৪০ শতাংশেরই বয়স ২৪ থেকে ৩০ বছর। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মৃত্যুর এই হার সারা বিশ্বে সর্বোচ্চ। যদিও মাথাপিছু মোটরসাইকেল ব্যবহারকারীর হিসাবে বাংলাদেশের অবস্থান পেছনের (১৬ দেশের মধ্যে) দিকে।
এ হিসেবে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মৃত্যুর দিক দিয়ে বিশ্বে বাংলাদেশ শীর্ষে। বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় ২০২১ সালে মোটরসাইকেল বেশি চলাচল করে, এমন ১৬টি দেশের (বাংলাদেশসহ) ওপর সড়ক নিরাপত্তাসংক্রান্ত একটি গবেষণা করে বুয়েটের সড়ক দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউট (এআরআই)।
২০১৬ সালে ঢাকাসহ দেশের বড় শহরে রাইড শেয়ারিং পদ্ধতি চালু হলে বাড়তে থাকে মোটরসাইকেল সংখ্যা। সবচেয়ে বেশি মোটরসাইকেল নিবন্ধন হয় করোনার পরে ২০২২ সালে। ওই বছর প্রায় ৫ লাখের বেশি মোটরসাইকেলে নিবন্ধন দেওয়া হয়। কারণ করোনার পর অনেকেই বেকার হয়ে পড়েছিলেন। তখন কোনো উপায়ান্তর না দেখে রাইড শেয়ারিং মোটরসাইকেলে যাত্রী পরিবহন করা শুরু করেন।
এর পর থেকে এখনো মোটরসাইকেলে যাত্রী পরিবহন করছেন অনেকেই। নিবন্ধিত মোটরসাইকেলের ছাড়াও গ্রাম অঞ্চলে অনিবন্ধিত মোটরসাইকেলের সংখ্যা বাড়ছে বহুগুণ। এভাবে সড়ক-মহাসড়কে মোটরসাইকেলের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে বাড়ছে দুর্ঘটনা।
এ ছাড়া বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানোর জন্য অনেকাংশে দায়ী পিতা-মাতা বা স্বজনরা। অপরিণত বয়সে সন্তানের হাতে তুলে দিচ্ছেন মোটরসাইকেল। আর এসব সন্তান পরিণতি চিন্তা না করে অনেকটা আত্মহারা হয়ে সড়কে বেপরোয়াভাবে মোটরসাইকেল চালাচ্ছে। যার ফলে বাড়ছে দুর্ঘটনা। অল্প বয়সে প্রাণ হারাচ্ছে অনেক মেধাবী তরুণ।
৫ বছরে ১২ হাজারের বেশি মোটরসাইকেল আরোহী নিহত ॥ বেসরকারি সংগঠন রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্যমতে, মোটরসাইকেল ৪ চাকার যানবাহনের তুলনায় ৩০ গুণ বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু দেশে গণপরিবহন ব্যবস্থা উন্নত ও সহজলভ্য না হওয়া এবং যানজটের কারণে মানুষ মোটরসাইকেল ব্যবহারে উৎসাহিত হচ্ছে এবং দুর্ঘটনা বাড়ছে।
মোটরসাইকেল চালকদের মানসম্পন্ন হেলমেট ব্যবহারে আগ্রহ কম। অথচ মানসম্পন্ন হেলমেট ৪৮ শতাংশ মৃত্যু ঝুঁকি কমায়। গত ৫ বছরে ১১ হাজার ৭২৫টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১১ হাজার ৮৬৪ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ২০২০ সালে ১৩৮১ দুর্ঘটনায় ১৪৬৩ নিহত হয়, ২০২১ সালে ২০৭৮ দুর্ঘটনায় ২২১৪ জন, ২০২২ সালে ২৯৭৩ দুর্ঘটনায় ৩০৯১ জন, ২০২৩ সালে ২৫৩২ দুর্ঘটনায় ২৪৮৭ জন এবং ও ২০২৪ সালে ২৭৬১টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২৬০৯ জন নিহত এবং ৩ হাজার ১৫১ জন আহত হয়েছে।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান জনকণ্ঠকে বলেন, ‘মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় চালক কিংবা যাত্রীর আসনে বসা ব্যক্তির মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার একটি ব্যাপক অংশ ঘটছে বাস এবং পণ্যবাহী ভারি যানবাহনের ধাক্কা বা চাপায়। এসব দ্রুত গতির যানবাহন চালকদের অধিকাংশই অসুস্থ ও অদক্ষ। এদের বেপরোয়াভাবে যানবাহন চালানোর কারণে দক্ষ মোটরসাইকেল চালকরাও দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন।
কিন্তু দেশে গণপরিবহন ব্যবস্থা উন্নত ও সহজলভ্য না হওয়া এবং যানজটের কারণে মানুষ মোটরসাইকেল ব্যবহারে উৎসাহিত হচ্ছে এবং দুর্ঘটনা বাড়ছে। মোটরসাইকেল চালকরা মানসম্পন্ন হেলমেট ব্যবহারের আগ্রহ কম। অথচ মানসম্পন্ন হেলমেট ৪৮ শতাংশ মৃত্যুঝুঁকি কমায়। এ ছাড়া মোটরসাইকেল চালকদের বেশিরভাগের বয়স ১৪-৪০ বছরের মধ্যে। এই যুবকরা অতিরিক্ত গতিতে মোটরসাইকেল চালানোর কারণে বাড়ছে দুর্ঘটনা।’ এজন্য মোটরসাইকেল চলাচল বিষয়ক একটি নীতিমালা তৈরি পরামর্শ দেন তিনি।