ছবি: সংগৃহীত
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের জানান যে, সরকার মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নিতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করছে এবং জুন মাসের মধ্যে মূল্যস্ফীতির হার ৬-৭ শতাংশে নামিয়ে আনার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি বলেন, “আমাদের মূল লক্ষ্য এখন মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এটি কমানো।”
এ সময় তিনি আরও জানান যে, জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি, মার্চ এবং রোজার মাসে নিত্যপণ্যের সংকট তৈরি হয় এবং এই সময়ের মধ্যে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। এর ফল এপ্রিল-মে মাসে কার্যকর হবে বলে তিনি আশা করছেন। “আমরা নিশ্চিত করবো, এপ্রিল-মে মাসের মধ্যে নিত্যপণ্যের সরবরাহে কোনো ঘাটতি থাকবে না” – বলেন তিনি।
এছাড়া, সরকারের তরফ থেকে বিভিন্ন জরুরি পণ্যের যেমন চাল, মসুর ডাল, সার ইত্যাদির আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। অর্থ উপদেষ্টা জানান, "আমরা ক্রয় কমিটিতে চাল, মসুর ডাল ক্রয়ের অনুমোদন অনবরত দিয়ে যাচ্ছি, এতে ফরেন এক্সচেঞ্জে চাপ সৃষ্টি হচ্ছে, তবে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে যেন বাজারে কোনো ধরনের ঘাটতি না হয়।”
ভ্যাট নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে, তিনি বলেন, কিছু কিছু পণ্যের দাম বৃদ্ধির পেছনে ভ্যাট একটি কারণ, যেমন বিস্কুটের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এসব বিষয়ে তিনি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বসে আলোচনা করবেন। তিনি জানান, মার্চ মাসে বাজেট পুনর্মূল্যায়ন করা হবে এবং বিশেষ করে অর্থনৈতিক খাতে নির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ভ্যাটের বিষয়ে তিনি আরও বলেন, "দিনের পর দিন ছাড় দেওয়া হয়েছে, কিন্তু এসব আর উৎসাহিত করা হবে না।”
এদিকে, দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও তিনি আলোচনা করেন। তিনি জানান, বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের বর্তমান পরিস্থিতি বেশ চাপের মধ্যে রয়েছে। অনেক টাকা ব্যাংক থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে এবং বিশ্বের কোনো দেশে এমন পরিস্থিতি হয়নি। তবে তিনি আশ্বস্ত করেন যে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিশেষ ফান্ড তৈরি করার চেষ্টা চলছে।
এছাড়া, তিনি বলেন, “গতকাল আমি সারাদিন ব্যাংকারদের সঙ্গে বৈঠক করেছি, কীভাবে বেসরকারি খাতে ট্রেড ফ্লো বাড়ানো যায় এবং ব্যবসায়িক খাতে আরও সাশ্রয়ী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, এসব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি যাতে ব্যবসার পরিবেশ সমান্য সংকটের মধ্যেও সচল থাকে।”
সর্বোপরি, ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সরকারের নানা উদ্যোগের মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা সম্ভব হবে, তবে এ জন্য সবাইকে সামঞ্জস্যপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে হবে এবং সময়মতো কার্যকর সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
রেজা