ছবি: সংগৃহীত
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও একুশে টেলিভিশনের চেয়ারম্যান আবদুস সালামসহ চারজনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা বাতিলের হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়েছে।
মামলাটি বাতিল সংক্রান্ত সাত বছর আগে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে গত বছরের ৩১ অক্টোবর রায় দেন বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ। সেই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। 'আব্দুস সালাম বনাম রাষ্ট্র' শিরোনামে প্রকাশিত ১১ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়ে বলা হয়েছে, মামলার ‘অভিযোগ’ সম্পর্কে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪(১)(জ) ধারায় স্পষ্ট ব্যাখ্যা রয়েছে।
এ অনুযায়ী অভিযোগ বলতে সংঘটিত অপরাধের বিষয়ে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে সরাসরি মৌখিক বা লিখিত অভিযোগকেই বুঝায়। তবে মামলার প্রথমিক তদন্ত বিবরণী (এফআইআর) অভিযোগ হিসেবে গ্রহণ করার সুযোগ নেই। ১৯৬ ধারার বিধান অনুযায়ী, এই মামলায় অভিযোগ ছাড়া আদালত মামলা গ্রহণ করতে পারে না। অথচ এখানে এফআইআরকে অভিযোগ হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে, যা আইনগতভাবে সঠিক নয়। তাই মামলাটি আদালতের বিচারিক প্রক্রিয়ার অপব্যবহার হিসেবে বাতিল করা হয়েছে।
২০১৭ সালে আবদুস সালামের আবেদনের পর হাইকোর্ট মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেছিল এবং মামলাটি কেন বাতিল করা হবে না, জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিল। এই রুলটি যথাযথ ঘোষণা করে উচ্চ আদালত রায় দিয়েছে।
তারেক রহমান, আবদুস সালাম ছাড়াও মামলায় আরও দুইজন আসামি ছিলেন—একুশে টেলিভিশনের সাবেক প্রধান প্রতিবেদক মাহাথীর ফারুকী খান এবং চ্যানেলটির জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক কনক সারওয়ার। আদালতে আবদুস সালামের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী শাহদীন মালিক।
পূর্নাঙ্গ রায়ের বিষয়ে বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল সাংবাদিকদের জানান, রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করতে যে আইনি উপাদান প্রয়োজন, সে উপাদান এই মামলায় ছিল না। রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে করতে হয়, অথচ এই মামলা থানায় করা হয়েছে, তাই আইনগতভাবে মামলাটি সঠিক হয়নি। এসব বিষয় তুলে ধরে হাইকোর্ট মামলাটি বাতিল করেছে।
২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি লন্ডন থেকে তারেক রহমানের দেওয়া বক্তব্য একুশে টিভি সরাসরি সম্প্রচার করলে পরদিন তারেক রহমান ও আবদুস সালামের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি চায় তেজগাঁও থানা পুলিশ। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পেয়ে তেজগাঁও থানার এসআই বোরহান উদ্দিন ২০১৫ সালের ৮ জানুয়ারি মামলাটি করেন। মামলায় তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি সৃষ্টি করার অভিযোগ আনা হয়। 2017 সালের 6 সেপ্টেম্বর মামলার তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশের গোয়েন্দা পরিদর্শক এমদাদুল হক।
রেজা