ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২০ মাঘ ১৪৩১

নদী দখল করে ধান চাষ!

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাঞ্ছারামপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

প্রকাশিত: ১৭:৪৪, ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫; আপডেট: ১৭:৪৪, ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

নদী দখল করে ধান চাষ!

ছবিঃ সংগৃহীত

বাংলাদেশ, আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি, রূপ-সৌন্দর্যে সমৃদ্ধ একটি দেশ। এই বাংলার শস্য-শ্যামলা ভূমি এবং অসংখ্য নদ-নদী ও অববাহিকা তার বৈশিষ্ট্য। তবে, কৃত্রিম কারণে ও সময়ের সাথে আমাদের নদীগুলি আজ বিপর্যয়ের সম্মুখীন। শুকনো মৌসুমে নদ-নদীর পরিস্থিতি তার বড় প্রমাণ।

ঢোলভাঙ্গা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার একটি নদী, যা বাঞ্ছারামপুর উপজেলার মানিকপুর গ্রাম দিয়ে প্রবাহিত হয়। গত কিছু বছর ধরে কৃষকরা নদী ও তার আশপাশের খাল বা ছড়ার বুক দখল করে বোরো ধানের চাষ করছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মেঘনা নদী, তিতাস নদী এবং ঢোলভাঙ্গা নদী বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তবে, এই নদীগুলোর পানি প্রবাহ এখন অনেক কমে গেছে। অনেক খাল শুকিয়ে গেছে, আর শুকনো খালের ভেজা মাটিতে চাষ করা হচ্ছে ধানের চারা। মেঘনা, তিতাস, ঢোলভাঙ্গা নদীর পানি বর্তমানে এখানকার কৃষকদের জন্য ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি, তারা নদীর তীরে বাদাম ও শীতকালীন সবজি চাষ করছেন। তবে, ধান চাষের কারণে নদীর প্রস্থ অনেক কমে গেছে।

এলাকাবাসী জানান, "শুধু ধান চাষই নয়, আমাদের আশেপাশের ময়লা-আবর্জনা ফেলার নির্দিষ্ট জায়গা না থাকায় বর্তমানে এই সব বর্জ্য নদীতেই ফেলা হচ্ছে। এতে করে ঢোলভাঙ্গা নদীর অবস্থা দিন দিন অনেকটাই নোংরা হয়ে যাচ্ছে।"

স্থানীয়রা বলছেন, যেভাবে নদীগুলি দখল হচ্ছে, তাতে করে যে কোনও মুহূর্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে। তারা মনে করেন, জরুরিভাবে নদী খনন করা না হলে আগামী ৫-১০ বছরের মধ্যে এই নদী বিলীন হয়ে যাবে।

গ্রামের জেলে হররাম দাস বলেন, "এক সময় এই নদীপথে ট্রলার চলাচল করত। কয়েক বছর আগে বিভিন্ন উপজেলার সঙ্গে নৌপথে যোগাযোগ ছিল। কিন্তু এখন নদী মরে গেছে, আর নৌপথ বলতে কিছু নেই।"

মনিকপুর গ্রামের কৃষক রহিস মিয়া, যিনি ঢোলভাঙ্গা নদীর পাশে বোরো ধান চাষ করছেন, বলেন, "নদীর পানি কম থাকায় আমার জমির পাশে নদীতে ধান চাষ করছি। তবে, সরকারিভাবে যদি নিষেধাজ্ঞা আসে, তবে আমি ধান চাষ বন্ধ করে দেব।"

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ হাজার ৯১০ হেক্টর। তবে, নদীতে ধান চাষ নিয়ে সরকারিভাবে কোনো নিষেধাজ্ঞা আসেনি।
 

মারিয়া

×