সর্বশেষ জনশুমারির ভিত্তিতে সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ

সর্বশেষ জনশুমারির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে জাতীয় সংসদের আসন সীমানা নির্ধারণ করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বৃহস্পতিবার আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।  
আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, আমরা আলোচনাকালে জাতীয় সংসদের নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ আইন-২০২১ পর্যালোচনা করে জানতে পেরেছি বর্তমান আইনে দুটি বিষয় সমস্যা সৃষ্টি করছে। তার মধ্যে একটি হলো জনসংখ্যাকে গুরুত্ব দিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে। আমরা সেটার প্রস্তাব করতে চাচ্ছি যে, ভৌগোলিক আয়তন, অবস্থা ও অবস্থান এবং সর্বশেষ জনশুমারি প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এই সীমানা নির্ধারণের ব্যবস্থা করতে হবে।
জনসাধারণের শহরমুখী হওয়ার প্রবণতার কথা উল্লেখ করে আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, আমাদের বাংলাদেশের জনসাধারণ শহরমুখী হওয়ার প্রবণতা রয়েছে। এটাকে শুধুমাত্র জনসংখ্যার ওপর অথবা জনশুমারির ওপর রাখলে দেখা যাবে শহরের দিকের আসন সংখ্যাগুলো ক্রমাগতভাবে বাড়তে থাকবে এবং অপর এলাকাগুলোর আসন সংখ্যা কমে যাবে সেটা রিপ্রেজেন্টিং হবে না বলে কমিশন মনে করে।
সংসদীয় আসনের সীমার নির্ধারণ আইন-২০২১ এর একটি উপধারা সংশোধনের প্রস্তাব করা হবে জানিয়ে আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, এ আইনের একটি উপধারা রয়েছে সেই উপধারায় একটি টাইপিং মিসটেক আছে আমাদের কাছে তা মনে হচ্ছে এবং আমরা আমাদের রেকর্ডের দিক থেকে যেটা পেয়েছি যে আমাদের এখান থেকে যে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল যে, উপধারা-২ কে ধারণ করে উপধারা ৩ দেওয়া হয়েছিল।

সেখানে টাইপিং মিসটেকের কারণে সম্ভবত এখানে উপধারা এক হয়ে গিয়েছে। ফলে যেটা দাঁড়িয়েছে যে, নির্বাচন কমিশন কিছুই করতে পারবে না। এ সমস্যাটি আমরা তুলে ধরে এটা সংশোধনের জন্য লিখবো।
আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, এখন পর্যন্ত ৪১টি সংসদীয় আসনে ২৪৮টি সীমানা সংক্রান্ত আবেদন এসেছে যার বেশিরভাগই আগের সীমানা ফিরে পেতে চায়। আমরা সেগুলো পর্যালোচনা করছি। সংস্কার কমিশনের সুপারিশ পর্যালোচনা করে সরকার যে সিদ্ধান্ত দেবে সে অনুযায়ী আমরা আমাদের কার্যক্রম পরিচালনা করব।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দেশের ৩০০ সংসদীয় আসনের মধ্যে ১৩০টি আসনে ব্যাপক রদবদল এনেছিল এ টি এম শামসুল হুদা কমিশন। এরপর এ টি এম শামসুল হুদার আমলের আসন ল বহাল রেখে মাত্র ক’টির আসন বিন্যাস করে দায়িত্ব শেষ করে গেছে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, কে এম নূরুল হুদা এবং কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন। বর্তমান নির্বাচন কমিশন গঠনের পর বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ২০০৮ সালের আগের সীমানা ফেরত দেওয়ার জন্য দাবি জানিয়েছে নির্বাচন কমিশনের কাছে।
ইসিকে ভোটারদের আস্থা ফেরাতে বলেছে ইইউ- ইসি সচিব ॥ প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) গণতন্ত্র বিশেষজ্ঞ মাইকেল লিডর। বৃহস্পতিবার আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে নির্বাচন কমিশনকে ভোটারদের আস্থা ফেরাতে বলেছেন ইইউ প্রতিনিধি। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ এ কথা জানান। 
আখতার আহমেদ বলেন, ইইউ প্রতিনিধিরা দুই সপ্তাহ ধরে দেশে বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে কথা বলেছেন। ইসিতে তাদের মতবিনিময়ের ফিডব্যাক দিতে এসেছেন তারা। সব লেভেলে একটাই কথা অবাধ, সুষ্ঠু ও  গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের কমিটমেন্ট রয়েছে সবক্ষেত্রে। প্রবাসী বাংলাদেশীদের যেন ভোটাধিকারের ব্যবস্থাপনার মধ্যে আনা যায় সে বিষয়ে পরামর্শ বা মডেল থাকলে শেয়ার করতে বলেছি আমরা।

এটি জটিল প্রক্রিয়া হলেও তারা বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়েছেন। তারা ভোটারদের ভেতরে আস্থা ফেরানোর বিষয়টি জানিয়েছেন। বিশেষ করে সচেতনতা, যোগাযোগ সিস্টেমকে আরও জোরদার করার বিষয়ে দেওয়া হয়েছে।