গেল ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ফোনে কথোপকথন হয় ডোনাল্ড ট্রাম্পের। আর তারপরেই জানা গিয়েছে আগামী মাসে অর্থাৎ ফেব্রুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী আমেরিকা সফরে যেতে পারেন। একথা জানিয়েছেন খোদ আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে এই আপডেট সামনে আসার পর থেকেই জল্পনা সৃষ্টি হয়েছে। আন্তর্জাতিক মহলের বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, মোদীর এই মার্কিন সফর আন্তর্জাতিক কূটনীতি এবং ভারত-আমেরিকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। পাশাপাশি, আরও দাবি করা হচ্ছে এই সফরে, মোট ৫ টি বিষয়ের উপর আলোকপাত করা হতে পারে।
প্রথমত, নরেন্দ্র মোদীর আসন্ন আমেরিকা সফরে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল এবং পশ্চিম এশিয়ায় ভারত ও আমেরিকার কৌশলগত অবস্থান কী হতে চলেছে সেদিকে নজর থাকতে পারে। কারণ ভারত এবং আমেরিকার বিশেষ কিছু লক্ষ্য একই। যেমন হচ্ছে- দুই দেশই চীনকে নিয়ে উদ্বিগ্ন। পাশাপাশি, উভয় দেশই চায় সৌদি-ইজরায়েলের মধ্যে একটি শান্তিপূর্ণ সমঝোতা হোক। শুধু তাই নয়, ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ হয়ে শান্তি ফিরে ফিরুক এমনটাই চাইছে ভারত-আমেরিকা। তাই এক্ষেত্রে, এই বিষয়টির বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হতে পারে।
দ্বিতীয়ত হচ্ছে, ট্রাম্পের সঙ্গে ভারতের বিষয় মোদী বিস্তর আলোচনা করতে পারেন। কারণ এই মুহূর্তে আমেরিকা এবং ভারত দুই দেশের মধ্যে বিশেষ কয়েকটি কারণ নিয়ে টানাপোড়েন চলছে। যেমন – দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, অভিবাসন, প্রতিরক্ষা এবং বিনিয়োগ। পরবর্তীতে যাতে এই ইস্যুগুলি দু’দেশের মধ্যে সমস্যা তৈরি না করে তার জন্য হয়তো আলাদাভাবে আলোচনা হতে পারে।
তৃতীয়ত, ইতিমধ্যেই ট্রাম্প অনুপ্রবেশকারী ও বেআইনি অভিবাসীদের বিতাড়িত করা শুরু করেছে। আর এতে করে আমেরিকায় বসবাসকারী বহু ভারতীয় বিপদে পড়তে পারেন। যা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জন্য খুব একটা ভালো হবে না বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। আর এই সমস্যা দূর করতে এবং ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের যাতে স্বার্থ রক্ষা করা যায় তার জন্য ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টিকে সামাল দিতে পারেন প্রধানমন্ত্রী।
চতুর্থ বিষয়টি যেটি হচ্ছে এই সফরে অনেকটা জুড়ে আলোচনা হতে পারে চীনকে নিয়ে। প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে ট্রাম্পের মধ্যে যে চীন বিরোধী মনোভাব দেখা যায়, প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর তাতে যেন বদল দেখা গিয়েছে। উল্টোদিকে ভারত এবং চীনের মধ্যে বিভিন্ন ইস্যুতে সমস্যা দেখা যাচ্ছে। আর এই ইস্যুতে ভারত এবং আমেরিকা একে অপরকে কতটা ভরসা করতে পারবে আসন্ন সফরেই তা স্পষ্ট করে নিতে পারেন নরেন্দ্র মোদী।
পঞ্চমত, এই মুহূর্তে গোটা বিশ্বজুড়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ বেড়েছে। এরই মাঝে চীনা সংস্থা ডিপসিক ভারত এবং আমেরিকার কাছে চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এই কারণে ডিজিটাল সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে প্রযুক্তিগত বাণিজ্যে বিনিয়োগ করা নিয়ে ভারত এবং আমেরিকা ঠিক কিভাবে ভূমিকা পালন করবে তাও হয়তো মোদীর এই সফরে স্পষ্ট হয়ে যেতে পারে। এখন দেখার বিষয়, নরেন্দ্র মোদীর সফর দু’দেশের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে।
তবে সফরে বাংলাদেশ ইস্যুতে কোন আলোচনা হবে কিনা তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায় নি।
সূত্র: হান্ট
ফুয়াদ