ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ মাঘ ১৪৩১

ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দলের গুঞ্জন

পদত্যাগ করবেন কি উপদেষ্টা আসিফ-নাহিদ-মাহফুজ?

প্রকাশিত: ০২:৩৪, ৩০ জানুয়ারি ২০২৫; আপডেট: ০২:৪৩, ৩০ জানুয়ারি ২০২৫

পদত্যাগ করবেন কি উপদেষ্টা আসিফ-নাহিদ-মাহফুজ?

ছবি : সংগৃহীত

রাজনীতির মাঠে নতুন ফিসফিসানি চলছে। পদত্যাগ করবেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুইয়া, নাহিদ ইসলাম ও মাহফুজ আলম।

ক্ষমতার পালাবদলের পর দেশের রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ দেখা যাচ্ছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন, যা ফেব্রুয়ারিতেই ঘোষণা করা হতে পারে। শোনা যাচ্ছে, নতুন দলের নেতৃত্বে থাকতে পারেন আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মোহাম্মদ নাহিদ ইসলাম।

এখন প্রশ্ন উঠছে, নাহিদ ইসলাম কি উপদেষ্টার পদ ছেড়ে নতুন রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব নিচ্ছেন? অন্য দুই উপদেষ্টা আসিফ, মাহফুজ-ই বা কি করবেন?

উপদেষ্টাদের কেউ রাজনীতি করলে সরকার থেকে বের হয়ে করবেন, এমন কথা বলেছেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ।

এদিকে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী জানিয়েছেন, দলের নাম ও কারা নেতৃত্বে আসবেন তা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। ছাত্র উপদেষ্টার কেউ যদি উপদেষ্টার পদ ছেড়ে রাজনৈতিক দলের দায়িত্বে আসতে চান তাদের স্বাগত জানানো হবে।

ছাত্রদের দল ঘোষণার আলোচনার মধ্যে অবশ্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিএনপি। তাদের অভিযোগ, সরকারের উপদেষ্টারা রাষ্ট্রীয় সুবিধা নিয়ে নতুন রাজনৈতিক দল গঠনে সক্রিয় রয়েছেন, যা সরকারের নিরপেক্ষতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। এসব বিবেচনায় জনমনে প্রশ্ন এসেছে, তবে কি ফেব্রুয়ারিতেই পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন আসিফ-নাহিদ-মাহফুজরা?

শেখ হাসিনার পতন ঘটানো গণঅভ্যুত্থানের সূত্রপাত করা ছাত্র নেতৃত্বদের নিয়ে গড়া নতুন রাজনৈতিক দল আগামী মাসের মধ্য থেকে শেষভাগে আত্মপ্রকাশ করতে পারে। সংসদীয় আসন, উপজেলা ও ইউনিয়নে বিএনপির দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ নেতাদেরও দলে টানার চেষ্টা করবে তারা। আওয়ামী লীগ বাদে অন্যান্য দলের নেতাদের জন্য দুয়ার উন্মুক্ত রাখবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে বিএনপির সঙ্গে বাহাস শুরু হলেও তিন ছাত্র উপদেষ্টার মধ্যে অন্তত একজন দলের নেতৃত্বে আসতে পারেন। সরাসরি বিএনপি বিরোধিতা না করে জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে চাঁদাবাজি, দখলবাজি, সিন্ডিকেট ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে ছাত্র নেতৃত্বের দল।

সম্প্রতি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ছাত্রদের সরকারের সহযোগিতা নিয়ে দল গঠন কিংবা কিংস পার্টি হওয়া উচিত হবে না। উপদেষ্টারা ছাত্রদের দলে থাকলে অন্তর্বর্তী সরকার নিরপেক্ষতা হারাবে। সেক্ষেত্রে নতুন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন প্রয়োজন হবে।

ছাত্র নেতৃত্ব এ বক্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্যকে আরেকটি ১/১১ এর ইঙ্গিত বলে মন্তব্য করেছেন।

স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুইয়া স্পষ্ট করেন, উপদেষ্টারা রাজনীতি করলে সরকারি দায়িত্ব ছেড়েই করবে। রাজনৈতিক দলগুলোর সরকারি এবং সাংবিধানিক পদের নিয়োগে চাপ, তদবিরও অনুচিত।

উপদেষ্টারা খোলাখুলি বলেন, সরকারের সব স্তরেই বিএনপিপন্থীরাও রয়েছেন। এমন বাহাস চললেও ছাত্রদের অন্দরমহল থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে, নতুন দলের নেতৃত্বে নাহিদ ইসলাম-ই আসতে পারে। নতুন দলের নেতৃত্বে আরো থাকবেন আসিফ মাহমুদ সজীব ভুইয়া, মাহফুজ আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহ, সারজিস আলম থেকে শুরু করে আন্দোলনের সব পরিচিত মুখ।

বিএনপি ও রাজনৈতিক দলগুলো দ্রুত নির্বাচন চাইলেও, ছাত্র নেতৃত্ব সংস্কারে জোর দিচ্ছে। সংবিধানসহ বিভিন্ন ইস্যুতেও রয়েছে বিপরীতমুখী অবস্থানে। আওয়ামী লীগ মাঠে না থাকায় ছাত্ররাই বিএনপির নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দী হতে পারে এমন সম্ভাবনা ও গুঞ্জন রয়েছে রাজনীতির ময়দানে। যা নিয়ে নতুন রাজনৈতিক উত্তেজনাও তৈরি হয়েছে। মাঝেমধ্যেই চলছে কথার লড়াই। তবে সময়ই বলে দিবে নতুন রাজনৈতিক দলে নাম লেখানোর পর অন্যান্য দলের সঙ্গে ছাত্রদের সম্পর্ক কতটুকু মসৃণ হয়।

 

সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=_gyLQ6i_RUM

মো. মহিউদ্দিন

×