দেশের পুরোনো চারটি বিভাগকে নতুন করে চারটি প্রদেশে পরিণত করার পরিকল্পনা করছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। এমন পরিকল্পনার কথা বাংলাদেশের অন্তর্র্বতী সরকারকে সুপারিশও করা হয়েছে।
এমন খবরের পরপরই দেশজুড়ে তুমুল আকারে শুরু হয়েছে আলোচনা। তবে এবার দেশের চারটি প্রদেশ করার পরিকল্পনাকে বিলাসিতা বলে অভিহিত করেছেন বিশেষজ্ঞরা। যার ফলে দেখা দিতে পারে নানা মহলে কোন্দল।
বাংলাদেশে গণ অভ্যুত্থানের পর গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার। এরপর রাষ্ট্রের বিভিন্ন খাতে সংস্কার প্রয়োজন বলে অন্তর্বর্তী সরকার এগারোটি সংস্কার কমিশন গঠন করে। এই এগারোটি কমিশনের মধ্যেই রয়েছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন।
যেখানে গণমুখী, জবাবদিহিমূলক, দক্ষ ও নিরপেক্ষ জনপ্রশাসন গড়ে তোলার লক্ষ্যে এই কমিশনের প্রধান হিসেবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মুঈদ চৌধুরীকে নেতৃত্ব দেয়া হয়। এই জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনই সম্প্রতি আলোচনার ঝড় সৃষ্টি করে দেশজুড়ে। যেখানে বিভিন্ন সূত্রে খবর ছড়িয়ে পড়ে, বাংলাদেশের চারটি পুরনো বিভাগকে নতুন করে চারটি প্রদেশ হিসেবে তৈরি করার সুপারিশ করবে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন।
ক্ষমতাকে বিকেন্দ্রীকরণের উদ্দেশ্যে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও খুলনাকে বাংলাদেশের চারটি প্রদেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার পরিকল্পনা চলছে। যদিও এই সিদ্ধান্ত এখনও চূড়ান্ত নয়।
তবে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের এমন পরিকল্পনাকে এবার বিলাসিতা বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এছাড়া এমন সিদ্ধান্ত বাংলাদেশে নতুন করে রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়াবে বলেও ধারণা করছেন তারা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, চার প্রদেশ দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় আরও খরচ বাড়াবে। দেশের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য এই মুহূর্তে এটি মোটেও ইতিবাচক নয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ডক্টর সাব্বির আহমেদ চারটি প্রদেশ তৈরির বিষয়ে একটি গণমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দেয়ার সময় জানিয়েছেন, বাংলাদেশের জন্য এ প্রদেশ তৈরির উদ্যোগ মোটেও বাস্তবসম্মত নয়।
তিনি আরও জানান, বাংলাদেশের স্থানীয় সরকারের কাঠামোয় এখনও ঠিকমতো চালানো সম্ভব হচ্ছে না। এমন অবস্থায় নতুন করে আরেকটি কাঠামো তৈরি করে চালানো যাবে সেটার কোনো গ্যারান্টি নেই।
অধ্যাপক ডক্টর সাব্বির আহমেদ আরো জানান, বাংলাদেশের মতো ছোট দেশের চারটি প্রদেশ বিলাসিতা ছাড়া আর কিছুই না। তিনি মনে করেন, চারটি প্রদেশ তৈরির চিন্তা যারা করছেন তাদের নিজস্ব কোনো অ্যাজেন্ডা থাকতে পারে।
এদিকে অন্তর্বর্তী সরকারের তৈরি সকল সংস্কার কমিশনকেই আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় দেয়া হয়েছে নিজ নিজ সংস্থার সংস্কার প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য। এর আগেই জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের চারটি প্রদেশ তৈরির পরিকল্পনা নিয়ে এমন সমালোচনা পরিকল্পনাটি একটি প্রভাব ফেলে ও চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এমন প্রস্তাব থাকে কি না, তা ই এখন দেখার বিষয়।
ফুয়াদ