পরিবর্তিত সময়ে নতুন মোড়ে রংপুরের রাজনীতি। জাতীয় পার্টির ঘাঁটিতে দুর্গ গড়তে মরিয়া হয়ে উঠেছে জামায়াতে ইসলামী। আর প্রার্থিতা ঘোষণা দিয়ে তৎপর ইসলামী আন্দোলন। এদিকে দ্বন্দ্ব কোন্দল না থাকায় দলীয় নির্দেশনায় মাঠ গোছাতে ব্যস্ত বিএনপি। আর প্রেসার গ্রুপ হিসেবে কাজ করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। অন্যদিকে নিজ দূর্গে অনেকটা কোণঠাসা জাতীয় পার্টি।
আগস্ট সরকার পতনের পর থেকেই সরব রংপুর মহানগরের রাজনীতি। নিজ দুর্গে দুর্বল জাতীয় পার্টি এখন অনেকটাই নিশ্চুপ থাকলেও তৎপরতা বাড়িয়েছে বিএনপি জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো। গেল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সাতান্ন হাজার ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হওয়া ইসলামী আন্দোলনের নেতা আমিরুজ্জামান পিয়ালকে দল থেকে রংপুর তিন আসনের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। এরই মধ্যে মাঠ গুছিয়েই গণ সমাবেশ করে নির্বাচনের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত তারা।
আমিরুজ্জামান বলেন, দায়িত্বের জন্য আমরা লালায়িত নই। এজন্যই আমাদের কোন অন্তর্কলহ নাই। আমাদের মধ্যে কোন গ্রুপিং লবিং কোনকিছুই নেই। আমরা যেখানেই গেছি সেখানেই গণমানুষের সাড়া আছে আশা করছি। ইনশাল্লাহ আমরা একটা বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে পারব।
এদিকে আটঘাট বেঁধে ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে আছে বিএনপি। তৃণমূলের শক্তি বাড়াতে নিয়মিত সময় দিচ্ছেন কেন্দ্রীয় নেতারা প্রার্থিতার প্রতিযোগিতায় প্রাধান্য না দিয়ে রংপুরে ঘাঁটি বাঁধায় এবার দলটির মূল লক্ষ্য। তবে রংপুর তিন আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে মহানগরের আহ্বায়ক শামসুজ্জামান সামু ও জেলা কমিটির সদস্য সচিব আনিসুর রহমাননেরতৎপরতা চোখে পড়ার মতো। যদিও এখনও ডামাডোল শুরু হয়নি। রংপুর এক আসনে আমি।
শামসুজ্জামান বলেন, আমি মনে করি যে, এখন আমরা অনেক শক্তিশালী এবং আগামী নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনে আমরা যাতে জয়লাভ করতে পারি তার জন্য যত কর্মকাণ্ড করা উচিত, সামাজিক, রাজনৈতিক, দলীয় যতটুকু আছে আমরা সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
এদিকে সরকার পতনের পর থেকে ঘন ঘন রংপুর অঞ্চল সফর করছেন জামায়াতের আমীর ডাক্তার শফিকুর রহমান। সম্প্রতি দলটির বেশ কয়েকটি বড় জমায়েত জানান দিচ্ছে জাতীয় পার্টির দুর্গ দখলে তৎপর তারা। তবে দলের নেতাদের দাবি, দলীয় কর্মতৎপরতার পাশাপাশি নির্বাচনকে প্রাধান্য দিচ্ছেন তারা।
জামায়াত নেতা আজম খান বলেন, কাজের মধ্যেই জনসম্পৃক্ততা। জাতি গঠনে ভূমিকা রাখছে জামায়াত। রাজনীতিতে কোন কোন্দল নাই। জামায়াতের রাজনীতিতে কোন লোক দেখানো কোন কাজ নেই। জামাতের রাজনীতিতে নেতৃত্বের খায়েশ ও নেয়।
শুরু থেকেই জাতীয় পার্টিকে ফ্যাসিবাদের দোসর আখ্যায়িত করা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন বেশ সরব। রংপুরে নানা কর্মসূচিতে মহানগরে জমজমাট পদচারনা থাকলেও আপাতত কোন দলীয় কর্মকান্ড চালাচ্ছে না তারা।
বৈষম্যবিরোধীরা বলছে, এখন পর্যন্ত তাঁরা ওয়ার্ড থানায় এ ধরনের কমিটি গঠন প্রক্রিয়া আমরা শুরু করিনি। যদিও অচিরেই বা দেশের প্রয়োজনে যদি কখনো আমাদের এরকম আরও বেশি স্টোনকে একত্রিত করা বা জিনিসগুলিকে আরও অর্গানাইজ করার জন্য যদি এরকম প্রয়োজন পড়ে, আমরা অবশ্যই।
পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেজাতীয় পার্টি নেতারা বলছেন, মাঠ ধরে রাখতে সরব তারা।জাপা নেতারা বলেন, যেহেতু আমরা একটা নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল, সামনের যে কোন নির্বাচনের তফসিল হলে সেখানে আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব। তার জন্য আমাদের প্রস্তুতি চলছে। জাতীয় পার্টি একবারে পিছায় নাই। আমরা নিজেরাই যেখানে আমাদের সম্ভাব্য ক্যান্ডিডেট গুলো আছে সেখানে দলকে কিভাবে সংগঠিত করা যায়, আরও উজ্জীবিত করা যায় সে বিষয়ে আমরা কাজ করতে চাই।
ফুয়াদ