ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১৪ মাঘ ১৪৩১

পাকিস্তান থেকে জেএফ-১৭ কেনার চুক্তি ভেস্তে দেওয়ার হুমকি ভারতের!

প্রকাশিত: ০৯:৩৪, ২৬ জানুয়ারি ২০২৫; আপডেট: ০৯:৩৭, ২৬ জানুয়ারি ২০২৫

পাকিস্তান থেকে জেএফ-১৭ কেনার চুক্তি ভেস্তে দেওয়ার হুমকি ভারতের!

ছবি: সংগৃহীত

ভারত বাংলাদেশের জেএফ-১৭ কেনার চুক্তি ভেস্তে দিতে হুমকি দিচ্ছে বলে দাবি করেছে পাকিস্তান প্রতিরক্ষা বিভাগ। তাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স একাউন্টে একটি পোস্টে এই বার্তা শেয়ার করে।

দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক শক্তির ভারসাম্য পরিবর্তনে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে এমন এক পদক্ষেপে, ভারত পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্ভাব্য অস্ত্র চুক্তি, বিশেষত জেএফ-১৭ ব্লক-৩ যুদ্ধবিমান নিয়ে কঠোর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। প্রতিবেশী এই দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা ও কৌশলগত অবস্থানের মধ্যেই এই ঘটনা ঘটছে।

জেএফ-১৭ থান্ডার যুদ্ধবিমানটি পাকিস্তান ও চীনের যৌথ প্রকল্প। এটি আন্তর্জাতিক বাজারে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। নাইজেরিয়া ও মিয়ানমারের মতো দেশ ইতোমধ্যেই এই যুদ্ধবিমান ক্রয় করেছে। বাংলাদেশ যদি এই বিমান কিনে, তাহলে এটি দেশের বিমান বাহিনীকে শক্তিশালী করবে এবং দক্ষিণ এশিয়ার সামরিক ভারসাম্যে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে পারে।

ভারত অনেক দিন ধরেই প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা সহযোগিতার বিরোধিতা করে আসছে। বিশেষ করে ২০০৯ সাল থেকে দিল্লি এ বিষয়ে বিশেষ সতর্ক। জেএফ-১৭ ব্লক-৩ যুদ্ধবিমানটির উন্নত প্রযুক্তি, আধুনিক রাডার ব্যবস্থা এবং উন্নত যুদ্ধ দক্ষতা রয়েছে। এটি ভারতের সামরিক আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে।

জেএফ-১৭ ব্লক-৩ যুদ্ধবিমানটি রাশিয়ার ক্লিমভ আরডি-৯৩এমএ টার্বোফ্যান ইঞ্জিন দ্বারা চালিত। এটি প্রতি ঘণ্টায় ১,৯১০ কিমি গতিতে উড়তে পারে এবং অভ্যন্তরীণ জ্বালানি দিয়ে ৯০০ কিমি দূরত্বে অভিযান পরিচালনা করতে পারে। এর উন্নত বৈশিষ্ট্যগুলো হল:

রাডার: KLJ-7A অ্যাকটিভ ইলেকট্রনিক্যালি স্ক্যানড অ্যারে (AESA) রাডার
অভিযান ক্ষমতা: বিমানটি PL-15 এবং PL-10 মিসাইল বহনে সক্ষম
ইলেকট্রনিক যুদ্ধ ব্যবস্থা: উন্নত প্রযুক্তি যা প্রতিকূল বৈদ্যুতিক পরিবেশেও কার্যকর
নকশা: এটি ১৪.৩২৬ মিটার লম্বা এবং এর সর্বোচ্চ ওজন ১৩,৫০০ কেজি

বাংলাদেশ যদি এই বিমান কিনে, তা পাকিস্তান ও চীনের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক বাড়ানোর ইঙ্গিত দেবে। এ ঘটনায় দক্ষিণ এশিয়ার শক্তি ভারসাম্যে পরিবর্তন আনতে পারে। তবে ভারতের এই চুক্তি বন্ধ করার হুমকি তাদের সামরিক আধিপত্য বজায় রাখার কৌশলের অংশ। এটি শুধু সামরিক বিষয় নয়, বরং কূটনৈতিক বার্তা।

পাকিস্তান ও চীনের প্রতিরক্ষা সম্পর্ক দীর্ঘদিনের এবং শক্তিশালী। এই অংশীদারিত্বের মাধ্যমে পাকিস্তান তার সামরিক প্রযুক্তি উন্নয়ন ও প্রতিরক্ষা শক্তি বাড়িয়েছে।

নৌবাহিনী: পাকিস্তান চীনের কাছ থেকে টাইপ ০৪১ সাবমেরিনসহ উন্নত জাহাজ পেয়েছে।
মিসাইল প্রযুক্তি: পাকিস্তানের শাহীনের মতো মিসাইল ব্যবস্থায় চীনের বড় ভূমিকা রয়েছে।
যৌথ মহড়া: দুই দেশের সামরিক বাহিনী নিয়মিত যৌথ মহড়া পরিচালনা করে।
সম্ভাব্য পরিণতি
ভারতের হস্তক্ষেপে চুক্তি ব্যর্থ হলে এটি কৌশলগত অস্থিরতা তৈরি করতে পারে। বাংলাদেশের জন্য এটি একটি কঠিন সিদ্ধান্ত চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করবে নাকি ভারতের সঙ্গে ঐতিহ্যবাহী বন্ধুত্ব বজায় রাখবে।

এই চুক্তি বাস্তবায়িত হলে এটি শুধু দক্ষিণ এশিয়ার সামরিক ভারসাম্যে নয়, বরং আন্তর্জাতিক কৌশলগত প্রেক্ষাপটে বড় পরিবর্তন আনতে পারে।

সূত্র: BulgarianMilitary.com

নাহিদা

×