ছবি : সংগৃহীত
সীমান্তে ভারত বাংলাদেশের উত্তেজনার মধ্যেই ভারত সফরে যাচ্ছেন বিজিবির প্রধান। তাই এই খবরকে ঘিরে নানা রকম গুজব ছড়িয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। অবশেষে এ ব্যাপারে অবস্থান জানিয়েছে বিজিবি।
গত কয়েকদিন ধরেই বিজিবি প্রধানের ভারত সফর নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে নানা গুজব। এবার সেই গুজব নিয়ে নিজেদের অবস্থান জানিয়েছে বিজিবি মহাপরিচালক। মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকীর ভারত সফর নিয়ে কোন গোপনীয়তা নেই বলে জানিয়েছে বর্ডারগার্ড বাংলাদেশ বিজিবি। ২৪ জানুয়ারি শুক্রবার রাতে বিজিবির ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে এক পোস্টের মাধ্যমে এই তথ্য জানানো হয়।
পোস্টে বলা হয়, দেশের কিছু গণমাধ্যমে বিজিবি প্রধানের ভারত সফর নিয়ে গোপনীয়তা সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনার ঝড় এই শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদটি বিজিবির নজরে এসেছে। সংবাদটি বিজিবির ভাবমূর্তি বিনষ্টের পাশাপাশি জনমনেও বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছে।
পোস্টে আরো বলা হয়, বর্তমানে সীমান্তে জনগণের সাথে একাত্ম হয়ে বিজিবি যে ভূমিকা পালন করছে, ঠিক সেই সময়ে এই ধরনের নেতিবাচক পোস্ট সমূহের কারণে সকলের মনে শান্তি সৃষ্টি হবার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। আর আগামী ১৭ থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি ভারতের নয়াদিল্লিতে বিজিবি বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের সীমান্ত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে বিজিবি ছাড়াও দেশের অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয় ও সংস্থার প্রতিনিধিরাও অংশগ্রহণ করবেন। এখানে গোপনীয়তার কিছু নেই এবং বিজিবির পক্ষ থেকেও কোন গোপনীয়তার চেষ্টাও করা হয়নি।
অনুগ্রহপূর্বক বিভ্রান্তিমূলক পোস্ট করা কিংবা বিভ্রান্ত হওয়া থেকে বিরত থাকার জন্য সকলকে অনুরোধ করা হয় বিজিবির সেই পোস্টের মাধ্যমে।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর যখন দুই দেশের সীমান্ত সম্পর্ক তলানিতে এসে ঠেকেছে, তখন ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর প্রধানরা প্রথমবারের মতো নয়া দিল্লিতে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন। তাই এই বৈঠক নিয়ে রয়েছে জনমনে বাড়তি আগ্রহ, কি নিয়ে আলোচনা হতে পারে, সেই জিজ্ঞাসাটিও মুখ্য।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিএসএফ ও বিজিবি প্রধানদের আসন্ন বৈঠকে যেসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে তার মধ্যে রয়েছে, সীমান্তে সিঙ্গেল রোফেন্স বা এসআরএফ বাস্তবায়ন, যা ভারত সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়াবিহীন এলাকায় যত দ্রুত সম্ভব সম্পন্ন করতে চায় বিএসএফ। তবে সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে উভয়পক্ষ কোন প্রতিরক্ষা কাঠামো নির্মাণ করবে না মর্মে বেড়া নির্মাণে আপত্তি জানিয়েছে বিজিবি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তারা জানান, বাংলাদেশ অংশে মানব পাচারে জড়িত উপাদানগুলোর উপর বিজিবি সক্রিয়ভাবে নজরদারী চালাচ্ছে। একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ভারতের পক্ষ থেকে বিজেপি প্রধানকে বলা হতে পারে অবৈধ অভিবাসন ও চোরাচালান বন্ধে বর্ধিত সহযোগিতার কথা। বৈঠকে মাদক ও গরু পাচার এবং মানব পাচারসহ আন্তঃসীমান্ত চোরাচালান মোকাবিলার পাশাপাশি অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ও উঠে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এদিকে বিজিবি প্রধানের সফরের আগে আগামী ১০ থেকে ১২ই ফেব্রুয়ারি ইন্ডিয়া এনার্জি উইকে অংশগ্রহণ করবেন জ্বালানি উপদেষ্টা মোহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। সেখানে ভারতীয় মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে জ্বালানি সংযোগ ও সহযোগিতা নিয়ে জ্বালানি উপদেষ্টা আলোচনা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
মো. মহিউদ্দিন