ছবি: সংগৃহীত।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আত্মগোপনে থাকা সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সম্প্রতি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-এ এক সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। তিনি আন্দোলন দমাতে গোয়েন্দা ব্যর্থতার কথা স্বীকার করে দাবি করেন, সেনাবাহিনীর একটি অংশের সহযোগিতায় ঘটনাটি পরিকল্পিত সেনা অভ্যুত্থানে রূপ নেয়।
সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমি ৭ আগস্ট বাড়ি ছেড়েছি। গত ৩ থেকে ৫ আগস্টের মধ্যে প্রায় ৪৬০টি থানা পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এবং থানাগুলো থেকে ৫,৮২৯টি অস্ত্র লুট করা হয়েছে। এমনকি গণভবনের এসএসএফের অস্ত্রও নিয়ে যাওয়া হয়।”
তিনি আরও দাবি করেন, “৫ আগস্টের রাতে সেনাপ্রধান ও পুলিশ প্রধানের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের সাক্ষী আমি। সেনাপ্রধান প্রধানমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেছিলেন যে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং তাঁর সুরক্ষার দায়িত্ব সেনাবাহিনী নেবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যা ঘটেছে, তা থেকে বোঝা যায়, এটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র ছিল।”
সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, “আমি একমত যে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ব্যর্থতা ছিল। তবে এটি ইচ্ছাকৃত ছিল নাকি অনিচ্ছাকৃত, তা বলা কঠিন। গোয়েন্দা বিভাগগুলো সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কাছে রিপোর্ট করত। আমার কাছে কেবল সারসংক্ষেপ আসত।”
তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “দেশে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের আয়োজন করে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করাই এখন একমাত্র পথ।”
তিনি আরও বলেন তার চেয়ারে বসার কোনো অধিকার নেই। তিনি নেতা নন, রাজনীতিক নন। আমাদের দেশে খুব অদ্ভুত কিছু ঘটেছে। বাংলাদেশ একটি অদ্ভুত দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে। ড. ইউনূসের উচিত তার পদ ছেড়ে আওয়ামী লীগ সহ সকল রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে লড়তে দেয়া। গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার এটিই একমাত্র উপায়।
যদিও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বক্তব্যকে সম্পূর্ণ মিথ্যাচার বলে উল্লেখ করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং। শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) রাতে এক বিবৃতিতে তারা জানায়, “ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রকাশিত সাক্ষাৎকারটি মিথ্যা তথ্য এবং উদ্দেশ্যমূলক প্রচারণায় ভরপুর। এতে জাতিকে বিভ্রান্ত করার ষড়যন্ত্র স্পষ্ট।”
সায়মা ইসলাম