ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১১ মাঘ ১৪৩১

হাসপাতাল থেকে ছেলের বাসায় ফিরছেন খালেদা জিয়া

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২২:৩৫, ২৪ জানুয়ারি ২০২৫

হাসপাতাল থেকে ছেলের বাসায় ফিরছেন খালেদা জিয়া

.

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা উন্নতির দিকে। তবে এখনো তাঁর লিভার প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়নি। শুক্রবার রাতে দ্য লন্ডন ক্লিনিক থেকে ছেলে তারেক রহমানের বাসায় ফিরছেন। দলের চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানিয়েছেন, সতেরো দিন চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকার পর ছাড়পত্র পাচ্ছেন খালেদা জিয়া।
ডা. জাহিদ বলেন, ‘সবকিছু ঠিক থাকলে, রিপোর্টগুলো আসলে, ইনশাআল্লাহ্, ম্যাডামের হাসপাতাল থেকে ছুটি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। গতকালও একজন চিকিৎসক দেখে পরীক্ষা করানোর জন্য দিয়েছিলেন, যেগুলো আজ করা হচ্ছে। সেগুলো যদি করানো শেষ হয়, সব ঠিক থাকে তাহলে হয়তো ইভনিংয়ে ছুটি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তবে ছুটি পেলেও উনি সার্বক্ষণিক প্রফেসর জন প্যাট্রিক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রস, এই দুইজনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন থাকবেন এবং ম্যাডামের যে মেডিক্যাল বোর্ড আছে তারাও থাকবেন। অর্থাৎ ইউকের যে নিয়ম, সেই নিয়ম মেনেই উনার চিকিৎসা চলবে।’
গত ৭ জানুয়ারি খালেদা জিয়া কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে যুক্তরাজ্যে পৌঁছানোর পর লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি হন। এই হাসপাতালের লিভার বিশেষজ্ঞ জন প্যাট্রিক কেনেডির নেতৃত্বাধীন মেডিক্যাল বোর্ডের অধীনে তার চিকিৎসা চলছে। ৭৯ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ নানা শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন। লন্ডনে সংবাদমাধ্যমের কাছে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার তথ্য জানিয়েছেন এ জেড এম জাহিদ হোসেন। বিএনপি চেয়ারপারসন কেমন আছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ম্যাডাম এখন সার্বিকভাবে অনেকটা বেটার আছেন। কিন্তু যে কথাটা আমরা আগেও বলেছি, উনার লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করার বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্তে আসা যায়নি। কারণ মনে রাখতে হবে, আমি আগেও এখানে (লন্ডন ক্লিনিকের সামনে) বলেছি, উনার বয়সটা একটা বিবেচ্য বিষয় এবং উনার লিভার ডিজিজ, উনি জেলখানায় যখন ছিলেন একাকিত্ব এবং বলতে গেলে যে চিকিৎসা উনার প্রয়োজন ছিল, সেই চিকিৎসা থেকে উনাকে বঞ্চিত করা হয়েছে। আর দীর্ঘ সময় আটকে রাখার কারণে যে সময়ে উনাকে বিদেশে নিয়ে আসলে হয়তো আরও দ্রুত সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। চিকিৎসকদের বক্তব্য হচ্ছে, হয়তো আগে হলে নতুন চিন্তাভাবনা করা যেত।’
তিনি বলেন, ‘এই অবস্থার মাঝে এখন পর্যন্ত আগামীতে লন্ডন ক্লিনিকের মেডিক্যাল বোর্ডের যে চিকিৎসা অর্থাৎ ওষুধের মাধ্যমে উনার বিভিন্ন রোগের যে চিকিৎসা চলছে, সেটা অব্যাহত রাখার জন্য এখানকার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এবং জন হপকিন্সের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ সবাই মোটামুটি একমত। সেই অনুযায়ী চিকিৎসা চলবে।
উনার শারীরিক অবস্থার ওপর ভিত্তি করে পরবর্তীতে যে সকল রিপোর্টের ফলাফল এখনো আসে নাই- কয়েকটা তো বাইরেও পাঠানো হয়েছে- সেইগুলো আসা সাপেক্ষে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের সুস্থতা যাতে অব্যাহত থাকে সেজন্য দেশবাসীর কাছে তার পরিবার এবং তারেক রহমানের পক্ষ থেকে দোয়া চাওয়া হয়েছে বলে জানান এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
চিকিৎসার জন্য সবশেষ ২০১৭ সালের ১৬ জুলাই লন্ডনে গিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। পরের বছর দুর্নীতির মামলায় দণ্ড নিয়ে কারাগারে যেতে হয় তাকে। কোভিড মহামারি দেখা দিলে আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাহী আদেশে তাঁকে মুক্তি দিয়ে বাড়িতে থাকার সুযোগ করে দিলেও বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেয়নি। তখন বিএনপির অভিযোগ ছিল খালেদা জিয়াকে সরকার গৃহবন্দি রেখেছেন।  ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর মুক্তি পান খালেদা জিয়া। তারপরই চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে যান তিনি।

আরো পড়ুন  

×