ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১১ মাঘ ১৪৩১

রাশিয়ার সেই সতর্কবার্তাকে খাটো করে দেখেছিল আওয়ামী লীগ ও দলটির সভানেত্রী

প্রকাশিত: ২০:২৬, ২৪ জানুয়ারি ২০২৫; আপডেট: ২০:২৮, ২৪ জানুয়ারি ২০২৫

রাশিয়ার সেই সতর্কবার্তাকে খাটো করে দেখেছিল আওয়ামী লীগ ও দলটির সভানেত্রী

ছাত্রজনতার গণ অভ্যুত্থানে গত পাঁচ আগস্ট পতন হয় শেখ হাসিনা সরকারের এমন খবর সবারই জানা। তবে আওয়ামী লীগ সরকারের সাথে যে এমন কিছু ঘটতে পারে তা আগেই সতর্ক করেছিল রাশিয়া। কিন্তু মস্কোর এই সতর্ক বার্তাকে খাটো করে দেখেছিল ভারত এবং শেখ হাসিনা সরকার। আর তাতেই জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল করলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী। প্রশ্ন হচ্ছে, রাশিয়ার সতর্ক বার্তাকে কেন পাত্তা দেয়নি মোদি এবং শেখ হাসিনার সরকার? ওই সতর্কবার্তায় আর কী ই বা ছিল?

বাংলাদেশ নিয়ে ২০২৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর এক বিবৃতি দেয় রাশিয়া। প্রকাশিত ওই বিবৃতিতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা। জানান, ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বাংলাদেশে আরব বসন্তের মতো পরিস্থিতি ঘটাতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। ওই বিবৃতিতে শেখ হাসিনা সরকারকে পশ্চিমাদের কাছে অনাকাঙ্ক্ষিত উল্লেখ করে জাখারোভা বলেন, ১২ ও ১৩ ডিসেম্বর বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি জেলায় সরকার বিরোধীরা সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়, বাসে আগুন দেয় এবং পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এই ঘটনাগুলোর সঙ্গে ঢাকায় অবস্থিত পশ্চিমা কূটনৈতিক মিশনগুলোর উসকানিমূলক কার্যকলাপের সরাসরি যোগসূত্র রয়েছে। 

রুশ এই কূটনীতিক আরো বলেন, শেখ হাসিনা সরকারকে চাপে ফেলতে নিষেধাজ্ঞার মতো হাতিয়ারের শরণাপন্ন হতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া বাংলাদেশের জনগণের ভোটের ফলাফল যুক্তরাষ্ট্রের মনঃপূত না হলে আরব বসন্তের মতো পরিস্থিতি ঘটাতে পারে। তবে রাশিয়ার এই সতর্কবার্তা আমলে নেননি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এমনকি বাংলাদেশে বিশেষ নজর রাখা প্রতিবেশী ভারতও এ বিষয়ে সতর্ক প্রতিক্রিয়া দেখায়নি। এ বিষয়ে কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, শেখ হাসিনা সরকারের অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস এর একটি বড় কারণ ছিল।

সোভিয়েত অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ডক্টর শামসুদ্দিন আহমেদ জানান, রাশিয়ার বার্তাটি গুরুত্ব না পাওয়ার ফলে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ও কোটা বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মতো ইস্যুগুলো সমাধানে কোনো আলোচনা হয়নি। এসব ইস্যুতে কঠোর নীতির ফলে সরকার জনগণের আস্থা হারায়।

অন্যদিকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ডক্টর দেলোয়ার হোসেন বলেন, রূপপুর পারমানবিক প্রকল্প সহ রাশিয়ার সঙ্গে শেখ হাসিনার সরকারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকার কারণে রাশিয়ার বার্তাটি ছিল স্বার্থ নির্ভর। এমন পরিস্থিতিতে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বৈরিতার প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে।

যদিও রাশিয়ার পক্ষ থেকে বাংলাদেশের গণঅভ্যুত্থান নিয়ে বার্তা দেওয়া হয়েছিল। বিশ্লেষকদের মতে, সেটি ছিল অনেকাংশে কাকতালীয়।

রাশিয়ার এ বিবৃতিকে ক্লাসিক প্রোপাগান্ডা বলে অভিহিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন কিরবি। তবে ঢাকায় রুশ দূতাবাস এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানায়।

ভিডিও : https://youtu.be/kPRYb_Yypr0?si=fI9_zIb9AlzVce4i

ফুয়াদ

×