ছবি: সংগৃহীত
এক দফার আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচার হাসিনা সরকারকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করার ডাক দিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতারা ফেসবুকে সরব হয়ে উঠেছেন। বিশেষ করে, আন্দোলনের অন্যতম ঘোষক ও ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের একটি স্ট্যাটাস নেট দুনিয়ায় ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে।
মাত্র চার ঘণ্টার মধ্যে তার স্ট্যাটাসে পড়েছে ১ লক্ষ ৭ হাজারেরও বেশি রিঅ্যাকশন, ১৯ হাজারের বেশি মন্তব্য, এবং প্রায় ২৫ হাজার শেয়ার। এমন নজিরবিহীন প্রতিক্রিয়া দেখে এক দফা আন্দোলনের গুরুত্ব ও তার প্রভাব নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। নাহিদ ইসলামের পোস্টকে কেন্দ্র করে আন্দোলনের অন্যান্য নেতারাও নিজেদের মতামত প্রকাশ করছেন।
বিএনপির একজন সিনিয়র নেতার সাম্প্রতিক মন্তব্য নিয়ে ফেসবুকে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে তিনি লেখেন, বিএনপি নেতার আওয়ামী লীগের সঙ্গে কোনো দ্বন্দ্ব না থাকার বক্তব্য বাস্তব পরিস্থিতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তার বক্তব্য অনুযায়ী, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের রাজনীতিতে ফ্যাসিজম প্রতিষ্ঠা করেছে এবং গুম, খুন ও গণহত্যার মাধ্যমে দেশকে অরাজকতার শীর্ষে পৌঁছে দিয়েছে। এতসব অন্যায় ও যুলুমের দায় উপেক্ষা করে বিএনপি আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক ব্ল্যাঙ্ক চেক দেওয়ার সিদ্ধান্ত খুবই হতাশাজনক বলে মন্তব্য করেন তিনি।
হাসনাত আব্দুল্লাহ আরও বলেন, আওয়ামী লীগ বিগত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে সাধারণ মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে। এই কারণেই বিএনপি বারবার নির্বাচন বর্জন করতে বাধ্য হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশ পুনর্গঠনের সুযোগ এলেও বিএনপি তার সদ্ব্যবহার করেনি এবং ১/১১ সরকারের ফর্মূলায় আটকে থেকেছে। এমনকি তিনি দাবি করেন, গণ-অভ্যুত্থানের ফলাফল থেকে গঠিত সরকারের ম্যান্ডেট সাধারণ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত যে কোনো সরকারের চেয়ে শক্তিশালী ছিল। হাসনাত আরও উল্লেখ করেন, ছাত্র-জনতার সম্মিলনে নতুন একটি রাজনৈতিক দল গঠনের আভাস পাওয়ার পর বিএনপি এটিকে নিজেদের স্বার্থের বিরুদ্ধে হুমকি হিসেবে দেখছে। তার ভাষায়, বিএনপি আওয়ামী লীগের অবাধ কর্মকাণ্ডকে প্রশ্রয় দিলেও, ছাত্র-জনতার নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের উদ্যোগ ব্যাহত করার চেষ্টা করছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আবদুল হান্নান মাসউদ তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, তারা সেদিন ড. মোহাম্মদ ইউনুস যাতে প্রধান উপদেষ্টা না হতে পারেন, তার সর্বোচ্চ চেষ্টাও করেছিলেন। এই মন্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম নাহিদ ইসলামের স্ট্যাটাস প্রসঙ্গে লেখেন, নাহিদ ইসলাম এর আজকের পোস্টটা দিনে ৩ বার করে আগামী ৭ দিন পড়বেন। অবশ্যই পড়বেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মাহিন সরকার আরও সরাসরি প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি লেখেন, নাহিদ ইসলাম ভাই বিএনপির গণঅভ্যুত্থানের ফসল নস্যাৎ করার ঐতিহাসিক দায় নিয়ে বলবেন বলবেন করে আজ বলেই ফেললেন। ঐতিহাসিক দায় ক্যান্টমেন্টে রেখে যখন টকশোতে ১/১১'র গল্প ঝাড়েন তখন মজাই লাগে।
তাবিব