ছবি: সংগৃহীত।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিবর্তনের পর থেকে দেশটির রোগীদের ভারত সফরের সংখ্যা ব্যাপকভাবে কমে গেছে। গত বছর চিন্ময় ইস্যুতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরার কয়েকটি হাসপাতাল ঘোষণা করে যে তারা আর বাংলাদেশী রোগীদের চিকিৎসা দেবেন না। এর ফলস্বরূপ, বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসা রোগীর সংখ্যা ৭০ শতাংশেরও বেশি কমে গেছে। ভারতীয়রা মনে করেছিল, এই ঘোষণা দিয়ে তারা বাংলাদেশী রোগীদের একটা শিক্ষা দিতে পারবে।
কিন্তু বাস্তবতা ছিল ভিন্ন। এই পদক্ষেপের পর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ভারতীয় হাসপাতালগুলো, যেগুলোতে নিয়মিত বাংলাদেশী রোগীদের আনাগোনা ছিল। কলকাতা সহ অন্যান্য কিছু শহরে, যেখানে বাংলাদেশী রোগীরা প্রচুর চিকিৎসা সেবা নিতে আসতেন, সেখানে সেই ধারাবাহিকতা ভেঙে পড়েছে এবং চিকিৎসা খাতে একটি বড় ধরনের ধস নেমেছে।
এছাড়া, রোগী কমে যাওয়ার কারণে ভারতের মার্কেট এবং রেস্তোরাঁগুলোর উপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এ কারণে, একে একে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বেশ কিছু হাসপাতাল। ভারতের রুপির দামও ইতিহাসের সর্বনিম্ন স্তরে পৌঁছেছে, যা আরো উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ভারতের পর্যটন মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবছর প্রায় ২৫ লাখ বাংলাদেশী ভারতে যান এবং তাদের স্বাস্থ্য সেবার জন্য ব্যয় হয় প্রায় ৫০ মিলিয়ন ডলার। এই পরিমাণ অর্থ বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার আয় থেকে একটি বড় অংশ ছিল।
এমন পরিস্থিতির মধ্যে চীন বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। চীনের বিনিয়োগে বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলে একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়াও, চীন বাংলাদেশী রোগী পাঠানোর বিষয়েও আলোচনা করেছে।
এদিকে, তুরস্ক এবং অন্যান্য দেশও বাংলাদেশে বিশেষায়িত হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাবনা দিয়েছে, তবে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তে তা বাস্তবায়িত হয়নি। কারণ, এর ফলে ভারতে আসা রোগীর সংখ্যা আরও কমে যেত।
নুসরাত