ছবি: সংগৃহীত।
নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির পরিবর্তন মুসলিমপ্রধান দেশগুলোসহ বাংলাদেশি অভিবাসীদের জন্য নতুন সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশেষ করে মুসলমানদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার সম্ভাবনা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই নীতির বহুমুখী প্রভাব পড়বে বাংলাদেশসহ অন্যান্য মুসলিমপ্রধান দেশের অভিবাসীদের ওপর।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ১২ লাখ বাংলাদেশি অভিবাসী বসবাস করছেন, যাঁদের অধিকাংশই ক্ষুদ্র পেশায় জড়িত। নথিপত্রহীন এসব অভিবাসীরা চরম হুমকির মুখে পড়বেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। পাশাপাশি নতুন নীতিতে স্কুল, চার্চ বা জনসমাগমস্থলে অভিযান পরিচালনার কোনো বাধা থাকবে না বলে জানিয়েছেন ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, “আগামী চার বছরে অভিবাসীদের দুর্দশা আরও তীব্র আকার ধারণ করতে পারে।”
এদিকে, শিক্ষার্থীরাও এই নীতির প্রভাব এড়াতে পারবেন না। ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে যুক্তরাষ্ট্রে ১৭ হাজারের বেশি বাংলাদেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছেন, যা গত এক দশকে ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের পরিবর্তিত নীতিতে শিক্ষার্থীদের পরিবার এবং ভবিষ্যৎ নাগরিকত্ব নিয়েও শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির বলেন, “স্টুডেন্ট ভিসায় যাওয়া শিক্ষার্থীদের পরিবারের সদস্যরা ভিজিট ভিসায় গেলে সেখানকার সন্তানরা জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের সুযোগ পাবে না।”
শ্রমজীবী অভিবাসীদের ক্ষেত্রেও বড় ধরনের বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি অভিবাসীরা সাধারণত ছোটখাটো কাজের সঙ্গে জড়িত, যা রেমিট্যান্সের বড় উৎস। হুমায়ুন কবির আরও বলেন, “যাঁরা নথিপত্রহীন অভিবাসী, তাঁদের আয়ে রেমিট্যান্স প্রবাহ টিকে আছে। এই নীতি রেমিট্যান্সকেও হুমকির মুখে ফেলবে।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতির কড়াকড়ি শুধু বাংলাদেশি অভিবাসীদের জীবনযাপনকেই দুর্বিষহ করবে না, বরং বৈদেশিক মুদ্রা আয়েও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এর পাশাপাশি মুসলিমদের ওপর প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা আরোপের সম্ভাবনা সংকটকে আরও ঘনীভূত করতে পারে।
সায়মা ইসলাম