বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ছাত্ররা রাজনৈতিক দল গঠন করার পরও যদি সরকারে তাদের প্রতিনিধি থাকে তাহলে সরকার নিরপেক্ষ থাকতে পারবে না। তারা যদি সরকারে থেকেই নির্বাচন করেন, তাহলে তো রাজনৈতিক দলগুলো মেনে নেবে না বক্তব্যের জবাব দিয়েছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
বেসরকারি একটি টেলিভেশনের ফোন কলে প্রতিউত্তর দেন উপদেষ্টা আসিফ।ফোন কলের শুরুতেই আসিফ বলেন, বিএনপি মহাসচিব বলেছেন যে, ছাত্ররা যদি রাজনীতিতে যুক্ত হয় তাহলে সরকারে থাকাটা সুষ্ঠু নির্বাচনের ক্ষেত্রে একটি মন্তব্য তিনি করেছেন। এই ক্ষেত্রে আমাদেরও অবস্থানটা স্পষ্ট এই যে, কেউ যদি রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত হয়, সেক্ষেত্রে যেহেতু একটা বিশেষ পরিস্থিতিতে সরকার । তার নৈতিক জায়গা থেকে উচিত না, এটা আমি নিজেও মনে করি। তবে এক্ষেত্রে যদি যারা ছাত্র রাজনৈতিক দল খোলার কথা বলছেন, ঘোষণার দাবিতে ছাত্র আন্দোলন কিংবা নাগরিক কমিটির। যে তিনজন ছাত্র উপদেষ্টা আছেন, তারাও যদি এই প্রক্রিয়ার সাথে না থাকেন তাহলে তো সেক্ষেত্রে কোন বাধা নেই। কোন বাধা থাকার কথা না। কিন্তু যেটা তিনি বলেছেন যে, ছাত্রদের অংশগ্রহণ ছাড়া যে নিরপেক্ষ, সরকারের যে ধারণাটা তিনি দিতে চেয়েছেন, এটা তো মূলত আসলে ১/১১ সরকারের মত।
তিনি আরো বলেন, আমরা দেখেছি যে কিভাবে আওয়ামী লীগকে আট সালের নির্বাচনে ক্ষমতায় আনার জন্য পাটাতন তৈরি করেছে এবং বিএনপিও সেই সরকার নিয়ে এই সেইম অভিযোগটা আছে যে, এক এগারোর সরকার আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে আনার জন্য পাটাতন তৈরি করে দিয়েছে শেষ মুহূর্তে গিয়ে। তো আমরা চাই না কোনোভাবে আমরা একটা ফেয়ার সংস্কার কার্যক্রমের পরে একটি ফেয়ার ইলেকশন আয়োজন করাটাই এই সরকারের মূল উদ্দেশ্য। তবে একই সাথে যখন বিএনপির মহাসচিব এই কথাগুলো বলেন, সেক্ষেত্রে একটা বিষয় মনে রাখা উচিত যে, বিএনপিও নানা সময়ে বিভিন্ন সাংবিধানিক গুরুত্বপূর্ণ পদে রাষ্ট্রীয় পদে নিয়োগ কিংবা পদোন্নতির ব্যাপারে সরকারকে নানাভাবে আসলে তদবির করা কিংবা চাপ প্রয়োগ করা এবং পরিবর্তন করার সময় এক ধরনের চাপ প্রয়োগ করার মতো পরিবেশও তৈরি করেছেন।
সেক্ষেত্রে সরকারকেও কাজ করার স্বাধীনতাটা আসলে দেয়া প্রয়োজন। জনগণের কারও কারও কথা আমরা যখন শুনি, তাদের মধ্যে দেখি যে, অনেকেই মনে করছেন এটা বিএনপির সরকার। কেননা স্থানীয় পর্যায়ে মাঠ প্রশাসনে। যারা সরকারি কর্মকর্তারা দায়িত্বরত থাকেন তাদেরকে চাপ দিয়ে নানা ধরনের সুযোগ সুবিধা বিএনপি নিচ্ছে। সেই জায়গা থেকেই অভিযুক্ত জনগণের দিক থেকেও আছে। সরকার গঠনের আগেই বিএনপির মহাসচিব বলে যেটা আমরা পরবর্তীতে জানতে পেরেছি। পুলিশের আইজি নিয়োগ দিয়েছেন এবং বিএনপির মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক কে হচ্ছে অ্যাটর্নি জেনারেল নিয়োগ দিয়েছেন।
এছাড়াও আরও বিভিন্ন সাংবিধানিক পদে যখন বিএনপির লোকজনকে নিয়োগ দেয়ার, সরকারের কাছ থেকে তদবির করে এবং চাপ দিয়ে নিয়োগ দেয়ার মতো ঘটনা ঘটছে, সেটা তো আসলে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য একটা শঙ্কার বিষয় যে, একটা সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন কিভাবে সম্ভব হবে?
যদি একটা দলের প্রতিনিধিত্ব প্রশাসনে কিংবা যারা নির্বাচন আয়োজন করবে, নির্বাচন কমিশনে থাকে, তাহলে সেটা কিভাবে আসলে সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারে? এই শঙ্কটা আছে। এবং সরকারের দিক থেকে আমরা চাই একটা সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করতে। এবং সেক্ষেত্রে এখনও আমরা এটাই চাই যে, সকল রাজনৈতিক দলগুলো এক্ষেত্রে সরকারকে সহযোগিতা করবে এই গণ অভ্যুত্থানের।এত এত মানুষের জীবনের বিনিময়ে যে সংস্কারের মাধ্যমে একটি নতুন বাংলাদেশ আমরা গড়তে চাচ্ছি। বাংলাদেশের মানুষ চাচ্ছে সেখানে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে ঐকমত্য একটা সুন্দর পরিবেশ। সুন্দর রাজনৈতিক পরিবেশের মধ্য দিয়ে আমরা একটা সুন্দর নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই এবং সেক্ষেত্রে সকল রাজনৈতিক দলের সহযোগিতা চাই।
ভিডিও: https://youtu.be/UpH4TvatsXM?si=YWa01-Kt-Wp2e3PB
ফুয়াদ