ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১

হাসিনার গোপন কারাগারে বন্দি থাকত শিশুরাও, মিলত না মায়ের দুধ

প্রকাশিত: ০২:০৬, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫

হাসিনার গোপন কারাগারে বন্দি থাকত শিশুরাও, মিলত না মায়ের দুধ

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে গোপন কারাগার বা তথাকথিত "আয়নাঘরে" শতাধিক মানুষকে আটকে রাখার ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিশনের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে কয়েকজন শিশু ও তাদের মায়েদের অমানবিক পরিস্থিতিতে রাখা হয়েছিল। এসব তথ্য প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

 

গত মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) তাদের প্রাথমিক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ছয়জন শিশু তাদের মায়েদের সঙ্গে গোপন কারাগারে দীর্ঘ সময় কাটিয়েছে। আটক নারীদের ওপর নির্যাতনের অংশ হিসেবে তাদের সন্তানদের দুধ পান করানোর সুযোগ পর্যন্ত দেওয়া হতো না। তদন্ত কমিশন বলছে, এসব শিশুদের নির্যাতনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।

 

কমিশনের প্রাথমিক প্রতিবেদনে জানা যায়, কারাগারে থাকা মায়েদের সঙ্গে শিশুদের অমানবিক আচরণের নজির রয়েছে। একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, তাকে ছোটবেলায় মায়ের সঙ্গে বন্দি রাখা হয়েছিল। সেখানে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা তাদের ওপর মানসিক চাপ সৃষ্টি করতেন।

কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, এই ধরনের ঘটনা বিচ্ছিন্ন নয়। ২০২৩ সাল পর্যন্তও এ ধরনের গুম এবং নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। একটি ঘটনায় গর্ভবতী নারীকে তার ছোট দুটি সন্তানসহ আটক করে শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়।

 

ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। ২০২৪ সালের আগস্টে ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতা হারানোর পর শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।

কমিশনের প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনী প্রায় ২০০ বাংলাদেশিকে অপহরণ করেছে, যারা এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। ভুক্তভোগী পরিবারগুলো মানসিক আঘাতের পাশাপাশি আর্থিক এবং আইনি সংকটে পড়েছে।

 

কমিটির সদস্য সাজ্জাদ হোসেন বলেন, অনেক ভুক্তভোগী সরাসরি তাদের নির্যাতনকারীদের চিহ্নিত করতে না পারলেও তাদের জবানবন্দি থেকে জড়িত বাহিনীগুলোকে চিহ্নিত করা সম্ভব হবে। কমিশন জোর দিয়েছে, ভুক্তভোগীদের কণ্ঠস্বর শোনার মাধ্যমে নির্যাতন এবং গুমের ঘটনা তদন্ত এগিয়ে নেওয়া হবে।

তাবিব

×