ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় গাছের ডালে পাওয়া লাশ

মাদকাসক্ত আবু সালেহের করুণ পরিণতি

মেডিকেল রিপোর্টার

প্রকাশিত: ১৯:০১, ২২ জানুয়ারি ২০২৫

মাদকাসক্ত আবু সালেহের করুণ পরিণতি

ছবিঃ সংগৃহীত

বাজে বন্ধুদের সাথে মিশে আসক্ত হন মাদকে। আর মাদকের টাকা জোগাড় করতে নিজ পরিবার থেকেও করতেন চুরি। প্রায় তিন বছর যাবত ঘর ছেড়ে শুরু করেছিলেন ভবঘুরে জীবন। বলছিলাম আবু সালেহের (৪৫) কথা। বুধবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার গাছের চূড়া থেকে যার লাশ উদ্ধার হয়।

বুধবার বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে তার মরদেহের পরিচয় সনাক্ত করেন তারই ছোট দুই ভাই আবু হায়দার ছোটন ও মোহাম্মদ আলী।

৪ ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় আবু সালেহ বেশ কিছু বছর টেইলার্সে কাজ করতেন। তবে বাজে বন্ধুদের সাথে আড্ডায় পড়ে আনুমানিক ২০ বছর আগে জড়ান নেশায়। গাজা, ইয়াবা থেকে শুরু করে প্যাথেডিন নিতেন বন্ধুদের সাথে মিশে। নেশায় আসক্ত এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে, মানসিক ভারসাম্যও হারিয়ে ফেলেন।

বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল মর্গে কথা হয় তার ছোট ভাই মোহাম্মদ আলীর সাথে। তিনি জানান, তাদের গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জের সদর উপজেলার নগরকসবা গ্রামে। তার বাবার নাম আব্দুর রব। তবে তারা পরিবার নিয়ে বহুবছর ধরে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ কালীগঞ্জের নয়াবাড়ি এলাকায় থাকেন। আবু সালেহ অবিবাহিত। এলাকাতে একটি টেইলার্সে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। সেখান থেকেই কিছু বাজে বন্ধু-বান্ধবের আড্ডায় পড়ে জড়ান মাদকে। প্রথম প্রথম তাকে সবাই বুঝিয়ে মাদক থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করেন। তবে দিন দিন তার আসক্তি বাড়তে থাকে। সবশেষ গত তিন বছর যাবৎ টেইলার্সের কাজ ছেড়ে দেন। বাড়ি থেকেও চলে আসেন। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় রাস্তাঘাটে থাকা শুরু করেন। মাঝেমধ্যে তিনি বাড়িতে যেতেন। সেখানে দু-একদিন থেকে মা-বাবা, ভাইদের কাছ থেকে কিছু টাকা-পয়সা চেয়ে নিয়ে আবার হুট করেই চলে আসতেন। তার সাথে কোন যোগাযোগ করা সম্ভব হত না। সবশেষ গত ৫ দিন আগেও সালেহ বাড়িতে গিয়েছিল। তখন মায়ের কাছ থেকে ওষুধ কেনার কথা বলে ১ হাজার টাকা নিয়ে আসেন। এরপর তার সাথে আর কারো যোগাযোগ হয়নি। সবশেষ বুধবার দুপুরে শাহবাগ থানা পুলিশের মাধ্যমে তার লাশ উদ্ধার হওয়ার খবর শুনতে পাই তারা।

আবু সালেহের আরেক ছোট ভাই আবু হায়দার ছোটন জানান, মাদকাসক্ত হওয়ার পর গত ৭-৮ বছর আগে একবার নিজেদের বাড়িতেই আগুন লাগিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। পরবর্তীতে প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় সেই আগুন নেভানো হয়। এরপর গত ৫ বছর আগে একবার কেরানীগঞ্জের ওই এলাকার একটি বড় গাছে ওঠে গলায় ফাঁস দেয়ার চেষ্টা করছিলেন। তখন স্থানীয়রা দেখে তাকে গাছ থেকে নিচে নামান। 

তিনি বলেন, আবু সালেহ মাঝে মধ্যেই উদ্ভট কথাবার্তা বলতেন। বিশেষ করে যারা মারা গেছেন সেই সব মৃত ব্যক্তিরা তাকে ডাকাডাকি করে বলেও মাঝেমধ্যেই বলতেন তাদের।

জাফরান

×