ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১

ফের তিস্তা প্রকল্প যাচ্ছে চীনের কাছে,

ভারতের প্রতি বিশেষ সংকেত, চীন সফরে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

প্রকাশিত: ২০:৫৫, ২১ জানুয়ারি ২০২৫; আপডেট: ২১:০৭, ২১ জানুয়ারি ২০২৫

ভারতের প্রতি বিশেষ সংকেত, চীন সফরে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

ছবি : সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেবার পর বাংলাদেশের কূটনৈতিক আচরণের নানামুখী পরিবর্তনের আলোচনার মধ্যেই চীনে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফর। আর এই আলোচনাকে আরো উসকে দিয়েছে তিস্তা ইস্যু।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, ফের নবায়ন হতে চলেছে তিস্তা নিয়ে ঢাকা বেইজিং এর বোঝাপড়া।

চীন সফরের আগে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেছিলেন, ‘এটার যে আপনার গাইডিং যে এমওইউটা সেটার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, সেটা আমরা রিনিউ করবো, এটা হলো প্রথম কাজ। তারপরে স্পেসিফিক প্রজেক্টের ব্যাপারে তো আরো অনেক ডিটেইলস আলোচনা লাগবে। তবে বাংলাদেশ অবশ্যই তার নিজের স্বার্থে সিদ্ধান্ত নেবে, এটা আপনারা নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন।’

 

উত্তরের জনপদের জীবনমান উন্নয়নের যে প্রকল্পে বিরোধিতার সুর দেখিয়েছিল ভারত, চীনের সাথে সেই প্রকল্পের অগ্রগতিকে কিভাবে দেখছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা।

 

এ ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তজার্তিক সর্ম্পক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ওবায়দুুল হক বলেন, ‘এ সফর তাৎপর্যপূর্ণ অনেকগুলো কারণে, একটা হলো যে ভারত আমাদের খুবই, মানে একটা ইম্পর্টেন্ট প্রতিবেশী, গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী। এবং আমাদের এখান থেকে সবসময় আমরা সচরাচর দেখেছি যে, ভারতে প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফরটি করা হয়। কিন্তু আমার মনে হয়, এটা ভারতকে একটা মেসেজও দেওয়া,  যে আমরা এক ধরনের যেটাকে বলে ফরেন পলিসি, অটোনমি বা সার্বভৌমত্ব পররাষ্ট্র নীতি প্রণয়নের, এবং সেটা এক্সিকিউট করার, সেটি আমরা এক্সারসাইজ করব।’

 

আন্তজার্তিক সর্ম্পক বিশ্লেষক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘তিস্তার ব্যাপারেও আমার মনে হয় বাংলাদেশ হয়তো এবার বড় আকারেই সিদ্ধান্ত নিতে পারে। কারণ আমরা শেষ সময় যেটা দেখলাম বিগত সরকার একেবারে শেষের দিকে এসে ভারতও যেই পরিকল্পনাটা, চীন বলেছে তারা সহায়তা দিতে রাজি আছে, সে ব্যাপারে তারাও বুঝতে পেরেছে, যে সমাধান ওই শেয়ারিং এর হবে না বরং বাংলাদেশের যে পরিকল্পনাটা মনে রাখতে হবে, ওটা কিন্তু চীনের পরিকল্পনাটা বাংলাদেশের পরিকল্পনা। চীন বলেছে যে, হ্যাঁ, তারা এর মধ্যে আসতে পারে। তো সেই জায়গায় আমার মনে হয়তো একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।’

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আমন্ত্রণে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার এই সফরে বিশেষ গুরুত্ব পাবে রোহিঙ্গা ইস্যু। যদিও মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতে এখনো পর্যন্ত অনিশ্চয়তায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন।

তবুও এই বিশ্লেষক মনে করেন, সফরে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি আসতে পারে।

আন্তজার্তিক সর্ম্পক বিশ্লেষক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ আরো বলেন, ‘অন্তবর্তীকালীন সরকার এই জিনিসটা জাতিসংঘে উত্থাপন করেছেন এবং একটা আন্তর্জাতিক কনফারেন্সও হতে যাচ্ছে। স্বাভাবিকভাবে সেই জায়গায় জানতে চাইবে চীন যে এই পরিকল্পনাটা কি? কারণ সেই জায়গায় আমার মনে হয়, যদি নতুনত্ব কিছু আসে তাহলে একটা সম্ভাবনা হয়তো দেখা দিতে পারে।’

এছাড়াও এই সফরে ব্যবসা-বাণিজ্য, ঋণের সুদহার কমানো, সামরিক সহায়তা, স্বাস্থ্য খাতে সহায়তার পাশাপাশি, সম্পর্কের পাঁচ দশক পূর্তিতে আগামী মার্চে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর ইউনুসের বেইজিং সফর নিয়েও আলোচনা হবে।

মো. মহিউদ্দিন

×