ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১

যেতে হবে না ভারতে, হাসপাতাল করবে চীন ও তুরস্ক

প্রকাশিত: ১৯:৩০, ২১ জানুয়ারি ২০২৫; আপডেট: ১৯:৩৮, ২১ জানুয়ারি ২০২৫

যেতে হবে না ভারতে, হাসপাতাল করবে চীন ও তুরস্ক

ছবি : সংগৃহীত

দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকেই বাংলাদেশী রোগীদের আনাগোনা উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে প্রতিবেশী দেশ ভারতে। গত বছর চিন্ময় ইস্যুকে কেন্দ্র করে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরার কয়েকটি হাসপাতাল এবং কয়েকজন চিকিৎসক বাংলাদেশী রোগী দেখবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন। এরপর বাংলাদেশ থেকে রোগী আসা প্রায় ৭০ শতাংশ কমে যায়। এবার বোধহয় বাংলাদেশীদের চাপে ফেলতে পারবে এমনটাই প্রত্যাশা ছিল ভারতীয়দের। কিন্তু বিধি বাম উল্টো, যেসব হাসপাতাল বাংলাদেশী রোগীদের উপরে অনেকটাই নির্ভরশীল ছিল, তারাই খেল সবচেয়ে বড় ধাক্কা।

কলকাতাসহ ভারতের অন্যান্য শহরে হাসপাতাল ব্যবসায় ব্যাপক ধ্বস নেমেছে। ভারতীয়রা বাংলাদেশীদের বিপাকে ফেলার ছক কষতে যেয়ে নিজেরাই যে বিপাকে পড়বেন এমনটা হয়তো তারা বুঝতে পারেননি। হাসপাতালগুলো থেকে শুরু করে বাংলাদেশী পর্যটক প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমে আসায়, আরো বিপাকে পড়েছে পশ্চিমবঙ্গের হোটেল, রেস্তুরাগুলো।

আর রোগীর অভাবে প্রায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ভারতের একের পর এক হাসপাতাল। এছাড়াও ইতিহাসের সর্বনিম্ন পর্যায়ে পড়েছে ভারতীয় রুপির দাম। ভারতের পর্যটন মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে প্রায় ২৫ লাখ রোগী চিকিৎসার জন্য ভারতে যায়। এতে ভারতের স্বাস্থ্য সেবা নিতে তাদের বছরে প্রায় ৫০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় হয়।

 

এমন পরিস্থিতিতে চীন বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে বড় ধরনের বিনিয়োগ করতে চায়। চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াওয়েন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মোহাম্মদ তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাতে ঢাকায় বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মাণে এর সহায়তা এবং চীনের রোগী পাঠানো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তাছাড়া চীনের সহযোগিতায় ঢাকার পূর্বাচলে একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মাণের প্রস্তাবনা রয়েছে যার জমিসহ অন্যান্য সুবিধা দিতে বাংলাদেশ সম্মতি জানিয়েছে।

 

মন্ত্রণালয় জানায়, চীনে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফরে বাংলাদেশী নাগরিকদের উন্নতমানের চিকিৎসার জন্য চীনের কুনবিং এ তিন থেকে চারটি অত্যাধুনিক হাসপাতাল নির্ধারণ করে দেয়ার অনুরোধ জানাবে ঢাকা। এর আগেও চীন, তুরস্ক ও সৌদি আরবের কাছ থেকে আন্তর্জাতিক মানের আলাদাভাবে হাসপাতাল তৈরির প্রস্তাব এসেছিল করোনাকালে। সে সময় তিন দেশই তাদের প্রস্তাবে বলেছে, বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর যত মানুষ উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যান, তাদের কথা মাথায় রেখেই এদেশে আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতাল তৈরির আগ্রহ তাদের।

 

সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ ও থাইল্যান্ডের বামরুদগ্রাত হাসপাতালের আদলে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতাল তৈরি করতে চায় এই তিন দেশ। তবে শেখ হাসিনা সরকার এ প্রস্তাবে রাজি হয়নি এর কারণ হাসিনার বন্ধু মোদির দেশ ভারতের রোগী যাতায়াত কমে যাবে। বাংলাদেশী রোগীদের ভারত নির্ভরশীলতা কমে যাওয়ার ভয়ে পলাতক হাসিনা সরকার তখন রাজি হয়নি। এদিকে প্রতিবছর প্রায় ২৫ লাখ বাংলাদেশী ভারতে চিকিৎসার জন্য যায় আর প্রায় ৫০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় হয়। এতে সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে ভারত আর আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতাল তৈরি হলে ভারতের ওপর থেকে চিকিৎসাখাতে একক নির্ভরশীলতা কমে যাবে বাংলাদেশীদের।

মো. মহিউদ্দিন

×