ছবিঃ সংগৃহীত
ডোনাল্ড ট্রাম্প ৪৭তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পরেই দেশের অভিবাসন নীতিতে বড় পরিবর্তন আনলেন। তাঁর প্রথম নির্বাহী আদেশে তিনি দীর্ঘদিনের জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের নীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, যা এখন আইনি লড়াইয়ের মুখে পড়তে চলেছে।
মার্কিন সংবিধানের ১৪তম সংশোধনীতে স্পষ্টভাবে বলা আছে: "মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী বা এখানে নাগরিকত্ব লাভকারী এবং এখানকার আইনের অধীন ব্যক্তিরা যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের বসবাসকৃত রাজ্যের নাগরিক।" কিন্তু ট্রাম্পের এই আদেশের মাধ্যমে বলা হয়েছে, অবৈধ অভিবাসীদের সন্তানরা আর স্বয়ংক্রিয়ভাবে নাগরিকত্ব পাবে না।
কেন এই সিদ্ধান্ত?
ট্রাম্প প্রশাসন মনে করে, জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব "অযৌক্তিক", এবং এটি বন্ধ করা হলে অবৈধ অভিবাসন রোধ হবে। ট্রাম্প বলেছেন, "১৪তম সংশোধনী কখনোই এমনভাবে ব্যাখ্যা করা হয়নি যে, যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে জন্মগ্রহণকারী প্রত্যেকেই নাগরিকত্ব লাভ করবে।"
তবে সমালোচকরা মনে করছেন, এই সিদ্ধান্ত আরও অনেক সম্প্রদায়কে কোণঠাসা করবে এবং অভিবাসী পরিবারগুলোর মধ্যে অনিশ্চয়তা বাড়াবে। স্কুল, কর্মক্ষেত্র, এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ের ওপর এর ব্যাপক প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশিদের ওপর কী প্রভাব পড়বে?
এই নীতির সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়বে সেইসব বাংলাদেশি পরিবারের ওপর যারা জন্ম পর্যটনের মাধ্যমে সন্তানের মার্কিন নাগরিকত্ব পেতে চাইতেন। "জন্ম পর্যটন" বলতে বোঝায়, গর্ভবতী মায়েরা সন্তান প্রসবের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যান, যাতে তাদের সন্তান নাগরিকত্ব পায়। নতুন নীতির ফলে এই চর্চা বন্ধ হবে। এই নীতির প্রভাবে যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া বাংলাদেশি শিশুদের স্বয়ংক্রিয় নাগরিকত্ব পাওয়ার পথ বন্ধ হয়ে যাবে।
আইনি চ্যালেঞ্জ
ট্রাম্পের আদেশ মানবাধিকার লঙ্ঘন এ অভিযোগ তুলে ইতিমধ্যেই আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন (ACLU) এর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। তাদের মতে, ১৪তম সংশোধনীতে জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের বিষয়টি স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে।
ACLU-এর একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "এই নির্বাহী আদেশের ফলে ব্যাপকভাবে পরিবার বিচ্ছিন্নকরণ, গণবহিষ্কার, এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের আশঙ্কা রয়েছে।"
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই নীতির ভবিষ্যৎ আইনি লড়াইয়ের ওপর নির্ভর করবে। মার্কিন সংবিধানের ন্যায়বিচার ও সাম্যের মূলনীতি রক্ষায় আইনজীবী, আইনপ্রণেতা ও আদালতের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।
মারিয়া