ছবি: সংগৃহীত
দেশের নাম পরিবর্তনের প্রস্তাবকে "অপ্রয়োজনীয় এবং বিতর্কিত" বলে অভিহিত করেছেন অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম।
তিনি বলেন, "প্রজাতন্ত্রের ধারণা জনগণের শাসনাধিকার প্রতিষ্ঠার সঙ্গে জড়িত। 'প্রজা' শব্দের কোনো নেতিবাচক অর্থ নেই; বরং এটি জনগণের শাসকের ভূমিকা নির্দেশ করে। ফলে ‘পিপলস রিপাবলিক অফ বাংলাদেশ’ নাম বদলানোর কোনো যৌক্তিকতা নেই।"
তিনি আরো বলেন, সংবিধানের মূলনীতি, বিশেষ করে ধর্মনিরপেক্ষতা, সমাজতন্ত্র, এবং জাতীয়তাবাদ, দেশের স্বাধীনতার মূল ভিত্তি।
ধর্মনিরপেক্ষতার প্রসঙ্গে তিনি ব্যাখ্যা করেন, "ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়, বরং রাষ্ট্র পরিচালনায় ধর্মকে কোনো প্রতিবন্ধকতা হিসেবে দাঁড় করানো হবে না।"
জাতীয়তাবাদ প্রসঙ্গে অ্যাডভোকেট করিম বলেন, "আমরা 'বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ' ধারণা সমর্থন করি, কারণ এটি আমাদের ভূখণ্ডের পরিচয়কে তুলে ধরে।"
অধিকার সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি বলেন, "খাদ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা এবং বাসস্থান সংবিধানের মূলনীতির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। তবে এগুলোকে মৌলিক অধিকার হিসেবে সংযোজন করা বাস্তবায়নযোগ্য নয়, কারণ এটি দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।"
উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষ নিয়ে নতুন প্রস্তাবগুলোকেও তিনি অপ্রয়োজনীয় বলে মন্তব্য করেন। "উচ্চকক্ষের কার্যক্রম স্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত নয়, এবং এটি ব্যয়বহুলও হবে। একইভাবে, নারী কোটা বাড়ানো বর্তমান প্রেক্ষাপটে বৈষম্যের সৃষ্টি করতে পারে," বলেন তিনি।
সংবিধানের সংস্কার বিষয়ে তিনি বলেন, "রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করতে না পারলে ভবিষ্যতে স্বৈরাচারী শাসনের ঝুঁকি থেকে যাবে।"
তিনি আরও বলেন, "অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যবস্থা অতীতে সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করেছে। সেই কাঠামো পুনরায় ফিরিয়ে আনা উচিত, নতুন পরীক্ষার কোনো প্রয়োজন নেই।"
সংবিধানের উপর ভিত্তি করে বিচার বিভাগ ও উচ্চ আদালত স্থানান্তরের প্রস্তাব সম্পর্কেও তিনি সতর্ক করেন, উল্লেখ করে বলেন, "এই প্রস্তাবগুলো অতীতের বিচারিক রায়ের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।"
তিনি সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি ভারসাম্যপূর্ণ এবং স্বৈরাচার-মুক্ত কাঠামো নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন।
ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/IMxqVM1-AD8?si=tFyS56eqvd7NTa7L
এম.কে.