ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ৭ মাঘ ১৪৩১

ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ, আওয়ামী সমর্থকদের খুশির কারণ কী?

প্রকাশিত: ০০:০০, ২১ জানুয়ারি ২০২৫; আপডেট: ০০:০৯, ২১ জানুয়ারি ২০২৫

ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ,  আওয়ামী সমর্থকদের খুশির কারণ কী?

ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আজ দ্বিতীয় মেয়াদে শপথ নিয়েছেন। তার শপথ গ্রহণের খবরে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনেও নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। বিশেষ করে সাবেক ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে এটি নিয়ে এক ধরনের উচ্ছ্বাস দেখা যাচ্ছে।

 

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মনে করছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের নীতিমালায় বাংলাদেশ প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসতে পারে। বিশেষত, ট্রাম্প প্রশাসন অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের মতো ব্যক্তিদের প্রতি যে সমর্থন দেবে না, সে ধারণা থেকেই উচ্ছ্বাস দেখা যাচ্ছে দলটির মধ্যে।

আওয়ামী লীগের একজন শীর্ষ নেতা মন্তব্য করেছেন, বাইডেন প্রশাসন আমাদের সরকারের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করেছে। র‍্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং ভিসা নীতির মতো পদক্ষেপ আমাদের জন্য কঠিন পরিস্থিতি তৈরি করেছিল। ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে এ ধরনের হস্তক্ষেপ কম হবে বলে আমরা আশা করি।

 

 

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মুজিবুর রহমান বলছেন যুক্তরাষ্ট্র ইস্যুটি বাংলাদেশে রাজনৈতিক কারণে গুরুত্বপূর্ণ। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশ হুটহাট সুনির্দিষ্ট কোন দেশের বিষয়ে নীতি পরিবর্তন করে বলে তিনি মনে করেন না।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবকে অস্বীকার করার কিছু নেই এবং সে কারণেই বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোও এটিকে ব্যবহার করে অনেক সময় সুবিধা নিতে চায়। তারা জনগণের মনে একটা ধারণা দিতে চায় যে শক্তিশালী দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রচ্ছন্ন সমর্থন তাদের দিকে আছে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে মার্কিন সমর্থন মনস্তাত্ত্বিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। এ কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের যে কোন পরিবর্তন বা ঘটনায় এদেশেও কোন পক্ষ উজ্জীবিত হয় আবার কোন পক্ষ হতাশ বোধ করে। এবারেও তাই হচ্ছ বলে জানান  তিনি।

 

 

বাইডেন প্রশাসনের সময় বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের সক্রিয় ভূমিকা নিয়ে আওয়ামী লীগ বারবার সমালোচনা করেছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্পষ্টতই বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র আমাকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না।

বাইডেন প্রশাসন ডেমোক্র্যাটিক মূল্যবোধ, মানবাধিকার এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে জোর দিলেও ট্রাম্প প্রশাসন বরাবরই কম হস্তক্ষেপের পক্ষে ছিল। আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করছেন, ট্রাম্প প্রশাসন ক্ষমতায় আসার ফলে ইউনূসসহ বাইডেনের সমর্থন পাওয়া গোষ্ঠীগুলোর ভূমিকা সীমিত হতে পারে।

 

তবে সাবেক কূটনীতিকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্কের মূল ভিত্তি রাজনৈতিক নয়, বরং অর্থনৈতিক এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা। এক সাবেক রাষ্ট্রদূত বলেন, "যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক নীতিতে বড় পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। তারা বাংলাদেশের স্থিতিশীল উন্নয়ন এবং গণতান্ত্রিক অগ্রগতিকে সমর্থন করে।"

ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতিতে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে কতটুকু পরিবর্তন হবে তা সময়ই বলে দেবে। তবে বাংলাদেশে এ ঘটনাটি রাজনৈতিকভাবে যেভাবে আলোচিত হচ্ছে, তা দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির উপর মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব ফেলতে পারে।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

তাবিব

×