কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেছেন, দেশ থেকে সারের সংকট চিরতরে জাদুঘরে পাঠানো হবে। এজন্য দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সারের মজুদ সক্ষমতা বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। সারের মজুদাগার নির্মাণ করা ছাড়াও সম্ভাব্য বিকল্প স্থানে মজুদাগার তৈরি করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
এজন্য বন্ধ ঘোষণা করা বা পরিত্যাক্ত পাট কারখানাগুলোতে সারের মজুদাগার করা হবে। এর মাধ্যমে বৈশ্বিক বাজার থেকে স্বল্প দামে অফ সিজনে সার কিনে আনা সম্ভব হবে। এতে বছরে দেড় থেকে দুই হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করা সম্ভব হবে।
সোমবার (২০শে জানুয়ারি) রাজধানীর প্রেস ইন্সটিটিউ বাংলাদেশ (পিআইবি) আয়োজিত বাংলাদেশ কৃষি সাংবাদিক ফোরামের (বিএজেএফ) সদস্যদের জন্য কৃষি সাংবাদিকতা বিষয়ক প্রশিক্ষণের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
দু’দিনব্যাপি এই প্রশিক্ষণ কর্মশালায় দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের ৫০ জন সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেন। সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জিন বিজ্ঞানি ড. আবেদ চৌধুরি ও বিএজেএফ সাধারণ সম্পাদক সাহানোয়ার সাইদ শাহীন। সার্বিক সমন্বয়ে ছিলেন বিএজেএফ সাংগঠনিক সম্পাদক আবু খালিদ। সঞ্চালনায় ছিলেন পিআইবির প্রশিক্ষক শাহ আলম সৈকত।
কৃষি সচিব জানান, বিজেএমসির অধীন বন্ধ থাকা পাটকলগুলোকে ন্যায্য দামে লিজ নিয়ে সারের গুদাম তৈরির প্রাথমিক আলোচনা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। খুব দ্রুতই এটি বাস্তবায়ন হতে পারে।
কৃষি সচিব বলেন, সারের মজুদ সক্ষমতা বাড়াতে মজুদাগার নির্মাণের প্রকল্প চলমান রয়েছে। তবে সামনের দিনে কৃষি খাতে প্রকল্প খাতে এক টাকাও বাড়াতে চাই না। অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প বন্ধ করা এবং প্রয়োজনীয় প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ বাড়ানোর মাধ্যমে ভারসাম্য আনা হবে। এখন দেশে সার নাই এই কথা কেউ বলতে পারবে না। দামের কিছুটা তারতম্য হচ্ছে, সেটিও ঠিক করা হবে। কৃষককের স্বার্থ সর্বোচ্চ সুরক্ষা করা হবে।
অপ্রয়োজনীয় ধানের জাত উদ্ভাবন থামানো হচ্ছে জানিয়ে কৃষি সচিব বলেন, বীজ উদ্ভাবনের চেয়ে মাঠে যেসব জনপ্রিয় বীজ রয়েছে সেগুলোর উৎপাদন বাড়াতে হবে। যেসব বীজ কৃষককে লাভ দিচ্ছে সেগুলো কৃষকের কাছে পৌঁছানোর জন্য সংশ্লিষ্ট গবেষণা প্রতিষ্ঠানের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যেসব জাত মাঠে কাজ করে না সেগুলো তুলে নেওয়া হবে। শুধু শুধু জাতের সংখ্যা বাড়িয়ে কোন লাভ নেই।
রবিবার (১৯শে জানুয়ারি) দুইদিনব্যাপী এ প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। এক ঘণ্টার আলোচনা ও প্রশ্নোত্তরে অংশ নেন তিনি। এদিন পিআইবির মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএজেএফ সভাপতি গোলাম ইফতেখার মাহমুদ।
রাজধানীর পিআইবির সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত এ প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে খাদ্য ও কৃষি সাংবাদিকতায় বৈশ্বিক পরিস্থিতি ও সরকারের নীতি কৌশল, কৃষি সাংবাদিকতায় তথ্যের চ্যালেঞ্জ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কৃষি, কৃষি সাংবাদিকতায় ডিজিটাল মিডিয়া, কৃষি ও পরিবেশ সাংবাদিকতায় বৈশ্বিক ও বাংলাদেশ পরিপ্রেক্ষিত, কৃষি সাংবাদিকতায় ফ্যাক্ট চেকিং, কৃষি, খাদ্য ও জলবায়ু বিষয়ে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা বিষয়ের ওপর দুইদিনের এ প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
আশিক