ছবি : সংগৃহীত
ময়মনসিংহে একটি 'বিষাক্ত রক্ত' সিন্ডিকেটের দুজন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এই সিন্ডিকেটটি মানুষের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে রক্ত বিক্রি করছিল। অভিযোগ রয়েছে, তারা স্যালাইন মিশিয়ে এক ব্যাগ রক্তকে তিন বা চার ব্যাগে পরিণত করতো এবং ভুয়া ক্রস মেচিং রিপোর্ট বানিয়ে তা রোগীদের শরীরে পুশ করতো। এর ফলে, রোগীরা সুস্থ হওয়ার বদলে মৃত্যু ঝুঁকিতে পড়েছিল।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, জেলার তারাকান্দা উপজেলার আবদুর রহমান খানের ছেলে মো. নাঈম খান পাঠান (৩৮) এবং নগরীর আকুয়া মড়ল বাড়ির তুষার চন্দ্র মিন্টু চন্দ্র দের ছেলে মো. আব্দুল্লাহ (২২)। তাদের বিরুদ্ধে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংক থেকে রক্ত চুরির অভিযোগ রয়েছে। শনিবার বিকালে এক ব্যাগ রক্ত চুরি করার সময় তারা হাতেনাতে ধরা পড়েন। পরে পুলিশে খবর দিলে, তাদের হেফাজতে নেওয়া হয়।
ময়মনসিংহ কোতোয়ালী মডেল থানায় সংবাদ সম্মেলন করে পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার হওয়া দুজন রক্ত সংগ্রহ করে তা বিভিন্ন ক্লিনিকে বিক্রি করতো। তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এটি একটি বৃহৎ সিন্ডিকেট, যা নগরের বিভিন্ন ক্লিনিক ও হাসপাতালের মাধ্যমে ক্ষতি করছে। এমনকি তারা মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের রক্ত সংগ্রহ করে এবং সরকার অনুমোদিত ব্লাড ব্যাংক থেকে রক্ত সংগ্রহ না করে, ভুয়া ব্লাড ব্যাংক ব্যবহার করে বিক্রি করতো।
ওসি মো. শফিকুল ইসলাম খান জানান, এক ব্যাগ রক্তে স্যালাইন মিশিয়ে তারা তিন বা চার ব্যাগ রক্ত তৈরি করতো, যা রোগীদের শরীরে প্রবেশ করালে মারাত্মক পরিণতি হতে পারে। এই চক্রটি বন্ধ না করা হলে আরো অনেক জীবন ঝুঁকিতে পড়বে।
ময়মনসিংহের সিভিল সার্জন ডা. ফয়সল আহমেদ বলেছেন, এই সিন্ডিকেটের কার্যক্রম সম্পর্কে তারা জানতেন না। তিনি বলেন, "অপরিচিত উৎস থেকে রক্ত সংগ্রহ করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ, কারণ এতে বিভিন্ন মরণঘাতী রোগ যেমন এইডস এবং হেপাটাইটিস হতে পারে।" তিনি আরও বলেন, এই ধরনের সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মোহাম্মদ মাইনউদ্দিন খান জানান, রক্ত নেওয়ার জন্য রোগীদের কাছ থেকে ২২০০ টাকা নেওয়া হলেও, রক্ত দিচ্ছিল না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তৎপরতার পর, এই সিন্ডিকেটের সদস্যরা ধরা পড়ে।
এই ঘটনায়, সংশ্লিষ্ট সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে, যেন ভবিষ্যতে এই ধরনের অপরাধ প্রতিরোধ করা যায়।
মারিয়া