ছবি: সংগৃহীত
জিয়াউর রহমান, স্বাধীনতার ঘোষক, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম প্রভাবশালী নেতা। শিশুদের কৌতূহলী দৃষ্টি থেকে শুরু করে আপামর জনগণের হৃদয়ে তার যে স্থান, তা যুগ যুগ ধরে অমলিন। স্বাধীনতার পরবর্তী রাজনৈতিক অস্থিরতার সময় যিনি তার অসাধারণ নেতৃত্বগুণে দেশকে স্থিতিশীলতার পথে নিয়ে এসেছিলেন, সেই জিয়া আজও লাখো মানুষের মনে প্রেরণার নাম।
সানগ্লাস পরা আর্মির ড্রেসের সেই ব্যক্তিত্বময় মানুষটি আজকে জিয়ার শক্তিমত্তার প্রতীক। জীবনের প্রতিটি ধাপে তিনি প্রমাণ করেছেন, দেশ ও মানুষের জন্য সর্বোচ্চ আত্মত্যাগই একজন প্রকৃত নেতার পরিচয়।
জিয়াউর রহমানের জীবন ছিল সংগ্রামমুখর। তিনি ছিলেন সময়ের সন্তান। তার বীরত্বের গল্প শুরু হয় ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ। কালোরাতে বঙ্গবন্ধুর হয়ে চট্টগ্রামের কালুরঘাট থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন তিনি। সেই সাহসী যোদ্ধা হয়ে ওঠেন দেশের জাতীয়তাবাদী ধারার প্রবক্তা।
স্বাধীনতার পর বিধ্বস্ত বাংলাদেশ যখন চরম অস্থিতিশীলতায় নিমজ্জিত, তখন জিয়াউর রহমান দৃঢ় নেতৃত্বের মাধ্যমে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেন। গার্মেন্টস শিল্প এবং প্রবাসী আয়ভিত্তিক অর্থনীতির ভিত্তি তার হাত ধরেই স্থাপিত হয়। তিনি জাতীয় পরিচয় ও সার্বভৌমত্বকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন। ভারতের কাছে মাথা নত না করে, নিজস্ব কূটনৈতিক দক্ষতায় দেশের স্বার্থ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
১৯৭৫ সালে একদলীয় শাসনব্যবস্থা বাকশালের অবসানের পর জিয়া দেশের রাজনীতিতে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনেন। বহুদলীয় গণতন্ত্র, মুক্তিযোদ্ধাদের স্বীকৃতি, ও মুক্তিযুদ্ধের দলিল সংকলন তার শাসনামলে সম্ভব হয়।
জিয়া ছিলেন প্রাগম্যাটিক নেতা। তার কঠোর পদক্ষেপের সমালোচনা হলেও, সেই সময়ের বাস্তবতায় দেশের সার্বভৌমত্ব ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় তা ছিল অপরিহার্য। আজকের বাংলাদেশে অর্থনীতি, রাজনীতি, এবং সামাজিক অগ্রগতির বহু ক্ষেত্রেই তার রেখে যাওয়া লিগ্যাসি প্রতিফলিত হয়।
জিয়াউর রহমানের প্রতি মানুষের ভালোবাসা তার জানাজায় লক্ষাধিক মানুষের ঢলেই প্রতিফলিত হয়েছিল। শহর থেকে গ্রাম, সর্বত্রই তিনি ছিলেন সাধারণ মানুষের প্রিয় নেতা। এই ভালোবাসার কারণ ছিল তার সরলতা, দেশের প্রতি আন্তরিকতা এবং সকল মানুষের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ।
জিয়ার আদর্শ আজও তার অনুসারীদের অনুপ্রাণিত করে। তার রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও টিকে আছে তার নামেই। সময় যতই এগিয়ে যাক, জিয়া তার কর্ম, সাহস, এবং নেতৃত্বগুণের জন্য চিরকাল ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবেন।
জিয়াউর রহমানের লিগ্যাসি প্রমাণ করে, একজন প্রকৃত নেতা মানুষের হৃদয়ে স্থায়ী আসন গড়েন। বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের ধারক-বাহক এই মহানায়ক দেশের প্রতি তার অবদান এবং ত্যাগের জন্য চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
তাবিব