ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ৫ মাঘ ১৪৩১

ছুটির দিনে দর্শনার্থীদের ভিড়, কেনাকাটার সঙ্গে বেড়েছে যানজট

মীর আব্দুল আলীম, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত: ২৩:০৭, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫

ছুটির দিনে দর্শনার্থীদের ভিড়, কেনাকাটার সঙ্গে বেড়েছে যানজট

.

শনিবার ছুটির দিনে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার চিত্র ছিল অন্য দিনের চেয়ে পুরোপুরি ভিন্ন। সকাল থেকেই মেলার প্রতিটি কোনায় দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড় ছিল। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যেমন মানুষ আসছেন, তেমনি বিদেশী পর্যটকরাও তাদের কৌতূহল মেটাতে আসছেন মেলায়।
বাণিজ্য মেলা বরাবরই পণ্যের বৈচিত্র্য এবং সাংস্কৃতিক বিনিময়ের একটি বড় মাধ্যম। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। মেলায় দেশী-বিদেশী নানা ধরনের পণ্য প্রদর্শিত হচ্ছে। যার মধ্যে রয়েছেÑ ইলেক্ট্র্রনিক সামগ্রী, পোশাক, আসবাবপত্র, কসমেটিক্স, খাদ্যপণ্য, হস্তশিল্প এবং গৃহসজ্জার সামগ্রী। বিদেশী প্যাভিলিয়নগুলো দর্শনার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে বেশি। চীনা ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী, তুরস্কের কার্পেট এবং থাইল্যান্ডের হস্তশিল্প বিপুল আগ্রহের সৃষ্টি করেছে ক্রেতাদের মাঝে।
শিশুদের জন্য মেলার কেন্দ্রস্থলে রয়েছে বিশেষ শিশুপার্ক। এখানে রাইড, বেলুন, জাদু প্রদর্শনী এবং শিশুদের খেলনা কেনার জন্য আলাদা ব্যবস্থা করা হয়েছে। এটি শিশুদের জন্য একটি বড় আকর্ষণ হয়ে উঠেছে। পরিবারগুলো মেলার এই অংশে অনেকটা সময় কাটাচ্ছেন।
মেলায় খাবারের ট্রলগুলোতেও প্রচুর ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। দেশী-বিদেশী নানা স্বাদের খাবার যেমনÑ ফুচকা, ভেলপুরি, তন্দুরি চিকেন, চাইনিজ ফুড, কাবাব ও মিষ্টির স্টলগুলোতে দর্শনার্থীদের লম্বা লাইন। তবে খাবারের দাম নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ। তাদের অভিযোগ, মেলার খাবারের মূল্যসীমা বেশ চড়া। 
কেনাকাটার হালচাল ॥ দর্শনার্থীদের অনেকেই মনে করছেন বেশকিছু পণ্যের দাম তাদের নাগালের বাইরে। বিশেষ করে বিদেশী প্যাভিলিয়নে পণ্যের দাম অনেক বেশি। ফলে, মেলায় ভিড় থাকলেও কেনাকাটার হার তুলনামূলক কম। অনেক ক্রেতাই মূল্য পতনের আশায় অপেক্ষা করছেন। সাধারণত মেলার শেষ দিকে ছাড়ের হার বাড়ে বলে ধারণা। তাই অনেক দর্শনার্থী এখন শুধু পণ্য দেখে যাচ্ছেনএ পরে কেনার পরিকল্পনা করছেন।
যানজট. পার্কিংয়ে বিশৃঙ্খলা ॥ মেলা প্রাঙ্গণের চারপাশে যানজট একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে এশিয়ান হাইওয়ের আশপাশের সড়কগুলোতে যানজটের কারণে মেলায় আসতে এবং বের হতে দর্শনার্থীদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। যত্রতত্র গাড়ি পার্কিংয়ের কারণে সড়কে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে। পর্যাপ্ত পার্কিং ব্যবস্থার অভাবে গাড়ি চালক ও মালিকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা গেছে।
ক্রেতা-বিক্রেতার চ্যালেঞ্জ ॥ বিক্রেতারা জানান, দর্শনার্থীর সংখ্যা বেশি হলেও বেচাকেনা আশানুরূপ নয়। একজন বিক্রেতা বলেন, টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি নিয়ে এসেছি। অনেকেই শাড়ি দেখছেন, কিন্তু কেনার মতো দাম দিতে আগ্রহী নন। অন্যদিকে ক্রেতাদের অভিযোগ, পণ্যের মূল্য একটু কমানো হলে বিক্রি বাড়তে পারে।
মেলায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। পুলিশ, র‌্যাব এবং স্বেচ্ছাসেবকদের টহল বাড়ানো হয়েছে। প্রবেশ এবং বাইরের গেটে মেটাল ডিটেক্টরের সাহায্যে তল্লাশি করা হচ্ছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সন্তুষ্ট বলে জানিয়েছেন তারা। দর্শনার্থীদের মতে, মেলার আয়োজনে কিছু পরিকল্পনার ঘাটতি রয়েছে। যেমন- যানজট নিরসনে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। পার্কিং এলাকা যথাযথভাবে চিহ্নিত না থাকায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।

×