ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১

জুলাই আন্দোলনে ১০০ আহত শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ প্রদান করবে সন্তান ও অভিভাবক ফোরাম

প্রকাশিত: ২২:৫৬, ১৭ জানুয়ারি ২০২৫; আপডেট: ২২:৫৭, ১৭ জানুয়ারি ২০২৫

জুলাই আন্দোলনে ১০০ আহত শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ প্রদান করবে সন্তান ও অভিভাবক ফোরাম

আজ ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, শুক্রবার, সকাল ১০টায় জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তন, জাতীয় প্রেসক্লাব, ঢাকায়  বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ১০০ আহত শিক্ষার্থীদের দীর্ঘমেয়াদী স্কলারশিপ প্রদানের উদ্বোধন অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে  সন্তান ও অভিভাবক ফোরাম । 

আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ বিবেচনা করে এই স্কলারশিপ প্রদানের জন্য যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সন্তান ও অভিভাবক ফোরাম (এসওএফ), বাংলাদেশ ফিজিক্যাল থেরাপি এসোসিয়েশন(বিপিএ) ও কোয়ালিটি লাইফ ফাউন্ডেশন(কিউএলএফ) ।  বাছাই করা আহতদের শিক্ষাজীবন সফলভাবে শেষ করার জন্য প্রতি মাসে প্রতিজন শিক্ষার্থীকে অন্তত ৫০০০/-( পাঁচ হাজার) টাকা করে এসওএফ/কিউএলএফের তদারকিতে দাতা অভিভাবকরা শিক্ষার্থীদের নামে ব্যাংক একাউন্টে প্রদান করে যাবেন । 

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সারা দেশ আগত বিভিন্ন স্কুল, মাদ্রাসা, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়রত ৩০জন আহত শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবার, দাতা অভিভাবক, এসওএফ, বিপিএ, কিউএলএফ এর মনোনীত প্রতিনিধি যৌথ চুক্তিনামায় স্বাক্ষর করেন । ফেব্রিয়ারি মাস থেকে ব্যাংক হিসেবে স্কলারশিপের টাকা গ্রহণ করার জন্য শিক্ষার্থীদের হাতে ব্যাংক একাউন্ট খোলার কাগজপত্র হস্তান্তর করা হয়। এই স্কলারশিপের মাধ্যমে আহত শিক্ষার্থীরা তাদের পরিবার কিংবা অন্য কারও উপর নির্ভর না করেই তাদের শিক্ষাজীবন শেষ করতে পারবে বলে আশা পোষণ করেন আয়োজকরা । 

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থানে  গুলিবিদ্ধ হয়ে  মারাত্নকভাবে আহত অনেকেই পা হারিয়ে  কিংবা হাত হারিয়ে কিংবা পঙ্গুত্বের শিকার হয়ে  কিংবা জটিল হাড় ভাঙ্গা কিংবা চোখে গুলিবিদ্ধ হয়ে একদিকে যেমন  সীমিত জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন অন্যদিকে তাদের শিক্ষাজীবনও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। আহত শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর জন্য এসওএফ, বিপিএ, কিউএলএফ কে সবাই ধন্যবাদ জানান । 

অনুষ্ঠানে সন্মানিত অতিথি বৈষম্যবিরোধী  ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র  আয়োজকদেরকে ধন্যবাদ জানিয়ে আন্দোলনকালীন বিভিন্ন মর্মান্তিক অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে  আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন নিয়ে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপে নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন।  উমামা  সন্তান ও অভিভাবক ফোরামের গৃহীত উদ্যোগের সাথে তাদের সংগঠনের সহায়তা প্রদান এবং শহিদ পরিবারে-আহত-ছাত্র-জনতার সন্মিলিত যাত্রা অব্যাহত  রাখার আহবান জানান । 

অনুষ্ঠানের সন্মানিত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কবি মোহন রায়হান মুক্তিযুদ্ধকালীন ও পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন বিষয় বর্ণনা করে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।  তিনি ৫৩ বছর ধরে দেশের মানুষের বঞ্চনা, প্রতারিত হওয়ার বিষয় তুলে ধরে  ২৪এর বিপ্লবের আশা আকাঙ্ক্ষা কোনভাবেই যাতে প্রতারিত না  হয়, সে বিষয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সজাগ সক্রিয় থাকার আহবান জানান ।  পাশাপাশি আহতদেরকে বিভিন্ন প্রকার সহায়তার পাশাপাশি তিনটি হাসপাতলে ফ্রিতে চিকিৎসা প্রদানের ব্যবস্থা করে দেওয়ার ঘোষণা দেন  ।
 
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন শহীদ আহনাফের মা জারতাজ পারভিন, নাফিজের বাবা গোলাম রহমান, ফাইয়াজের বাবা শহিদুল ইসলাম ভুঁইয়া, ইমামের ভাই রবিউল ইসলাম, শহীদ আলভীর বাবা আবুল হাসান,  এসওএফ এর সমন্বয়ক ডাঃ শামিম তালুকদার, মিসেস সীমা দত্ত, নাসিম আহমেদ রিন্টু,  ডাঃ ইশরাত জাহান, দলিলুর রহমান,  বিপিএ মহাসচিব ডাঃ ফরিদ উদ্দিন, ব্যাংকার তাহমিনা আক্তার, আহত শিক্ষার্থী আলী আহসান, রনি মিয়া, রুপ চাঁদ, মেহেদি হাসান প্রমুখ । 

রাসেল

×