ছবি : সংগৃহীত
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী শাসনের পতন ঘটে। জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র সামনে আসার পর থেকেই রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে আলোচনা। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) বিকালে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সর্বদলীয় বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বানে ছাত্রনেতারা ২৮ ডিসেম্বর ঘোষণা দেন, বছরের শেষ দিনে শহীদ মিনার থেকে এই ঘোষণাপত্র প্রকাশ করবেন। ঘোষণাপত্রের বিষয়বস্তু ও এর প্রভাব নিয়ে প্রশ্ন তোলে কয়েকটি রাজনৈতিক দল। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, এ বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্টতা নেই। তবে ৩০ ডিসেম্বর জরুরি ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে অন্তর্বর্তী সরকার ঘোষণাপত্র তৈরি করবে।
বৈঠকে রাজনৈতিক নেতাদের অংশগ্রহণ
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণসংহতি আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদ, খেলাফত মজলিস, জাতীয় নাগরিক কমিটি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
জুলাই ঘোষণাপত্র: মূল দাবি
ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে—
- ঔপনিবেশিক শাসন থেকে স্বাধীনতা অর্জন এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাস্তবায়নে ব্যর্থতার কথা।
- বাহাত্তরের সংবিধানের সীমাবদ্ধতা এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ধারাবাহিক ব্যর্থতার কারণ উল্লেখ।
- ১/১১-এর ষড়যন্ত্র এবং শেখ হাসিনার শাসনামলে গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও দলীয় স্বার্থে সংবিধান সংশোধনের সমালোচনা।
- উন্নয়নের নামে দুর্নীতি, ব্যাংক লুট এবং বিদেশে অর্থ পাচার।
অভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিত
খসড়ায় উল্লেখ রয়েছে, শেখ হাসিনার দমননীতির পরও ছাত্র-জনতা গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেয়। সরকারের নির্মম দমননীতি, ইন্টারনেট বন্ধ এবং কারফিউয়ের মাঝেও আন্দোলন অব্যাহত থাকে। এক পর্যায়ে সামরিক বাহিনীও অভ্যুত্থানে সমর্থন দেয়।
ঘোষণাপত্রে আরো বলা হয়েছে, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন, সংসদ ভেঙে দেয়া এবং সুশাসন ও ফ্যাসিবাদ রোধে প্রয়োজনীয় সংস্কার আনা হবে। দ্বিতীয় জনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ঘটে যাওয়া গুম, খুন এবং অপকর্মের বিচার নিশ্চিত করার অঙ্গীকারও করা হয়েছে।
এই ঘোষণাপত্র কার্যকর হবে ৫ আগস্ট থেকে। এটি নতুন রাজনৈতিক দিকনির্দেশনা হিসেবে কাজ করবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
মো. মহিউদ্দিন