ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১ মাঘ ১৪৩১

দাম বাড়বে কিন্তু কষ্ট হবে না- এ কী আজব পদ্ধতি!

অনলাইন রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০২:৪৫, ১৪ জানুয়ারি ২০২৫

দাম বাড়বে কিন্তু কষ্ট হবে না- এ কী আজব পদ্ধতি!

সাংবাদিক মাসুদ কামাল

সাংবাদিক মাসুদ কামাল বলেছেন, আমরা যদি বলি অন্তর্বর্তী সরকারের নামে আমরা কি একটা ম্যাজিশিয়ান সরকার পেয়েছি?  এই শীতের দিনে গোসলের পানিতে যদি অতিরিক্ত বরফ দেওয়া হয়। তাহলে কোন সমস্যা হবে না। আপনি কিন্তু বিশ্বাস করবেন। বাজারের প্রত্যেকটি জিনিসের দাম একটু একটু বাড়ানো হলো। একটি বা দুটি নয়। প্রায় শতাধিক জিনিসের দাম বেড়েছে। মূল্যসংযোজন কর বেড়েছে। আপনি যে সেবাটা নিবেন। যেমন, টেলিফোন বিল থেকে শুরু করে প্রতিটি নিত্য পণ্যের দাম।  

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সেক্রেটারি  সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন,  শুল্ককর বৃদ্ধিতে জনগণের উপর কোন প্রভাব পড়বে না। কেন পড়বে না? এটা কি ম্যাজিক? আমার পয়সা দিয়ে আমি কাজ করবো।  আমার যে কাজ করতে আগে ১০টাকা লাগতো এখন তা লাগছে ১২ টাকা। 

যিনি সংবাদ সম্মেলন করে যে এই কথাটা বলেছেন,উনি হয়ত মাসে ২ লক্ষ টাকা আয় করেন। উনার কাছে হয়ত পাঁচ হাজার টাকা বেড়ে যাবে। যেটা উনার কাছে কোন ব্যপার মনে হবে না। উনি কি সবাইকে উনার মতো মনে করেন।

তিনি আরো বলেন,  যারা বেসরকারি চাকরি করেন। যারা ১৫-২০ হাজার টাকা বেতন পান। তারা কি করবেন। যখন একটা অগণতান্ত্রিক সরকার তাদের সরকারকে টিকিয়ে রাখার জন্য সমস্ত সরকারি কর্মচারিতের সুযোগ সুবিধা বাড়িয়ে দিতো। এই সরকার তাই করছে। শুধু তাই না। যারা অবসরে গিয়েছিল। তাদের আবার চাকরিতে ফিরিয়ে আনছে। সরকার আমলাদের উপর নির্ভরশীল হচ্ছে। যেন তারা তাদের সরকারকে টিকিয়ে রাখে। এর জন্য সরকারকে মাসে ১৩ কোটি  টাকা বাড়তি খরচ করতে হচ্ছে। এককালীন খরচ করতে হবে প্রায় ৪২ কোটি টাকার মতো।  

 মাসুদ কামাল বলেন, সরকার জনগণকে উপেক্ষা করছে। এর বিপরীতে সরকার ব্যবসায়ীদের হাতে রাখার চেষ্টা করছে। এটি হাসিনা সরকারের মতো একটা স্বৈরাচারী সরকারের মতো কাজ করছে। আগের মন্ত্রীরা গ্যাসের দাম বাড়িয়ে, তেলের দাম বাড়িয়ে নির্লজ্জ বেহায়ার মতো দাঁড়িয়ে বলতো যে,  এটা জনগণের উপর প্রভাব পড়বে না। আরেক মন্ত্রী বলতো, দ্রব্যমূল্যে বেড়েছে.....! কিন্তু মানুষের ক্রয় ক্ষমতাও বেড়েছে।  এখন এরা বলছে। তাহলে পার্থক্যটা কোথায়? এই প্রশ্নটা কি আমরা করতে পারবো না? এই যে ভ্যাট ট্যাক্স বাড়ানো হলো। অনেকেই বলছে যে আইএমএফ’র চাপে এটা করা হয়েছে। আইএমএফ বলেছে রাজস্ব বাড়াতে।

শতাধিক পণ্যের দাম বাড়ানো নিয়ে  প্রশ্ন করা হলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের এখানে অর্থনীতিবিদরা আছেন আইএমএফ’র কথাটাই বা কেন নিব। আমাদের অর্থনীতিবিদরাও তো বোঝেন। আমাদের সামষ্টিক অর্থনীতি স্থিতিশীলতা খুবই দরকার। সামষ্টিক অর্থনীতি স্থিতিশীলতা যদি না থাকে। তাহলে দেখবেন যে টাকার মান কমে যাবে। সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বাড়ানোর জন্য মোট দেশজ উৎপাদনের সমপরিমান রাজস্ব আয়ের পরিমাণ বাড়াতে হবে।

উনি কিন্তু বইয়ের ভাষায় কথা বলেছেন। কিন্তু বাস্তবের সাথে কোন মিল নেই। আইএমএফ’র চাপ আছে। এটা বলা যেতে পারে। তারা তো বলে নাই যে গরিব মানুষের উপর চাপ বাড়াতে।  যেমন ধরা যাক বসুন্ধরা গ্রুপ। আপনি তাদের কাছ থেকে কি আপনি ঠিক মতো ভ্যাট ট্যাক্স নিচ্ছেন? কারন তাদের কাছ থেকে আপনারা নিবেন না। কারন তারা আপনার পিরিতের লোক। 
 
বসুন্ধরা গ্রুপের কাছ থেকে আপনি যে পরিমাণ ভ্যাট ট্যাক্স পাবেন। তার সমপরিমাণ টাকা উঠাতে গেলে আপনাকে প্রায় ৫০ হাজার লোকের কাছে ট্যাক্স বসাতে হবে। আবার রাজস্ব ঠিক মতো আদায় না হলে দেশ চলবে কিভাবে। এটা ঠিক আছে। কিন্তু তার মানে সাধারণ জনগণের উপর চাপিয়ে দিবেন এটা তো হতে পারে না।

আইএমএফ’র সাথে আলাচনা করা যেতে পারতো।  নাকি সময় পান নাই। নাকি আলোচনা করার মতো কোন যোগ্যতা সম্পন্ন লোক নেই।  প্রধান উপদেষ্টা নিজে আলোচনা করতে পারতেন। সরকার যে ব্যাখ্যা দিচ্ছে তা ঢাহা মিথ্যা কথা। আপনারা পারছেন না। আবার ক্ষমতায় থাকতে চান। আসলে মানুষ চায় স্বস্তিতে থাকতে।

শহীদ

×