ছবি: সংগৃহীত
জুলাই-আগস্টের গণহত্যায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে গুরুত্বপূর্ণ কল রেকর্ড ও ডিজিটাল প্রমাণাদি পৌঁছেছে। এসব প্রমাণের মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের কল রেকর্ড, সিসিটিভি ফুটেজ, মোবাইল ভিডিও, মেসেজ এবং অন্যান্য সোর্স থেকে সংগৃহীত তথ্য।
এগুলোর ফরেন্সিক পরীক্ষা করার জন্য সিআইডির কাছে পাঠানোর অনুমতি দিয়েছেন বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন ট্রাইবুনাল।
প্রসিকিউশনের প্রধান জানিয়েছেন, তারা বিভিন্ন উৎস থেকে বিভিন্ন ধরনের ডিজিটাল প্রমাণ সংগ্রহ করেছেন, যার মধ্যে কল রেকর্ড, ভিডিও ফুটেজ, মেসেজ এবং ব্যক্তিগত যোগাযোগের তথ্য অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
এসব প্রমাণের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য সিআইডির ফরেন্সিক পরীক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এসব প্রমাণ, যদি সত্য বলে প্রমাণিত হয়, তা মামলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
এদিন, গণহত্যার অভিযোগ দায়ের করেছেন রংপুরের বেগম রোকিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের ভাই রমজান। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ করেছেন।
রমজান জানিয়েছেন, তার বড় ভাই আবু সাঈদের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার পাশে থাকা সহযোদ্ধাদেরও মামলায় সাক্ষী হিসেবে যুক্ত করা হবে। তিনি দাবি করেছেন যে, যাত্রাবাড়ি ও গাজীপুরের বিভিন্ন জায়গায় হত্যাকাণ্ড ও সহিংসতার ঘটনায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে রাজনৈতিক দল ও সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের হাত ছিল।
ট্রাইবুনাল এদিন পুলিশের সহকারী কমিশনার তানজিল আহমেদ ও গাজীপুরের কনস্টেবল আকরামকে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তারা ছাত্র আন্দোলন দমন করতে সহিংসতা ও হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েছেন। আদালত তাদেরকে আগামী সোমবার আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছেন।
এছাড়া, আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ২০০৯ সালে র্যাবের ক্রসফায়ারে নিহত হোটেল ব্যবসায়ী নূর আলম বাবুর বাবা, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আক্কাস আলী, এই অভিযোগটি করেছেন। এই অভিযোগের মাধ্যমে এক নতুন দিক উন্মোচিত হচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের তদন্ত ও বিচার কার্যক্রমকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।
যেহেতু এসব ডিজিটাল প্রমাণের ফরেন্সিক পরীক্ষা সিআইডির মাধ্যমে করা হবে, এটি মামলার গতিপথে এক নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে। বিশেষ করে, কল রেকর্ড ও ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে যারা এ ঘটনার সাথে যুক্ত ছিলেন তাদের চিহ্নিত করা সম্ভব হলে, তা সরকারের ও রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে বড় ধরনের প্রমাণ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
প্রসিকিউশনের সংগ্রহ করা প্রমাণের ভিত্তিতে, ট্রাইবুনালের বিচার কার্যক্রমে নতুন দিক উন্মোচিত হতে পারে, যার ফলে সরকারের ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি হতে পারে।
এভাবে, বর্তমানে চলমান এই তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া, বিশেষ করে ডিজিটাল প্রমাণের গুরুত্ব, বাংলাদেশের রাজনীতি ও আইনগত পরিস্থিতিতে নতুন আলোচনার জন্ম দিতে পারে।
ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/uxVouMn0fc8?si=7Oi92K9aY0pD31Ql
এম.কে.