ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ৩০ পৌষ ১৪৩১

এইচএমপি ভাইরাস মহামারির আকারে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা নেই: ডা. সায়েদুর

প্রকাশিত: ১৯:৪৩, ১৩ জানুয়ারি ২০২৫

এইচএমপি ভাইরাস মহামারির আকারে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা নেই: ডা. সায়েদুর

করোনা মহামারি শুরুর পাঁচ বছর পর চীনের উত্তরাঞ্চলে হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস বা এইচএমপি ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় বিশ্বজুড়ে নতুন করে উদ্বেগ বাড়ছে। তবে বাংলাদেশে এইচএমপি ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই। বাংলাদেশে এটি মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও নেই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান। 

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। এইচএমপি ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিকে সাধারণ ভাইরাস জ্বরের চিকিৎসা দিতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটির চিকিৎসায় গাইডলাইন করতে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটিও গঠন করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, এইচএমপি ভাইরাসে সাধারণ ফ্লুর মতো চিকিৎসা চলবে। যেটিকে আমরা কমন ফ্লু বা ভাইরাল ফ্লু বলি, অনেকগুলো ভাইরাসের কারণে এটি হয়, এইচএমপি ভাইরাস তাদের একটি। বাংলাদেশে এটি ২০ বছরের বেশি সময় ধরে রয়েছে। ভাইরাল ফ্লুর ক্ষেত্রে কোন ভাইরাস দিয়ে এটি হয়েছে তা চিহ্নিত করার কোনো রিকমেন্ডেড পদ্ধতি নেই।

ডা. মো. সায়েদুর রহমান বলেন, আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, আতঙ্কিত হওয়ার মতো কোনো পরিস্থিতি নেই। এমনকি এই ভাইরাস সম্পর্কে বিজ্ঞানের যতটুকু জানা আছে, সে অনুযায়ী এটি দিয়ে বড় ধরনের মহামারি হওয়ার ঝুঁকিও নেই। তবে যারা একটু অসুস্থ তারা একটু সাধারণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন। এতে তাদের ঝুঁকির পরিমাণ কমবে।

সিওপিডি, কিডনি রোগ, একেবারে শিশু বা বৃদ্ধ, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, ক্যানসারের ওষুধ সেবন করছেন- এ ধরনের রোগীরা ছাড়া অন্যদের জন্য এই ভাইরাসটি একেবারেই সাধারণ ফ্লু। যারা ঝুঁকিতে আছেন তাদের এই ফ্লু থেকে নিউমেনিয়া হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, যাদের এইচএমপি ভাইরাস শনাক্ত হবে তারা সাধারণ ফ্লুর চিকিৎসা নেবেন। পানি একটু বেশি পান করন, পুষ্টিকর খাবার খাবেন। এটি নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, পৃথিবীর অন্য কোনো দেশ বা যেখান থেকে রোগটি এসেছে সেই চীনও কোনো সতর্কতা জারি করেনি। তবুও আমরা প্রস্তুতি নিয়েছি। আমরা কিটস সংগ্রহ করেছি। তবে এটি ওই ধরনের কোনো ঝুঁকি নেই।

সীমান্তে বিধিনিষেধ আরোপের মতো কোনো কথা ইন্টারন্যাশনাল হেলথ রেগুলেশনে বলা হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখনো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ বিষয়ে কোনো সতর্কবাণী দেয়নি। বাংলাদেশে মাত্র একজন এইচএমপি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, তার (আক্রান্ত ব্যক্তি) বয়স ৩০ বছরের মতো। তিনি আক্রান্ত হওয়ার ২০ দিনের মাথায় আমাদের কাছে এসেছেন।।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আরও বলেন, আমরা আজকালের মধ্যে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে দেবো, যারা চিকিৎসায় গাইডলাইন ঠিক করে দেবেন। তবে প্রটোকলে (বর্তমানে ফ্লু চিকিৎসা পদ্ধতি) বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন হবে বলে আশা করছি না। গাইডলাইন তৈরি হলে আমরা সেটি চিকিৎসকদের মধ্যে শেয়ার করবো।

চলতি শীত মৌসুমে চীনের উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় এইচএমপি ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। শিশুরা এ ভাইরাসে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। প্রতিবেশী দেশ ভারতেও ভাইরাসটিতে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। বাংলাদেশেও এরই মধ্যে মানবদেহে এইচএমপি ভাইরাসের অস্তিত্ব শনাক্ত হয়েছে।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে করোনার সংক্রমণ শুরু হয়। পরে বিশ্বজুড়ে মহামারিতে রূপ নেওয়া এ ভাইরাসে ৭০ লাখেরও বেশি মানুষ মারা যান।

আশিক

×