বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সিনিয়র নায়েবে আমির ও শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, সারা বিশ্বে শ্রমিকরা তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। দেশের শ্রমিকরা এর ব্যতিক্রম নয়। শ্রমিকরা আজ শ্রমের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ার কারণে তাদের চাহিদা পূরণ করতে পারছে না। মাঝে মাঝে শ্রমিকরা তাদের খাবার যোগাড় করতেও ব্যর্থ হচ্ছে।
তিনি আজ রাজধানীর আলফালাহ মিলনায়তনে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের উদ্যোগে আয়োজিত দিনব্যাপী দায়িত্বশীল কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক এমপি আ.ন.ম শামসুল ইসলাম-এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান-এর সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান, গোলাম রব্বানী, লস্কর মো. তসলিম, মাস্টার শফিকুল আলম, কবির আহমেদ, মজিবুর রহমান ভূঁইয়া ও মনসুর রহমান প্রমুখ।
অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, দেশে শ্রমিকদের অধিকার রক্ষার জন্য অনেক আইন কানুন আছে। তা সত্ত্বেও শ্রমিকদের অধিকার রক্ষা করা যাচ্ছে না। শ্রমিকদের অধিকার রক্ষার জন্য ট্রেড ইউনিয়ন ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করতে হবে। যত পেশা তত ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করতে হবে। ট্রেড ইউনিয়নের মাধ্যমে শ্রমিকদের কথা তুলে ধরতে হবে।
তিনি বলেন, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনকে ব্যাপকভাবে সামাজিক কাজ করতে হবে। শ্রমিকদের বিপদে আপদে সবার আগে হাজির হতে হবে। শ্রমিকদের নৈতিকভাবে শক্তিশালী করতে হবে। শ্রমিকদের জীবন গঠন করার জন্য আমাদের প্রিয় নবী (সা.) এর জীবনকে অনুসরণ করতে হবে। আমাদের প্রিয় নবী (সা.) সবাইকে সবার আগে সালাম দিতেন। আমাদেরকে সালামের ব্যাপক প্রচলন করতে হবে। একই সাথে আমাদের নবী (সা.) সেই সোনালী যুগে যেভাবে শ্রমিকদের মাঝে ইসলামী শ্রমনীতির প্রয়োগ করেছিলেন, আজকেও আমাদের অনুরূপভাবে ইসলামী শ্রমনীতি বাস্তবায়ন করতে হবে। শ্রমিকদের দুনিয়া ও আখেরাতের জীবন সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান অর্জন করাতে হবে এবং সেই অনুযায়ী জীবন পরিচালনার গুরুত্ব বোঝাতে হবে।
অধ্যাপক মুজিব বলেন, বর্তমান পৃথিবী দুই ধারায়, শাসক ও শোষিত শ্রেণিতে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। শাসকের শোষণ থেকে মেহনতি শ্রমজীবী মানুষদের মুক্ত করতে আমাদের সর্বত্র লড়াই সংগ্রাম করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে আ.ন.ম শামসুল ইসলাম বলেন, দেশের যেখানে শ্রমিকরা বঞ্চিত হবে সেখানে সবার আগে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের নেতাকর্মীদের ছুটে যেতে হবে। শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের জন্য কণ্ঠ উঁচু করতে হবে। ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠন ছাড়া শ্রমিক সংগঠন তার কাঙ্ক্ষিত কাজ করতে পারে না। তাই আমাদেরকে সংগঠনকে ট্রেড ইউনিয়ন মুখী করতে হবে। শ্রমিকদের নিয়ে পেশা ভিত্তিক ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করতে হবে। ট্রেড ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দকে মালিকদের সাথে কথা বলার যোগ্যতা অর্জন করতে হবে।
তিনি বলেন, শ্রমিক নেতৃবৃন্দকে ইসলামী শ্রমনীতির উপরে পর্যাপ্ত জ্ঞান অর্জন করতে হবে। শ্রমিকদের নিয়ে বেশি বেশি কর্মশালা আয়োজন করে তাদেরকে শ্রম আইনসহ অন্যান্য আইন কানুনে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। আজকের দিনে শ্রমিকরা স্বস্তি চায়। তারা নির্যাতন নিপীড়নের শিকার হতে চায় না। শ্রমিকদের মুক্তি আকাঙ্ক্ষাকে আমাদের ধারণ করতে হবে। তাদেরকে ঐক্যবদ্ধ করে মুক্তির কাঙ্ক্ষিত মঞ্জিলে পৌঁছে দিতে হবে।
রিফাত