বাংলাদেশে পর্যটন, নির্মাণ শিল্প ও অবকাঠামো, জ্বালানি, স্বাস্থ্যসেবা, শিপিং, এয়ারলাইন্স, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিসহ কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পে বিনিয়োগের অপার সম্ভাবনা দেখছেন তুরস্কের ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা। যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বহুগুণ বাড়ানোর আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তাঁরা।
বৃহস্পতিবার (০৯ জানুয়ারি, ২০২৫) সকালে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত বাংলাদেশ-তুরস্ক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ শীর্ষক গোলটেবিল সভায় এসব কথা জানান বাংলাদেশ সফরে আসা তুরস্কের বাণিজ্য প্রতিনিধি দল।
গোলটেবিল সভায় সভাপতিত্ব করেন দি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) –এর প্রশাসক মোঃ হাফিজুর রহমান।
সভায় তুরস্কের বাণিজ্য বিষয়ক মন্ত্রী ড. ওমের বোলাত বলেন, তুরস্কের বেশকিছু প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে সুনামের সাথে ব্যবসা পরিচালনা করছে এবং তাঁদের আত্মবিশ্বাসকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ-তুরস্ক দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য দ্বিগুণ করার সুযোগ রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, তুরস্কের ব্যবসায়ীদের জন্য বাংলাদেশ কেবল একটি বাজার নয়, বরং অন্যতম একটি ’বিজনেস হাব’ হিসেবে বিশেষভাবে বিবেচিত। পর্যটন, অবকাঠামো, জ্বালানি, স্বাস্থ্যসেবা, শিপিং, এয়ারলাইন্স, আইসিটি, কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পসহ অন্যান্য সম্ভাবনাময় খাতে বাংলাদেশ ও তুরস্কের বিপুল বাণিজ্য সম্ভাবনা রয়েছে মর্মে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
গোলটেবিল সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। বাংলাদেশ ও তুরস্কের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদার করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে উল্লেখ করে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, গতানুগতিক খাতসমূহের ওপর নির্ভরশীল না থেকে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক বৈচিত্রকরণের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। ঔষধ শিল্প, জ্বালানি, নির্মাণ শিল্প ও অবকাঠামো, পর্যটন প্রভৃতি খাতে তুরস্কের সাথে যৌথ উদ্যোগ উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সভায় স্বাগত বক্তব্যে এফবিসিসিআই -এর প্রশাসক মোঃ হাফিজুর রহমান জানান, বাংলাদেশ-তুরস্কের মধ্যে একটি শক্তিশালী বাণিজ্য সম্পর্ক বিদ্যমান রয়েছে। তবে এখনও অনাবিষ্কৃত অনেক নতুন এবং সম্ভাবনাময় খাতে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণের সুযোগ রয়েছে।
মোঃ হাফিজুর রহমান বলেন, তুরস্ক একটি শক্তিশালী এবং উন্নত অর্থনীতির দেশ। দক্ষতা, প্রযুক্তি, উদ্ভাবন, গবেষণা প্রভৃতি বিষয়ে তাদের সহযোগিতা আমাদের জন্য জরুরী। পর্যটন, এভিয়েশন, শিপিং প্রভৃতি শিল্পে তুরস্ক বিশ্বের অন্যতম অংশীজন। এসব খাতে তিনি বাংলাদেশে তুরস্কের বিনিয়োগ আহ্বান করেন। পাশাপাশি, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণে দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি বাস্তবায়নের ওপরও গুরুত্ব দেন এফবিসিসিআই -এর প্রশাসক।
সভায় অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়ে নিজেদের আগ্রহের কথা ব্যক্ত করেন দি ইউনিয়ন অব চ্যাম্বার্স অ্যান্ড কমোডিটি এক্সচেঞ্জ অব তুর্কিয়ে (টিওবিবি) –এর ভাইস প্রেসিডেন্ট মি. তামের কিরাণ।
গোলটেবিল সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন তুরস্ক-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের চেয়ারপার্সন মি. অনুর ওজদেন, তুরস্কের প্রতিনিধি দলের সদস্যবৃন্দ, এফবিসিসিআই –এর সাবেক পরিচালকবৃন্দ, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ।
আফরোজা