উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম ঢাকা ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন
জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আগামী সপ্তাহে আলোচনা শুরু হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। তিনি বলেন, আশা করছি, সরকার গণঅভ্যুত্থানের যত পক্ষ আছে সবার সঙ্গে কথা বলে আগামী সপ্তাহে এই ঘোষণাপত্রের বিষয়ে এবং কবে এই ঘোষণাপত্র প্রকাশ হবে, সরকার সবার সম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত জানাবে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়। এ সময় তিনি ঘোষণাপত্র, সংবিধান ও আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে নানা প্রশ্নের উত্তর দেন।
এর আগে ঘোষণাপত্র দিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়। এর প্রেক্ষিতে উপদেষ্টা জানান, শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল ১৫ জানুয়ারির মধ্যে ঘোষণাপত্র তৈরি করা। এই সময় কিছুটা বাড়ানো হতে পারে। ঘোষণাপত্র আসবে সবার ঐকমত্যের ভিত্তিতে। সব রাজনৈতিক পক্ষ, দল, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে সেটি হবে। সবার সম্মতিক্রমে ঘোষণাপত্র হলে সেটি বাংলাদেশের জন্য ভালো হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের ১৯৭২ সালের সংবিধান ছুড়ে ফেলার বিষয়ে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, এটার প্রস্তাবনা আছে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে। অন্যান্য রাজনৈতিক দল থেকে হয়তো এটার বিরোধিতা আছে। এটা একটি বিতর্কিত পয়েন্ট। এসব বিতর্কিত পয়েন্ট আমরা আলোচনা করে লিপিবদ্ধ করব।
মাহফুজ আলম বলেন, ৭২-এর সংবিধানের প্রশ্নে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে একটা দাবি আছে। ’৭২-এর সংবিধান যখন থেকে প্রণীত হয়েছে তখন থেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ক্রিটিক্যালি দেখেছেন। এখন বর্তমান বাংলাদেশের প্রেক্ষিত যেখানে আমরা দাঁড়িয়ে আছি, এটি গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সরকার, এখানে এক কথায় একটি শব্দ দরকার সেটি হচ্ছে ‘ঐকমত্য’।
জাতীয় নির্বাচন আগে হবে নাকি স্থানীয় সরকার নির্বাচন-এমন প্রশ্নে মাহফুজ আলম বলেন, আমরা আসলে প্রশাসক দিয়ে জনগণের কাছে সেবা পৌঁছাতে পারব কি না, এই বিষয়ে যেহেতু আমাদের সংশয় তৈরি হয়েছে, যদি সিটি করপোরেশনের দিকে তাকান কিংবা স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের দিকে তাকান অনেক সরকারি সেবা জনগণ পাচ্ছে না। আমরা দেখছি যে প্রশাসক দিয়ে কীভাবে সামলানো যায়।
এটা প্রধান উপদেষ্টা একটা প্রস্তাবনা হিসেবে বলেছেন যে, যদি স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয়, তাহলে নাগরিকদের সেবা প্রাপ্তির সুযোগ তৈরি হবে। আমি মনে করি, এটা সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে আমরা অগ্রসর হতে পারব।
জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচন সংস্কার সাপেক্ষ। এটি প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে ইতোমধ্যে দেখেছেন। আমরা আশা করি, সংস্কার কমিশনগুলোর রিপোর্ট এই মাসের মধ্যে পাবো। প্রথম যে ছয়টি কমিটি হয়েছিল সেগুলো নির্বাচন সংশ্লিষ্ট। এই কমিশনগুলো যে প্রস্তাবনা দেবে সেগুলো নির্বাচনকেন্দ্রিক। প্রস্তাবনাগুলো নিয়ে আমরা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করব।
এই প্রক্রিয়ায় প্রবেশের পর রাজনৈতিক দলগুলো আসলে ঠিক করবে কতটা সংস্কার চাই। ওই সংস্কার মধ্যমেয়াদি, দীর্ঘমেয়াদি বা কী ধরনের মেয়াদি হয় ওই সংস্কারের মেয়াদ বা পরিধির ভিত্তিতে আমি মনে করি নির্বাচনের তারিখ ঠিক হবে, সুতরাং এটি আজকালের মধ্যে ঠিক হওয়া যৌক্তিক হবে বলে আমি মনে করি না। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার পর বিষয়টা স্পষ্ট হবে।