ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ জানুয়ারি ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১

খাদ্য মজুত বাড়ানোর উদ্যোগ

তপন বিশ্বাস

প্রকাশিত: ২২:৪৭, ৯ জানুয়ারি ২০২৫

খাদ্য মজুত বাড়ানোর উদ্যোগ

ক্রমান্বয়ে কমছে সরকারি খাদ্যশস্যের মজুত

ক্রমান্বয়ে কমছে সরকারি খাদ্যশস্যের মজুত। মার্চ থেকে শুরু হচ্ছে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি। এ কর্মসূচিতে চলে যাবে মজুতের বড় একটি অংশ। চালের বাজারও বাড়তি। এ লক্ষ্যে সরকার মজুত বাড়ানোর উদ্যোগ নিচ্ছে। সরকারি গুদামে এখন চাল-গমের মজুত ১২ লাখ টনের কিছু বেশি। মজুত বাড়িয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণে তাই ১৬ লাখ টন চাল-গম কেনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

একইসঙ্গে সরকার অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে খাদ্যশস্য সংগ্রহেও কঠোর অবস্থানে। চুক্তি বরখেলাপ করলে সংশ্লিষ্ট মিল মালিকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে চিঠি দিয়ে মিল মালিকদের সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আবার চুক্তি না করলেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ প্রসঙ্গে খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেন, চলতি মাসে বিভিন্ন দেশ থেকে সরকারিভাবে এক লাখ ৭৫ হাজার টন চাল আসছে। আশাকরি এ চাল এলে বাজারে দাম কমবে। বন্যায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আমনের ক্ষতি হয়েছে। চাল আমদানির ব্যবস্থা নিয়েছি। বেসরকারিভাবে চাল আমদানির জন্য শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছে। ব্যবসায়ীদের চাল আমদানির জন্য উৎসাহিত করছি।
তিনি বলেন, এরই মধ্যে ২ লাখ ৫০ হাজার টন চাল আমদানির জন্য দরপত্র চূড়ান্ত করা হয়েছে। মিয়ানমার থেকে জি-টু-জি (দুই দেশের সরকারের মধ্যে চুক্তি) ভিত্তিতে এক লাখ টন চাল আনা হবে। পাকিস্তান থেকে ৫০ হাজার টন চাল আনার বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। চালের শুল্ক ছাড় দিয়েছি, ওএমএস কার্যক্রম চলছে, সেটি আরও জোরদার করা হবে।

টিসিবির অধীনে প্রতি মাসে ৫০ হাজার টন চাল দেওয়া হচ্ছে। মার্চ থেকে শুরু হবে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি। এ কর্মসূচির অধীনে ৫০ লাখ পরিবার ১৫ টাকা কেজি দরে প্রতি মাসে ৩০ কেজি করে চাল পাবে। মজুতবিরোধী আইন প্রয়োগে জেলা প্রশাসক ও ইউএনওদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। খাদ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও এ বিষয়ে প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাসুদুল হাসান, মজুত বাড়াতে বিদেশ থেকে আমরা চাল ও গম আমদানি করছি। একটার পর একটা জাহাজ আসছে। আমাদের ৮ লাখ টন চাল ও ৮ লাখ টন গম আনার প্রক্রিয়া পাইপলাইনে রয়েছে। যদি আবহাওয়াগত বা অন্য কোনো সমস্যা না হয় তবে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে এ চাল ও গম চলে আসবে।
সচিব আরও বলেন, ‘মার্চ থেকে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি শুরু হবে। সেখানে চাল যাবে। তবে সেই হিসাবটা আমাদের করা রয়েছে। আমরা কোনো সংকটময় পরিস্থিতিতে পড়ব না ইনশাআল্লাহ।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বুধবার খাদ্যশস্যের সরকারি মজুত ছিল ১২ লাখ ১৬ হাজার মেট্রিক টন। এর মধ্যে চাল প্রায় ৮ লাখ টন, বাকিটা গম। ২০২৩ সালের শুরুতে সরকারি মজুত ছিল প্রায় ২০ লাখ টন। ২০২৪ সালের শুরুতে মজুতের পরিমাণ ছিল ১৬ লাখ টনের মতো।
খাদ্য মন্ত্রণালয় ও খাদ্য অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানান, বিগত সরকার শেষের দিকে কোনো চাল আমদানি করেনি। উল্টো ফ্যামিলি কার্ডের আওতায় এক কোটি পরিবারকে চাল বিতরণ করা হয়েছে। সেজন্য বিগত সময়ের চেয়ে মজুত কিছুটা কম। আবার এবারও কর্মসূচির আওতায় ৫০ লাখ পরিবারকে ১৫ টাকা কেজি দরে ৩০ কেজি করে চাল দেওয়া হবে।

খাদ্যশস্যের বর্তমান মজুতের একটা বড় অংশ চলে যাবে এ কর্মসূচিতে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাসুদুল হাসান বলেন, গত অর্থবছরে আসলে সেভাবে চাল আমদানি করেনি সরকার। অন্যদিকে টিসিবির যে এক কোটি ফ্যামিলি কার্ড সেখানে মাসে আমাদের প্রত্যেক পরিবারকে পাঁচ কেজি করে চাল দিতে হচ্ছে। ফিগারটা কিন্তু অনেক বড়। সেজন্য মজুত কিছুটা কমেছে।
ঢাকার বাজার ঘুরে দেখা যায়, আমনের নতুন চাল বাজারে এলেও প্রতি কেজি চালের দাম দুই থেকে ছয় টাকা পর্যন্ত বেড়েছে গত দুই সপ্তাহে। খুচরায় প্রতি কেজি ৬২ টাকার নিচে কোনো চাল মিলছে না। এ দামে যেসব চাল মিলছে, সেগুলো মোটা স্বর্ণা ও পাইজাম। এ দুই জাতের চাল চলতি আমন মৌসুমে বাজারে এসেছে।
চালকল মালিকদের দাবি, ধানের দাম বাড়ায় তারা চালের দাম বাড়িয়েছেন। নওগাঁ চালকল মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ চকদার বলেন, মোকামে ধান নেই। শুরু থেকে এবার ধানের দাম বেশি। গত এক-দেড় সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি মণে ৭০ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ধানের দাম বাড়ার কারণে স্বাভাবিক কারণেই চালের দাম বাড়াতে হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দেশে চালের বড় মোকাম কুষ্টিয়ার খাজানগর, নওগাঁ ও দিনাজপুরে প্রতি মণ স্বর্ণা ধান এক হাজার ৪২০ থেকে এক হাজার ৪৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এসব এলাকায় প্রতি মণে ধানের দাম গত সপ্তাহের চেয়ে ৫০ টাকা বেড়েছে। যেখানে প্রতি বস্তা চালের দাম একই সময়ে বেড়েছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। ওইসব এলাকায় প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) চাল বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার ৭০০ টাকায়।
মজুত বাড়াতে সরকারিভাবে ৮ লাখ টন চাল ও ৮ লাখ টন গম আমদানির প্রক্রিয়া চলমান। এরই মধ্যে চাল ও গম আসতে শুরু করেছে। একইসঙ্গে বেসরকারিভাবে চাল আমদানি হচ্ছে। আমন ধান-চাল সংগ্রহও জোরদার করা হয়েছে। আগামী জুনের মধ্যে মজুত ২০ লাখ টনে উন্নীত করা হবে বলেও জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। খাদ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলেন, আমদানির চাল পুরোদমে ঢুকতে শুরু করলে বাজার কমে যাবে। মজুতও ভালো একটা অবস্থানে দাঁড়াবে। 
সংশ্লিষ্টরা জানান, চালের বাজার অস্থিতিশীল হলে সরকার খোলাবাজারে সুলভমূল্যে চাল বিক্রির (ওএমএস) আওতা ও বরাদ্দ বাড়িয়ে বাজারে স্থিতিশীলতা আনার চেষ্টা করে। এ ছাড়া খাদ্যবান্ধবসহ অন্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির মাধ্যমে চাল বিতরণ করা হয়। মূলত অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে সংগ্রহ ও আমদানির মাধ্যমে মজুত করে সরকার।
খাদ্য মন্ত্রণালয় ও খাদ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, সরকার মজুত বাড়াতে বিদেশ থেকে চাল ও গম আমদানির জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে ৮ লাখ টন চাল ও ৮ লাখ টন গম আমদানি করা সম্ভব হবে। এরই মধ্যে চাল ও গম আসার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। গত ২৫ ডিসেম্বর ভারত থেকে ২৪ হাজার টন চালবাহী প্রথম জাহাজ এসেছে। ১০ জানুয়ারি ২৭ হাজার টন চাল নিয়ে আসছে আরও একটি জাহাজ।
খাদ্য অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট পরিচালক বলেন, এরই মধ্যে ভারত থেকে চাল আসছে। আমরা তিন লাখ টন চাল টেন্ডার করে ফেলেছি, পুরোটাই ভারত থেকে আসবে। এ ছাড়া সরকার টু সরকার মিয়ানমারের সঙ্গে এক লাখ টন চাল আনার চুক্তি হয়েছে। চাল আনতে ভিয়েতনামের সঙ্গেও আলোচনা চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, সেখান থেকে এক লাখ টন চাল আনতে চাচ্ছি আমরা। ভারত থেকে আরও এক লাখ টন চাল জি-টু-জি ভিত্তিতে আনার জন্য আলোচনা হচ্ছে। পাকিস্তানের সঙ্গেও এক লাখ টনের জন্য আলোচনা চলছে, সেখানে এক লাখ না হলেও ৫০ হাজার টন পাব, এটা বলা যায়।
মিলাররা চাল না দিলে তাদের শাস্তির মুখে পড়তে হবে। আমরা এরই মধ্যে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছি। যারা সরকারকে সহযোগিতা করবে না, আর যারা সরকারকে চাল দেবে- দুজনের সঙ্গে তো আচরণ একরকম হবে না। পরিচালক বলেন, গমও দেড় লাখ টন পাইপলাইনে। ৫০ হাজার টন ইউক্রেন থেকে এসেছে। আরও এক লাখ টন আর্জেন্টিনা থেকে আসবে। টেন্ডার ও চুক্তি হয়ে গেছে।
সরকারের মজুতের বড় একটি অংশ আসে অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে ধান ও চাল কেনার মাধ্যমে। চলতি আমন মৌসুমে ১০ লাখ টন ধান ও চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে তিন লাখ টন ধান, সাড়ে পাঁচ লাখ টন সিদ্ধ চাল ও এক লাখ টন আতপ চাল কেনা হবে। গত ১৭ নভেম্বর থেকে সিদ্ধ চাল ও ধান কেনা শুরু হয়েছে, চলবে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। আতপ চাল সংগ্রহ করা হবে ১০ মার্চ পর্যন্ত।
প্রতি কেজি সিদ্ধ চাল ৪৭ টাকা ও ধান ৩৩ টাকা দরে কেনা হচ্ছে। এ ছাড়া ৪৬ টাকা কেজি দরে কেনা হচ্ছে আতপ চাল। তবে নির্ধারিত দামের চেয়ে বাজারে ধান ও চালের দাম বেশি হওয়ায় সরকার কাক্সিক্ষত মাত্রায় তা কিনতে পারছে না। এ পর্যন্ত মাত্র দুই লাখ টনের মতো চাল সংগ্রহ করতে পেরেছে খাদ্য বিভাগ। ধান কিনতে পেরেছে খুবই সামান্য।

এ অবস্থায় আমনের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী চাল সংগ্রহের জন্য কঠোর অবস্থান নিয়েছে সরকার। চলতি আমন সংগ্রহ মৌসুমে চুক্তি না করা এবং চুক্তি করে চাল সরবরাহ না করা মিলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মাঠ পর্যায়ের খাদ্য কর্মকর্তাদের কাছে সম্প্রতি চিঠি পাঠিয়েছে খাদ্য অধিদপ্তর।
চিঠিতে বলা হয়, চলতি আমন সংগ্রহ মৌসুম (২০২৪-২০২৫) শুরুর আগে খাদ্য অধিদপ্তরে পাঠানো চুক্তিযোগ্য সিদ্ধ ও আতপ চালকলের সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৯ হাজার ২৮৪ ও ৯৯৭টি। চুক্তি সম্পাদনের নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে মোট ছয় হাজার ৯০৯টি সিদ্ধ ও ৮৪৭টি আতপ চালকল চুক্তি সম্পন্ন করেছে। চুক্তি করেনি এমন সিদ্ধ মিলের সংখ্যা দুই হাজার ৩৭৫টি ও আতপ মিলের সংখ্যা ১৫০টি।
এতে আরও বলা হয়, দৈনিক সংগ্রহ প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, কোনো কোনো জেলা/উপজেলা/কেন্দ্রে এখনো সংগ্রহের পরিমাণ একেবারেই নগণ্য। কোনো কোনো কেন্দ্রে এখনো সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু হয়নি, যা অনাকাক্সিক্ষত এবং অনভিপ্রেত। এসব স্থাপনায় কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যথাযথভাবে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করছে বলে প্রতীয়মান হয় না।
এ অবস্থায় তিনটি নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয় চিঠিতে। চলতি আমন সংগ্রহ মৌসুমে চুক্তিযোগ্য যেসব মিল মালিক চুক্তি সম্পাদন করেনি এমন মিলগুলোকে ‘অত্যাবশ্যকীয় খাদ্যশস্য সংগ্রহ, ব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রণ আদেশ, ২০২২’ এর অনুচ্ছেদ ৭ মোতাবেক ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। তবে বন্যাদুর্গত এলাকার মিলের ক্ষেত্রে বাস্তবতার নিরিখে ব্যবস্থা নিতে হবে।

চুক্তিযোগ্য যেসব মিল চুক্তি করেনি কিংবা চুক্তি করে এখনো চাল সরবরাহ করেনি এমন মিলে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় মজুতবিরোধী কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। চুক্তি করে চাল সরবরাহ করেনি এমন মিল মালিককে কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়াসহ চুক্তি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকদের নির্দেশনা দিতে বলা হয়।
যেসব জেলা বা উপজেলায় চুক্তি অনুযায়ী আশানুরূপ সংগ্রহ হয়নি, এমন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক, ভারপ্রাপ্ত গুদাম কর্মকর্তাদের দায়িত্বে অবহেলা পরিলক্ষিত হলে কারণ দর্শানোর পর প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে খাদ্য অধিদপ্তরকে জানাতে বলা হয়েছে চিঠিতে।
এ ছাড়া আমন ধান ও চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে মনিটরিংয়ের জন্য দেশের আট বিভাগে আটজন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
খাদ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (সংগ্রহ বিভাগ) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, গত বছর আমনের দর ছিল ৪৪ টাকা এবার ৪৫ টাকা। বাজারটা এখন ৪৫ এর ওপরে আছে। তাই মিলাররা সরকারকে চাল দিতে একটু কম আগ্রহী। প্রতিদিন গড়ে ১০ হাজার টনের মতো চাল আসছে। এভাবে এলে আমরা চালের লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি চলে যাব বলে আশা করছি।
তিনি বলেন, তবে আমরা ধানের যে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছি, সেটি কৃষক বাড়িতে বসেই পাচ্ছে। যে দাম সে বাড়িতে বসে পাচ্ছে, সেই দামে তো সরকারি গোডাউনে দিতে আসবে না, সেটাই স্বাভাবিক। তাই ধানটা পাওয়া যাচ্ছে খুবই কম। ধানের ক্ষেত্রে সরকার কৃষককে মূল্য সাপোর্ট দিতে চায়। কৃষক সেটা পাচ্ছে। তবে ধানে কৃষককে ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতের যে লক্ষ্যমাত্রা সেটা পূরণ হয়েছে।
পরিচালক আরও বলেন, মিলাররা চাল না দিলে তাদের শাস্তির মুখে পড়তে হবে। আমরা এরই মধ্যে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছি। যারা সরকারকে সহযোগিতা করবে না, আর যারা সরকারকে চাল দেবে- দুইজনের সঙ্গে তো আচরণ একরকম হবে না।
চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে এরই মধ্যে সরকার চাল আমদানির সব শুল্ক প্রত্যাহার করেছে। ১ নভেম্বর সব শুল্ক প্রত্যাহারের পর বেসরকারিভাবে এ পর্যন্ত চার ধাপে মোট ১৪ লাখ ৮১ হাজার টন সিদ্ধ ও আতপ চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
বেসরকারিভাবে চাল আমদানি খুলে দেওয়ার পর এরই মধ্যে ৮৭ হাজার টন চলে এসেছে জানিয়ে খাদ্য সচিব মাসুদুল হাসান বলেন, নতুন করে আরও ২৭টি আবেদন আমাদের কাছে আছে। সেগুলো অনুমতি পাবে। এ ছাড়া যারা অনুমতি পেয়েছে তাদের সময়ও বাড়িয়ে দেওয়া হবে। আগামী দিনগুলোতে অভ্যন্তরীণ চালের বাজার স্থিতিশীল থাকবে বলে আশা করছি।

×