প্রায় ৫৪ বছর ধরে বাংলাদেশের কোদলা নদীর ৫ কিলোমিটার এবং এর সংলগ্ল চর ভারতের দখলে ছিল। এটি উদ্ধারে কনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এই কাজটি করে দেখিয়েছে বিজিবি। ৬ জানুয়ারি বিজিবি আনুষ্ঠানিকভাবে ভূমি বুঝে নেয় ।
ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী কোদলা নদীর ৫ কিলোমিটার ভারতের দখল থেকে উদ্ধার করেছে মহেশপুর-৫৮ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এতদিন কোদলা নদীর বাংলাদেশ সীমান্তের এই ৫ কিলোমিটার ভারতের বিএসএফ দখল করে আধিপত্য বিস্তার করেছিল।
স্থানীয় মানুষেরা কোদলা নদীর বাংলাদেশ অংশে মাছ ধরা বা কোনো কাজে নদীতে যেতে পারতোনা, বিএসএফ বাধা প্রদান করতো। এতে নদীটি ব্যবহার করা নিয়ে গ্রামের মানুষের সঙ্গে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ'র সাথে প্রায়ই তর্কাতর্কি হতো।
মহেশপুর ৫৮ বিজিবি জানায়, কোদলা নদী বাংলাদেশের ভেতরে দক্ষিণমুখী প্রবাহিত হয়ে মহেশপুরের মাটিলা এলাকায় ৪.৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত চিহ্নিত করেছে। ১৯৬১ সালের বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত মানচিত্র (স্ট্রীপ ম্যাপ, সীট নম্বর-৫১) অনুযায়ী, উল্লিখিত এই নদী অংশ সম্পূর্ণভাবে বাংলাদেশের সীমানার শূন্য রেখার মধ্যে অবস্থিত।সম্প্রতি কোদলা নদীর মালিকানা নিয়ে বিষয়টি তাদের দৃষ্টিগোচর হলে, তারা স্থানীয় প্রশাসন, প্রাসঙ্গিক নথিপত্র এবং মানচিত্রের সাহায্যে নদীর সঠিক অবস্থান নিশ্চিত করে। এরপর বিএসএফের অননুমোদিত আধিপত্যের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানায়। বিজিবি সদস্যরা সাহস ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করে কোদলা নদীর উপর বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হন।
বর্তমানে, বিজিবি সীমান্ত এলাকায় পর্যাপ্ত জনবল বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। একই সঙ্গে, নদীতে টহল জোরদার করার জন্য যন্ত্রচালিত নৌকা এবং নদীর তীরবর্তী এলাকাগুলোতে দ্রুতগতির টহলের জন্য অল-ট্যারেইন ভেহিকেল (এটিভি) বরাদ্দ করেছে।
ভারতের দখল থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার নদী উদ্ধার করার পর, সোমবার দুপুরে মহেশপুর ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাহ মো. আজিজুস সহিদ স্থানীয় জনগণের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।এসময় বিজিবি কর্মকর্তারা নদী উদ্ধারে সহায়তার জন্য জনগণকে ধন্যবাদ জানান। পাশাপাশি, নদীর সঠিক অবস্থান ও মালিকানা সম্পর্কে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সচেতন রাখতে তাদের অনুরোধ করেন। বিজিবি কর্মকর্তারা আরও বলেন, নদীর বাংলাদেশ অংশে প্রয়োজনীয় সেচ কার্যক্রম এবং চাষাবাদ অব্যাহত রাখতে গ্রামবাসীর সহযোগিতা প্রয়োজন।
আফরোজা