ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২০ মাঘ ১৪৩১

হলি আর্টিজান হামলার ফারাজের মু’খোশ উন্মোচন করলেন প্রথম আলোর সাংবাদিক

প্রকাশিত: ১৯:৩৩, ৫ জানুয়ারি ২০২৫; আপডেট: ১৯:৩৩, ৫ জানুয়ারি ২০২৫

হলি আর্টিজান হামলার ফারাজের মু’খোশ উন্মোচন করলেন প্রথম আলোর সাংবাদিক

ছবিঃ সংগৃহীত

গুলশানের হলি আর্টিজান হামলার ঘটনায় নিহত ফারাজ আইয়াজ হোসেনের স্মৃতি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রচারণা চালিয়ে আসছে প্রথম আলো। পত্রিকাটি ফারাজকে একজন "সাহসী তরুণ" হিসেবে চিত্রিত করে, যিনি তার বন্ধুদের ছেড়ে আসতে অস্বীকার করেছিলেন। কিন্তু এই প্রচারণার সাথে সংশ্লিষ্ট তথ্য ও ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন করেছেন প্রথম আলোর সাবেক অপরাধ বিটের সাংবাদিক আহমেদ জায়েফ। তিনি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক একাউন্টে "প্রথম আলোর জঙ্গিবাদ কভারেজ ও আমার অভিজ্ঞতা শিরোনামে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। 

তিনি প্রথম আলোর উপর ইঙ্গিত করে লিখেছেন, নিতান্তই মনগড়া গল্পের ভিত্তিতে ফারাজকে হিরো বানিয়েছেন ট্রান্সকম গ্রুপের পত্রিকা প্রথম আলো। 

২০১৬ সালের ১ জুলাই হোলি আর্টিজানে হামলার সময় ফারাজ তার দুই বন্ধু অবিন্তা কবির এবং তারুশি জৈনসহ জঙ্গিদের হাতে নিহত হন। প্রথম আলো প্রকাশ করে যে, মুসলিম হওয়ার কারণে জঙ্গিরা ফারাজকে ছেড়ে দিতে চেয়েছিল, তবে তিনি তার দুই পশ্চিমা পোশাক পরিহিত বন্ধুদের ছেড়ে আসেননি, ফলে তিনজনই নিহত হন। এদিকে, নিউ ইয়র্ক টাইমসের ২০১6 সালের প্রতিবেদনেও ফারাজের "ভাগ্নে" হিশাম হোসেনের উদ্ধৃতি দিয়ে একই তথ্য তুলে ধরা হয়েছিলো।

তবে, ঘটনার পর একাধিক সাক্ষাৎকার এবং পুলিশি তদন্তে এমন কোনো সাক্ষ্য পাওয়া যায়নি, যা ফারাজের বন্ধুরা ছাড়তে অস্বীকার করার কথা নিশ্চিত করে। প্রথম আলোতে কর্মরত সাংবাদিকরা এবং অন্যান্য গণমাধ্যমকর্মীরা এমন ঘটনার কোনো স্বীকৃত বর্ণনা দিতে পারেননি। এমনকি, নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে উল্লেখিত তথ্যের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রতিবেদনের সহ-লেখকরা, জুলফিকার আলি মানিক ও মাহের সাত্তার,ও জানান যে তারা ওই তথ্য সরবরাহ করেননি এবং সংবাদটির কোনো সত্যতা নেই।

প্রথম আলোর এই প্রচারণা এবং ফারাজের চরিত্র চিত্রণের বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন তুলেছেন, উল্লেখ করে যে এটি একটি সম্ভাব্য তথ্য বিকৃতি। প্রথম আলো প্রকাশনার মাধ্যমে এই বিষয়টি নানাভাবে প্রচার করা হলেও, পরবর্তীতে সংশোধনী বা ব্যাখ্যা প্রদান করা হয়নি।

তবে, এক্ষেত্রে গণমাধ্যমের দায়িত্বশীলতা এবং তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের গুরুত্ব পুনরায় প্রমাণিত হয়েছে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং সিটিজেন জার্নালিজমের এই যুগে সাংবাদিকতার নৈতিকতার প্রশ্ন বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এ বিষয়ে প্রথম আলোতে কর্মরত অপরাধ বিষয়ক সাংবাদিক, যিনি ২০১৬ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত পত্রিকায় কাজ করেছেন, জানিয়েছেন যে তারা ঘটনার পর থেকেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যক্রম এবং দেশের জঙ্গি কার্যক্রম নিয়ে রিপোর্ট করেছেন, তবে এই তথ্য নিয়ে প্রশ্নে জর্জরিত হয়েছেন।

ফারাজ আইয়াজ হোসেনের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানাতে হলে, তথ্য যাচাই এবং সঠিক ইতিহাস তুলে ধরাই গণমাধ্যমের মূল দায়িত্ব বলে মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকরা।

সূত্রঃ https://youtu.be/PYFXrbOXSV4?si=bWvzSiYau6jb2grl

মারিয়া

×