ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১

প্রধান উপদেষ্টার আনুষ্ঠানিক অনুমোদন

বিডিআর হত্যাকাণ্ড পুনর্তদন্তে কমিশন গঠন

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২২:৩৮, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

বিডিআর হত্যাকাণ্ড পুনর্তদন্তে কমিশন গঠন

বিডিআর হত্যাকাণ্ড পুনর্তদন্ত

২০০৯ সালে পিলখানায় বিডিআর (বর্তমানে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পুনর্তদন্তের জন্য সাত সদস্যের কমিশন গঠন করা হয়েছে। বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক আ ল ম ফজলুর রহমানকে এই কমিশনের সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
সোমবার পিলখানার বিজিবি সদরদপ্তরে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এই তথ্য জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
রবিবার রাতে কমিশন গঠনের প্রস্তাবে প্রধান উপদেষ্টা সই করে দিয়েছেন। কমিশনের সদস্য সংখ্যা সাতজন। এর মধ্যে সেনাবাহিনীর দুই সদস্য, একজন সরকারি কর্মকর্তা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একজন করে সদস্য ও পুলিশ থেকে অপর এক সদস্য অন্তর্ভুক্ত হবেন।
এ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিশ্চিত করেন, ‘ইতোমধ্যে এই কমিশনের আনুষ্ঠানিক অনুমোদন দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।’
২০০০ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০০১ সালের জুলাই পর্যন্ত তৎকালীন বিডিআর (বাংলাদেশ রাইফেলস)-এর মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছেন আ ল ম ফজলুর রহমান।
এক প্রশ্নের জবাবে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, আপনারা সব সময় চেয়েছেন বিডিআর হত্যাকা-ের ঘটনার  একটা কমিশন হোক। কমিশনে রয়েছেন- বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক আ ল ম ফজলুর রহমান, তিনিই এ কমিশনের সভাপতি। 
গত ১৭ ডিসেম্বর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানিয়েছিলেন, পিলখানা বিডিআর (বর্তমানে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) হত্যাকা-ের ঘটনা তদন্তে আগামী পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানার সদরদপ্তরে বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় সংস্থাটির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদসহ ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। এই ঘটনায় হত্যা মামলায় ২০১৩ সালে বিশেষ আদালতে ১৫২ জনের ফাঁসি, ১৬০ জনের যাবজ্জীবন কারাদ- ও ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করেন এবং খালাস পায় ২৭৮ জন।
পিলখানার এই নির্মম ঘটনার পর বিডিআরের সাংগঠনিক কাঠামো ভেঙে সংস্থাটি পুনর্গঠন করে ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)’ নামকরণ করা হয়।
অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন উপদেষ্টা।
কুমিল্লায় একজন মুক্তিযোদ্ধাকে হেনস্তার ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কিছু সংখ্যক দুষ্কৃতকারী সব জায়গায় রয়ে গেছে। যে দুষ্কৃতকারীরা তাকে হেনস্তা করেছে তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
ভারত থেকে শেখ হাসিনাকে ফেরত আনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এরই মধ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছি, এক্সট্রা অডিশন করার জন্য, এটা প্রক্রিয়াধীন।
কোন উপায়ে শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানো হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের সঙ্গে ভারতের বন্দি বিনিময় চুক্তি আছে। ওই চুক্তি অনুযায়ী হবে।
সম্প্রতি ৬০ হাজার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, দুই মাসে নয়, বরং গত দেড়-দুই বছরে দেশে ৬০ হাজার রোহিঙ্গা প্রবেশ করেছে। আমরা রোহিঙ্গাদের আর কোনো অবস্থাতেই প্রবেশ করতে দেব না।
তিনি আরও বলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে যে বর্ডার (সীমান্ত) আছে সেটি পুরোটাই আরাকান আর্মির দখলে চলে গেছে। তাদের (আরাকান আর্মি) সঙ্গে এখন অফিসিয়াল কথা বলার সুযোগ নেই। আমরা চেষ্টা করছি, যতদ্রুত সম্ভব এ সমস্যা (রোহিঙ্গা) সমাধানের।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন করা হলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমি ডিটেইলস (বিস্তারিত) বলতে পারব না, আপনারা (সাংবাদিক) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জিজ্ঞেস করতে পারেন তারা ভালো বলতে পারবেন। আমাদের প্রধান উপদেষ্টা এ বিষয়ে একজন বিশেষজ্ঞ নিয়োগ দিয়েছেন। আমরা কাজ করছি। আমরা ভবিষ্যতে একটা ভালো ফল পাব।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, সীমান্তে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঘটছে দুর্নীতির মাধ্যমে। বিজিবি এ ঘটনায় রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ নিয়ে জড়িত কি-না। জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনারা ওইখানে গেলে জানতে পারবেন পরিস্থিতি কি। ওইখানে যুদ্ধ হচ্ছে। ওইখানের পরিস্থিতিও আপনারা জানেন। রোহিঙ্গারা দুর্নীতির মাধ্যমে প্রবেশ করে।

×