ছবি: সংগৃহীত
শিশুদের প্রতি বৈষম্য নিরসনে গণমাধ্যমকে আরো দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন বিশিষ্টজনেরা। ‘শিশু সুরক্ষায় সাংবাদিকতা’ শীর্ষক ফেলোশিপ-২০২৪ প্রদান অনুষ্ঠানে তারা বলেছেন, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের পর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে শিশুদের ব্যবহার ও তাদেরকে আইনের মুখোমুখী হতে হয়, এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি বন্ধ করতে হবে। শিশুদের সুরক্ষায় সকল বাধা অপসারণে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
সোমবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সেভ দ্য চিলড্রেনের সহায়তায় ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ব্রেকিং দ্য সাইলেন্সের সভাপতি তাসমিমা হোসেন। অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. গীতি আরা নাসরীন, সেভ দ্য চিলড্রেনের পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন, লেখক-গবেষক আফসান চৌধুরী, ব্রেকিং দ্য সাইলেন্সের নির্বাহী পরিচালক রোকসানা সুলতানা, সাংবাদিক নিখিল ভদ্র, ব্রেকিং দ্য সাইলেন্সের কর্মসূচি ও পরিকল্পনা বিষয়ক পরিচালক মো. জাহিদুল ইসলাম প্রমূখ।
অনুষ্ঠানে ‘শিশু সুরক্ষায় সাংবাদিকতা’ বিষয়ক ফেলোশিপ বিজয়ী দৈনিক ইত্তেফাকের স্টাফ রিপোর্টার রাবেয়া বেবী ও দৈনিক আজকের পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার অর্চি হকের হাতে ক্রেস্ট, সনদপত্র ও অর্থমূল্যের চেক তুলে দেওয়া হয়। এছাড়া ১০জন সাংবাদিককে বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে ড. গীতি আরা নাসরীন বলেন, গণঅভ্যুত্থানের পর সরকার গণমাধ্যমকে কাজ শুরু করেছে। সেখানে নিশ্চয়ই নারী ও শিশুদের বিষয়গুলো গুরুত্ব পাবে। গণমাধ্যমে নারীকে অন্তর্ভূক্ত করতে চাইলে, শিশু দিবা যত্ন কেন্দ্র তৈরি করতে হবে। গণমাধ্যমে শ্রম আইন অনুসরণ করলে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে শিশু দিবা-যত্ন কেন্দ্র স্থাপনে বাধ্য। তিনি শিশু সুরক্ষার বিষয়টি অগ্রাধিকার তালিকায় রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, গণমাধ্যমের অনেক প্রতিবেদনে লেখা হয়, শিশুশ্রমিক। শিশুশ্রম নিরসন ২০১০ উল্লেখ করা হয়েছে, শিশুকে শিশু শ্রমিক বলা যাবে না। শিশু অপরাধী এই শব্দগুলো ব্যবহৃত হচ্ছে। শিশু বিষয়ক সংবেদনশীল শব্দ ও ছবি ব্যবহার করা হচ্ছে। সংবাদগুলোর বিষয়ের গভীরে যেতে হবে। গণমাধ্যমের সুবিধা তারা তাদের সংবাদের প্রয়োজনে সব জায়গায় পৌঁছুতে পারছে। তাদেরকে তথ্য উপাত্ত দিয়ে সহায়তা করার জন্য উন্নয়ন কর্মীদের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
তাসমিমা হোসেন বলেন, বাংলাদেশের শিশুদের অধিকার রক্ষা ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। শিশুদের যৌন নির্যাতন, শোষণ, বাল্যবিবাহ এবং নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে কাজ করছি। তবে দীর্ঘ দিনের পুরুষতান্ত্রিকতা ভেঙ্গে কাজ করতে আমারও কষ্ট হয়েছে। সংবাদমাধ্যমে কতরকমের বুদ্ধির খেলা হতে পারে তা দেখেছি। তবে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। শিশুদের সুরক্ষায় এই সম্ভাবনা কাজে লাগাতে হবে।
রোকসানা সুলতানা বলেন, শিশুদেরকে সুরক্ষিত করা বা এ বিষয়ে জনসচেতনতা তৈরি একার পক্ষে সম্ভব নয়, বরং বিভিন্ন অংশীজনের সক্রিয় সমর্থন প্রয়োজন। এক্ষেত্রে সাংবাদিক ফোরামের সহায়তায় শিশু অধিকার এবং সুরক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে জাতীয় পর্যায়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও এডভোকেসি কার্যক্রম জোরদার করতে হবে।
মো. মহিউদ্দিন