ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ বর্তমানে এক অভূতপূর্ব রাজনৈতিক রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, যা দেশের ভবিষ্যৎ উন্নয়ন পরিকল্পনাকে অনিশ্চয়তার মুখে ফেলেছে। শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনকাল দেশটিতে ভারত বাংলাদেশের বৃহত্তম উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে আবির্ভূত হয়, ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের উন্নয়ন পোর্টফোলিও নিয়ে। তবে, শেখ হাসিনা গত ৫ আগস্ট হঠাৎ দেশত্যাগ করলে উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর ভবিষ্যৎ প্রশ্নের মুখে পড়ে।
ভারত-বাংলাদেশ সংযোগের চিত্র
ভৌগোলিক সান্নিধ্যের কারণে, সংযোগ সহযোগিতা ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক অংশীদারত্বের কেন্দ্রীয় দিক। দুই দেশের মধ্যে থাকা ৪,০৯৬ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত এবং বাংলাদেশের চারপাশে ভারতের ভূখণ্ডের অবস্থান সংযোগ উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা তৈরি করে।
ভারত বাংলাদেশের বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার। বাণিজ্যের আওতায় জ্বালানি, খাদ্যশস্য, বস্ত্র এবং প্লাস্টিক থেকে শুরু করে বিভিন্ন পণ্য বিনিময় হয়। এ কারণে রেল, সড়ক, জলপথ এবং সমুদ্রপথে সংযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটেছে।
ভারত-বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পসমূহ হলো: সাসেক ১০০০ মেগাওয়াট প্রকল্প, রাধিকাপুর-বিরোল রেল সংযোগ পুনরুদ্ধার প্রকল্প, খুলনা-মংলা বন্দর রেলপথ, আইএসআরও-বাংলাদেশ স্যাটেলাইট প্রকল্প, রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প।
এছাড়াও বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল (BBIN) মোটর ভেহিকেল চুক্তি কার্যকর করা সংযোগ বৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এ উদ্যোগে রেল সংযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন বাংলাদেশের বাণিজ্যকে ত্বরান্বিত করবে।
মৈত্রী তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ভারত-বাংলাদেশ জ্বালানি সহযোগিতার মাইলফলক। এছাড়া, নেপাল, বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে বিদ্যুৎ বাণিজ্য চুক্তি দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম উদ্যোগ হতে পারে।
ডিজিটাল সংযোগ: স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্য
ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে ডিজিটাল অংশীদারিত্ব ২০৪১ সালের ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ পরিকল্পনার সাথে মিল রেখে ডিজিটাল অবকাঠামো উন্নয়নে সহায়তা করছে।
ভারত ও বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সংযোগ প্রকল্পগুলো উভয় দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তবে, বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এই উদ্যোগগুলোকে ঝুঁকিতে ফেলেছে। বিদ্যমান প্রকল্পগুলো রক্ষা করা এবং নবীন ক্ষেত্রে সহযোগিতা শুরু করাই হবে উভয় দেশের জন্য টেকসই উন্নয়নের মূল চাবিকাঠি।
নাহিদা