ছবি: ইন্টারনেট
বর্তমানে বাংলাদেশে তুষারপাত সম্ভব নয়, তবে সুদূর ভবিষ্যতে এটি ঘটতে পারে। তবে ‘সুদূর’ বলতে সত্যিই অনেক দূরের কথা বোঝানো হয়েছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক, এখন কেন বাংলাদেশে তুষারপাত হয় না।
রাশিয়ার সাইবেরিয়া থেকে আসা ঠাণ্ডা বাতাস দক্ষিণ দিকে অগ্রসর হয়ে হিমালয়ে আটকে যায়। ফলে বাতাস বাংলাদেশে আসলেও তা শূন্যের নিচে নামতে পারে না। ক্রান্তীয় আবহাওয়ার কারণে শীতকালে দেশের বাতাসও শুষ্ক থাকে, যা তুষারপাতের জন্য অনুকূল নয়।
তবে ভবিষ্যতে তুষারপাতের সম্ভাবনা নিয়ে বিভিন্ন মত রয়েছে। কয়েক বছর আগে ২০৩০ সালে ‘ছোট তুষারযুগ’ আসতে পারে বলে শোনা গিয়েছিল। এটি সৌরচক্রের পরিবর্তনের কারণে হতে পারে। সূর্যের কার্যকলাপ ১১ বছরের চক্রে পরিচালিত হয়। এই চক্রের সর্বনিম্ন পর্যায়কে বলা হয় সোলার মিনিমাম। ২০৩০ সালে সূর্যের ২৫তম চক্র শেষ হয়ে ২৬তম চক্র শুরু হলে সৌরকলঙ্কের সংখ্যা কমে গিয়ে ‘গ্র্যান্ড সোলার মিনিমাম’ হতে পারে। এটি পৃথিবীর তাপমাত্রা কমিয়ে আনতে পারে।
তবে গবেষকদের একাংশ মনে করেন, সোলার মিনিমাম হলেও এর প্রভাব আশঙ্কাজনক হবে না। অতীতে মন্ডার মিনিমাম (১৬৪৫-১৭১৫) সময়কালে তুষারযুগ এসেছিল, তবে এতে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতেরও ভূমিকা ছিল। আগ্নেয়গিরি থেকে নির্গত সালফার সূর্যের তাপ আটকে পৃথিবীর তাপমাত্রা হ্রাস করেছিল। ফলে ২০৩০-২০৫০ সালের সোলার মিনিমাম যে বাংলাদেশে তুষারপাত ঘটাবে, এমন সম্ভাবনা প্রায় শূন্য।
বাংলাদেশে তুষারপাত নিশ্চিতভাবে ঘটতে পারে গ্লেশিয়াল ম্যাক্সিমাম সময়ে। পৃথিবী বর্তমানে তুষারযুগে (কোয়ার্টারনারি গ্ল্যাসিয়েশন) আছে, তবে এখন চলছে গ্লেশিয়াল মিনিমাম। প্রায় ৫০,০০০ বছর পর গ্লেশিয়াল ম্যাক্সিমাম পর্যায়ে গেলে পৃথিবীর তাপমাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যেতে পারে। সে সময় মেরু বরফ ইউরোপ, কানাডা-যুক্তরাষ্ট্র, এবং দক্ষিণ গোলার্ধের অনেক অঞ্চলে প্রসারিত হবে। বাংলাদেশে গড় তাপমাত্রা কমে গিয়ে তখন তুষারপাত হওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হতে পারে।
তথ্যসূত্র: সায়েন্স বী
নাহিদা