শেখ হাসিনা ও জুনাইদ আহমেদ পলক। ফাইল ফটো
আমি ইচ্ছে করলে পরিবারের সঙ্গে বিদেশ চলে যেতে পারতাম, কিন্তু শেখ হাসিনাকে রেখে যাবো না বলেই দেশে রয়ে গেছি। সেই পলকই এখন শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি চান বলে একের পর এক সাক্ষী দিয়ে যাচ্ছেন আদালতে।
আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে পলক ও আনিসুলরা যে স্বীকার উক্তি দিয়েই যাচ্ছেন শেখ হাসিনার সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে যথেষ্ট বলে ভাবছেন আইনের লোকজন। পলক তার শেখ হাসিনা ছেড়ে যাননি সেই পলকই এখন সব দায় চাপাচ্ছেন হাসিনার ওপর। আদালতে দাঁড়িয়ে ইন্টারনেটের গোমর ফাঁস করল সাবেক সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
সম্প্রতি গণমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
গণঅভ্যুথানে যখন শেখ হাসিনা সরকার যখন বেকায়দায় পড়ে যায় এক নির্বাহী আদেশে রাজনৈতিক স্বার্থ ও জনশৃঙ্খলার অজুহাতে বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারন্টে সেবা।
ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে গণঅন্দোলন চলাকালে গত ১৭ জুলাই রাত থেকে মোবাইল ইন্টারনেট ও ১৮ জুলাই রাত ৯টার দিকে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যায়। টানা পাঁচ দিন সব ধরনের ইন্টারনেট বন্ধ ছিল। মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ ছিল ১০ দিন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও ইন্টারনেটভিত্তিক যোগাযোগমাধ্যম হোয়াটসঅ্যাপের মতো সেবা বন্ধ ছিল ১৩ দিন। হঠাৎ করেই ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়ে দেশবাসী।
জুলাইয়ে কোটা আন্দোলন চলাকালে ইন্টারনেট বন্ধ করাসহ বিভিন্ন বিষয়ে সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত ১২ ডিসেম্বর অনুমতি দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনালের নির্দেশেই তাকে তদন্ত সংস্থায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
১৯ ডিসেম্বর ট্রাইব্যুনালে চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে ট্রাইব্যুনালকে এ স্বীকারোক্তি দিয়েছেন জুনাইদ আহমেদ পলক। আন্দোলনের সময় গণহত্যার তথ্য বিশ্বের কাছ থেকে আড়াল করতে ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়।
গণঅভুত্থানের ইন্টারনেট বন্ধের বিষয়ে জুনাইদ আহ্মেদ পলক বলেছিলেন, ডেটা সেন্টারে আগুন, সাবমেরিন কেবলের তার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যায়। তার এসব তথ্যও অসত্য ছিলো বলে জানান প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম।
এর আগে গত ১৩ আগস্ট ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময়ে পুরো দেশ ইন্টারনেটবিহীন করে রেখেছিল বিগত সরকার। ওই সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক ইন্টারনেট বন্ধ নিয়ে ডেটা সেন্টার পুড়ে যাওয়াসহ নানা গল্প ফেঁদেছিলেন। আদতে তেমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। তিনি নিজে, বিটিআরসি ও এনটিএমসি ইন্টারনেট বন্ধে জড়িত।
শেখ হাসিনার ওপর সবচেয়ে বেশি অভিযোগ চাপাচ্ছেন পলক ও সাবেক আউজিপি মামুন। আইনজ্ঞরা বলছেন, হাসিনার বিরুদ্ধে ঘরের লোকেরা যে সাক্ষী দিচ্ছেন তাতেই সর্বোচ্চ শাস্তির পথ খোলে যাচ্ছে।
এসআর