ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

যে বাংলাদেশি পাইলটের ভয়ে কাঁপত ভারত ও ইসরায়েল

প্রকাশিত: ১৫:১৬, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

যে বাংলাদেশি পাইলটের ভয়ে কাঁপত ভারত ও ইসরায়েল

বাংলাদেশি আকাশযোদ্ধা ও রাজনীতিবিদ সাইফুল আজম।ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের হয়ে লড়াই করে ইসরায়েলের সবচেয়ে বেশি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার রেকর্ডধারী বাংলাদেশি পাইলট সাইফুল আজম। গত ৪৮ বছর ধরে ইসরায়েলের সবচেয়ে বেশি বিমান ধ্বংসের রেকর্ডটি তাঁর দখলে রয়েছে। জীবদ্দশায় সাইফুল আজমকে বিশ্বজুড়ে বৈমানিকরা ‘লিভিং ঈগল’ নামে চিনত।

সাইফুল আজম চারটি ভিন্ন দেশের বিমান বাহিনীতে কাজ করেছেন এবং তিনটি ভিন্ন দেশের হয়ে শত্রুপক্ষের বিমান ধ্বংস করেছেন। এই অবিস্মরণীয় অর্জনের জন্য ১৯৬১ সালের এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রে প্রশিক্ষণ শেষে মার্কিন বিমান বাহিনী তাকে “টপ গান” উপাধিতে ভূষিত করে। পরবর্তীতে, ২০০১ সালে মার্কিন বিমান বাহিনী তাকে “লিভিং ঈগল” উপাধি প্রদান করে। বর্তমানে সারা বিশ্বে এই সম্মানে ভূষিত পাইলটের সংখ্যা মাত্র ২২ জন।

১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে তিনি ইরাকের পক্ষে লড়েছিলেন। মাত্র ছয়দিনের এই যুদ্ধে তাঁর অসাধারণ বীরত্ব আর কৌশল ফিলিস্তিনিদের মনে স্থায়ী জায়গা করে দেয়। যুদ্ধের মাত্র পাঁচদিনের মধ্যে ইসরায়েল গাজা এবং সিনাই দখল করে নিলেও, সাইফুল আজম জর্ডানের মাফরাক ঘাঁটি থেকে হকার হান্টার বিমান নিয়ে ইসরায়েলি সুপারসনিক বিমানের বিরুদ্ধে লড়াই করেন। তাঁর নিখুঁত আক্রমণে দুটি সুপারসনিক বিমান ধ্বংস হয়। এর মধ্যে একটি ইসরায়েলি সুপার মিস্টেরে এবং অন্যটি ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে ইসরায়েলি সীমান্তে গিয়ে আছড়ে পড়ে।

সাইফুল আজম ১১ সেপ্টেম্বর ১৯৪১ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের পূর্ব বাংলার পাবনা জেলার খলিশাদহ-খাগড়বাড়িয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৮ সালে তিনি পাকিস্তান এয়ার ফোর্স ক্যাডেট কলেজে ভর্তি হন এবং ১৯৬০ সালে পাইলট অফিসার হিসেবে যোগ দেন। ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধেও তিনি তাঁর সাহসিকতার জন্য প্রশংসিত হন। ইন্দো-পাক যুদ্ধে তিনি অসংখ্য ভারতের যুদ্ধবিমানও ধ্বংস করেছিলেন। পরবর্তীতে ১৯৭১ সালে তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে যোগ দেন।

সাইফুল আজম ২০২০ সালের ১৪ই জুন মৃত্যুবরণ করেন।

নাহিদা

×