ছবি:ম্যাজিস্টে্রট সারোয়ার আলম
আলোচিত ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম প্রবাসীদের দুঃখ কষ্ট শেয়ার করতে গিয়ে বলেন,
আমি ওমানে গিয়েছিলাম যেখানে শ্রমিকরা কাজ করে, তাদের সমস্যাটা কোথায় জানতে চেয়েছিলাম। আমাদের প্রবাসী ভাইদের মধ্যে মাত্র ১০% পরিবার নিয়ে থাকে। বাকিরা সিঙ্গেল থাকে। একজন প্রবাসী দশ বছর বিদেশে থাকে। এ দশ বছরে সে তার স্ত্রীর ভালোবাসা, মায়ের ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হয়। মায়ের হাতের রান্না খাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়। সন্তান তাকে পিতা বলে ডাকবে, বাবা বলে ডাকবে এটা থেকে বঞ্চিত হয়।
সারোয়ার আলম আরও বলেন,এই যে আমরা ঢাকা শহরে এত উন্নয়ন বলি বা এত গাড়ি চলে এসব কিছুর পেমেন্ট আমাদেরকে ডলারে করতে হয়। আমাদের এই প্রবাসী ভাইয়েরা যদি এ ডলার অর্জন না করে তাহলে আমরা কোন কিছুই ক্রয় করতে পারবো না। কারণ আন্তর্জাতিক সব লেনদেন ডলারে হয়। আমরা যা কিছু ক্রয় করি তা টাকা ছাপিয়ে ক্রয় করতে পারব না। আমাদের ডলার দরকার। প্রবাসী ভাইদের যে ত্যাগ আমি মাঝেমধ্যে বলি একজন মেয়ে যে প্রবাসীকে বিয়ে করেছে তার জীবনটাই ব্যর্থ। এই মেয়েটার জীবন অর্ধেক ব্যর্থ কারণ সে ১০ বছর ১৫ বছর স্বামী ছাড়া। সে কয়দিন স্বামীকে পায়? ১০ বছর বিয়ে হয়েছে, সে বছরে তিন মাস পায় আর ৯ মাস স্বামী ছাড়া।
এক প্রবাসীর গল্প শেয়ার করতে গিয়ে সারোয়ার আলম বলেন,
অনেক কঠিন ঘটনা আপনাদেরকে বলি। একজন বাংলাদেশী ইন্ডিয়ান পাসপোর্ট নিয়ে বিদেশে গিয়েছে এবং দুই বছর পরে সে ওখানে মারা গিয়েছে। যেহেতু সে ইন্ডিয়ান পাসপোর্ট নিয়ে গিয়েছে, সেহেতু তার লাশ আমরা আনতে পারছি না। তার স্ত্রী আমাকে এসে কান্নাকাটি করে বলল আমার বিয়ে হওয়ার পর তিন মাস আমার স্বামী সাথে ছিলাম। তিন মাসে আমি তাকে ভালো করে দেখতেও পারিনি। আমি তার লাশটা চুয়ে দেখতে চাই। পরবর্তীতে আমরা লাশ দেশে আনার ব্যবস্থা করি অনেক কষ্টে।
তিনি আরও বলেন, এই যে আমরা বলি সন্তানকে সে মিস করেছে, দেশের আবহাওয়া মিস করছে, তার পরিবারকে মিস করছে ,এটার মূল্য অপরিসীম। আমাদের ভাষায় আমরা বলি সোশ্যাল কস্ট । যারা প্রবাসে থাকেন সত্যিকারে আমি তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। এই দেশের অর্থনীতির মেইন পিলার হচ্ছে প্রবাসীরা।
সাইদ